X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

যে কারণে গির্জাকে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিলেন ট্রাম্প

বিদেশ ডেস্ক
০৫ মে ২০১৭, ২৩:২৯আপডেট : ০৫ মে ২০১৭, ২৩:৩৮

যে কারণে গির্জাকে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিলেন ট্রাম্প গির্জার যাজকদের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালনের সুযোগ দিয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ এরইমধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ৪ মে ২০১৭ বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডে অব প্রেয়ারে ট্রাম্প এ নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এর মধ্য দিয়ে গির্জাসহ খ্রিস্টানদের অন্যান্য ধর্মীয় সংগঠনগুলো রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পাবে। প্রশ্ন উঠেছে, ঠিক কি কারণে ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্ত? বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প এই সংশোধনী চেয়েছিলেন কারণ তিনি দক্ষিণপন্থী খ্রিস্টানদের দ্বারা প্রভাবিত।

মার্কিন প্রশাসনের দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স-ও ব্যক্তিগতভাবে খ্রিস্টবাদের প্রতি আসক্ত। ট্রাম্পের ওপর তার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।

ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশের ফলে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় গির্জাগুলো করমুক্ত সুবিধা পাবে। ১৯৫০-এর দশকের জনসন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের আওতায় ধর্মীয় নেতাদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়। এর ফলে করমুক্ত সুবিধা বাদ দেওয়া ছাড়া ধর্মীয় নেতারা রাজনৈতিক প্রার্থীকে সমর্থন বা বিরোধিতা করতে পারতেন না। ট্রাম্পের নতুন আদেশ অনুযায়ী জনসন অ্যামেন্ডমেন্ট প্রয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বিবেচনা অবলম্বন করতে হবে।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের মতে, এ আদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ‘প্রার্থনার গুরুত্ব’কে আরও জোরালো করবে। তিনি বলেন, স্রষ্টা ও মার্কিন জনগণের ওপর ট্রাম্পের দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করা এক ধরনের অর্থনৈতিক শাস্তি। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে আমন্ত্রিত ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ট্রাম্প। এ সময় তিনি বলেন, ‘এখন আপনারা বলার মতো অবস্থানে রয়েছেন। আমি জানি আপনি ভালো কিছুই বলবেন। স্বাধীনতা সরকারের উপহার নয়, এটা ইশ্বরের উপহার।’

যে কারণে গির্জাকে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিলেন ট্রাম্প

প্রমোটিং ফ্রি স্পিচ অ্যান্ড রিলিজিয়াস লিবার্টি (মুক্তমত ও ধর্মীয় স্বাধীনতার উন্নয়ন) নামের আদেশে স্বাক্ষর করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের দেশের ইতিহাসে বিশ্বাসের জায়গাটি গভীরভাবে গাঁথা আছে। তবে আমরা কখনও ধর্মীয় বৈষম্যকে সমর্থন করবো না।’ তবে নির্বাচনি প্রচারণা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ট্রাম্প মুসলিমবিরোধী যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন এতে করে তার প্রশাসনের ধর্মীয় বৈষম্য সমর্থন না করার বক্তব্য সাংঘর্ষিক। 

সিরিয়া-ইরাকসহ মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর অভিবাসীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য আগে থেকেই সমালোচিত ট্রাম্প। ২০১৫ সালের নভেম্বরে প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলায় ১৩০ জন নিহত হওয়ার পর তিনি মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করেছিলেন। ওই ঘটনায় বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়েন এ মার্কিন ধনকুবের।

নিজ দেশ এমনকি নিজের দল রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের পক্ষ থেকেও তখন ট্রাম্পের ওই বক্তব্যের নিন্দা জানানো হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর বেশকটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ওপর দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে আবারও তিনি ভিন্ন ধর্মের মানুষদের প্রতি নিজের তীব্র ঘৃণাবোধের জানান দেন।

কেউ কেউ মনে করছেন, নতুন এই নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রচারণায় সহায়তাকারীদের ট্যাক্স কম দিতে হতে পারে। কারণ অলাভজনক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে অনেক আর্থিক শিথিলতা রয়েছে।

সম্প্রতি সৌদি আরব, ইসরায়েল ও ভ্যাটিকান সিটি সফরের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘মানুষ কিভাবে জীবনযাপন করবে এটা নির্ধারণ করা আমাদের কাজ নয়। মুসলিম বন্ধুদের নিয়ে আমরা একসঙ্গে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করবো।’

যাজকদের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালনের সুযোগ দিয়ে আরোপ করা এই নির্বাহী আদেশে অবশ্য সমকামীদের নিয়ে কিছু বলা হয়নি। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন ও সেন্টার ফর রিপ্রডাক্টিভ রাইটস (সিপিআর) জানিয়েছে, তারা এই নির্বাহী আদেশকে চ্যালেঞ্জ করবে। এই আদেশে হবি লবি নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে ২০১৪ সালের একটি মামলার কথা বলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছিল, তাদের নারী কর্মীদের জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহের প্রয়োজন নেই। কেননা তারা ধর্মীয় কারণে এর বিরোধী।

প্রথমবারের মতো আদালত তখন একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ধর্মীয় দাবিকে স্বীকৃতি দেয়। এক বিবৃতিতে সিপিআর জানিয়েছে, তারা এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করবেন। ওবামা কেয়ারের বাইরেও অনেক ব্যক্তি-মালিকানা প্রতিষ্ঠান নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য অনেক বিষয় নিশ্চিত করে। এতে পুরুষদের স্বাস্থ্যসেবাও বিঘ্ন হয় না।

/এফইউ/এমএইচ/এমপি/

সম্পর্কিত
ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে: ম্যাক্রোঁ
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিমার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য রয়েছে
মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে জাতিসংঘের ভোটে রাশিয়ার ভেটো
সর্বশেষ খবর
ওরসে ঝগড়া, সেই শত্রুতায় ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা
ওরসে ঝগড়া, সেই শত্রুতায় ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা
ন্যাপ বাস্তবায়নে উন্নত দেশগুলোর প্রতি পর্যাপ্ত সহায়তার আহ্বান
ন্যাপ বাস্তবায়নে উন্নত দেশগুলোর প্রতি পর্যাপ্ত সহায়তার আহ্বান
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
মীনা বাজার এখন মিরপুর-১২ নম্বরে
মীনা বাজার এখন মিরপুর-১২ নম্বরে
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা