সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে সোনালী রংয়ের চুলে ফুল লাগানো এক ব্রিটিশ বালিকার ছবি। আর তার সঙ্গে লেখা পোস্টে বলা হয়েছে, ‘দয়া করে সবাই ছবিটি শেয়ার করুন, এটা আমার ছোট বোন এমার ছবি। রাতে ম্যানচেস্টারের কনসার্টে সে ছিল এবং এখন ফোন ধরছে না। দয়া করে আমাকে সহায়তা করুন।’
যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারের পপ কনসার্টে হামলার পর নিখোঁজদের এভাবে মরিয়া হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন বন্ধু-স্বজনরা। কেউ খুঁজছেন বোনকে, কেউবা জীবনসঙ্গীকে, কেউবা আবার সন্তানকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ছবি পোস্ট করে জানানো হচ্ছে মানবিক সহায়তার আর্তি।
EVERYONE PLS SHARE THIS MY LITTLE SISTER EMMA SHE WAS AT THE ARI CONCERT TONIGHT IN #Manchester AND SHE ISNT ANSWERING HER PHONE PLS HELP ME pic.twitter.com/P3qDrXti8e
— Abi Newman (@AbiNewmanx) May 23, 2017
সোমবার রাতে ম্যানচেস্টার অ্যারেনাতে পপ কনসার্ট চলার সময় ওই হামলা হয়। ম্যানচেস্টার পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ওই হামলায় ২২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। বিস্ফোরণের শব্দে দিগ্বিদিক ছুটতে গিয়ে অনেকে নিখোঁজ হয়ে পড়ে। আর তাদের ফিরে পেতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আশ্রয় নিয়েছেন স্বজনরা।
হামলার পর এরিন নামে এক টুইটার ব্যবহারকারীও জানিয়েছেন বোনকে ফিরে পাওয়ার জন্য সহায়তার আবেদন। হামলার সময় বোনের পোশাকের বর্ণনা দিয়ে তিনি লিখেছেন: ‘ও একটি গোলাপি রংয়ের শার্ট ও নীল রংয়ের জিন্স পরা ছিল। ওর নাম হুইটনি।’
please help me find my sister who was at the manchester thing tonight. she's wearing a pink sweatshirt and blue jeans. her name is whitney pic.twitter.com/y7Rz1i3RRJ
— erin (@woahms) May 23, 2017
ম্যানচেস্টারের পপ কনসার্টে সংগীত পরিবেশন করছিলেন মার্কিন সংগীতশিল্পী আরিয়ানা গ্রান্ডে। তার ভক্তদের বেশিরভাগই কিশোরবয়সী। আর তাই হামলার পর নিখোঁজদের মধ্যে কিশোরদের সংখ্যাটাই বেশি।
পলা রবিনসন নামে ৪৮ বছর বয়সী এক নারী ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, হামলার সময় তিনি স্বামীর সঙ্গে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি একটি রেলস্টেশনে ছিলেন। পলা জানান, প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়ার পর তিনি বেশ ক’জন কিশোরীকে চিৎকার করতে করতে সেখান থেকে দৌড়ে পালাতে দেখেছেন এবং নিজেও দৌড় দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা দৌড়ে পালিয়েছি। আক্ষরিক অর্থে বিস্ফোরণের কয়েক সেকেন্ডের মাথায় এমনটা হয়েছে। দৌড়ের মধ্যে থাকা কিশোরদেরকে আমার সঙ্গে নিয়ে গেছি।’
পলা রবিনসন আরও জানান, তিনি বেশ ক’জন কিশোরীকে পার্শ্ববর্তী হলিডে ইন এক্সপ্রেস হোটেলে নিয়ে গেছেন। পরে টুইটারে তার ফোন নাম্বার দিয়েছেন যেন ওই কিশোরীদের বাবা-মা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। পলা জানান, ওই টুইটের পর থেকে তার ফোনে অনবরত রিং বেজে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে পলা বলেন, ‘শিশুদের ফিরে পাওয়ার জন্য বাবা-মা আত্মহারা হয়ে পড়েছেন। হলিডে ইন-এ অনেক কিশোরই ছিল।’
সন্তানদের মরিয়া হয়ে খুঁজছেন এমন বাবা-মায়েদের একজন শার্লট ক্যাম্পবেল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি তার মেয়ে অলিভিয়ার ছবি পোস্ট করেছেন। ওই ছবিতে দেখা গেছে অলিভিয়ার মাথায়ও ফুল।
ক্যাম্পবেল লিখেছেন, ‘কেউ কি আমার মেয়ে অলিভিয়া ক্যাম্পবেলকে দেখেছেন?# ম্যানচেস্টার’।
/এফইউ/বিএ/