X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

শান্তি প্রতিষ্ঠার দায় ফিলিস্তিনের ঘাড়েই চাপালেন ট্রাম্প!

বিদেশ ডেস্ক
২৩ মে ২০১৭, ২২:৩৪আপডেট : ২৩ মে ২০১৭, ২৩:৩৪

ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মাহমুদ আব্বাস ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ক্রমবর্ধমান ইসরায়েলি দখলদারিত্বের মধ্যেই এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দায় ফিলিস্তিনের ঘাড়েই চাপালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাতে নিজের এমন অবস্থান পরিষ্কার করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অথচ যে বেথেলহাম নগরীতে ট্রাম্প-আব্বাসের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, সেখানেই ট্রাম্পের সফরের আগ মুহূর্তে গুলি করে ১৫ বছরের এক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী।

ওই হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টা পর ট্রাম্প-আব্বাস বৈঠকে ‘সন্ত্রাসীদের’ প্রতি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নীতির সমালোচনা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের পুরস্কৃত করার অভিযোগ তোলেন। ট্রাম্প বলেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর জন্য সন্ত্রাসী ও তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। সহিংসতা সহ্য করা হয়, সহিংসতাকারীদের তহবিল দেওয়া হয়, তাদের পুরস্কৃত করা হয়- এমন পরিবেশে কখনও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। তবে আমি সত্যিই আশাবাদী যে এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমেরিকা সহায়তা করতে পারে। ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে মাহমুদ আব্বাস প্রস্তুত রয়েছেন।

মঙ্গলবার ট্রাম্পের বেথেলহামে প্রবেশের আগে সেখানে নিহত ১৫ বছরের ওই ফিলিস্তিনি কিশোরের নাম রায়েদ আহমাদ রাঈদ। এ হত্যাকাণ্ডেও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বরাবরের মতোই কথিত ‘চুরিকাঘাত চেষ্টার’ অভিযোগ করা হয়েছে। ট্রাম্প-আব্বাস বৈঠকেও ট্রাম্প মূলত ইসরায়েলি বাহিনীর গতানুগতিক বক্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি করলেন। নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালানো ইসরায়েলি বাহিনী নয়; বরং যেন হতাহতের শিকার মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিরাই সন্ত্রাসের সূতিকাগার।

এর আগে জেরুজালেমের ইসরায়েল মিউজিয়ামে ট্রাম্প বলেন, ‘আসুন আমরা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপন এবং আরও আশার সঞ্চার করতে প্রার্থনা করি।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এখানে অনেকে একটা মিথ্য পছন্দের মধ্যে রয়েছেন। তারা বলে থাকেন, আমাদের এই অঞ্চলে হয় ইসরায়েলকে সমর্থন করতে হবে কিংবা আরব ও মুসলিমদের সমর্থন দিতে হবে। এটা পুরোপুরি ভুল। আমরা জানি, ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিরা উভয়েই তাদের সন্তানদের নিয়ে একটা আশাবাদের জায়গা খুঁজছেন। দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের ব্যাপারে আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উভয় পক্ষই একটা শান্তিপূর্ণ অবস্থা দেখতে চায়। আমরা সবাই জানি এটা সহজ নয় তবে এটা সম্ভব। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দুজনই শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাদের সদিচ্ছার কথা আমাকে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে তারা অঙ্গীকারাবদ্ধ। দীর্ঘমেয়াদীয় শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমি তাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই।

মধ্যপ্রাচ্যে আন্তর্জাতিক শান্তি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বহুদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। বিগত ওবামা প্রশাসন এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। তবে ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণার কাল থেকেই ফিলিস্তিনবিরোধী অবস্থান প্রকাশ করে আসছেন। এই প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন শান্তি প্রচেষ্টার জন্য ট্রাম্পের সফরকে তাই গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছিল। মঙ্গলবার ট্রাম্পের বেথেলহাম সফরের আগ মুহূর্তে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ফিলিস্তিনি কিশোরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পরও মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়ার জন্য ফিলিস্তিনকে দায়ী করেন ট্রাম্প।

মুসলিম বিশ্বের একটি বড় অংশ ট্রাম্পকে শুরু থেকেই ইসরায়েল-ঘেঁষা বলে মনে করছে। তিনি অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের বিষয়ে কী অবস্থান নেন, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ট্রাম্প দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের মার্কিন অঙ্গীকার ধরে রাখবেন কি না, তা নিয়েও অনেকের উদ্বেগ আছে। তবে শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষকে সরাসরি শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিলেও সে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ্য সমর্থন যে ইসরায়েলের প্রতিই থাকবে মঙ্গলবারের ট্রাম্প-আব্বাস বৈঠকের পর সেটা এখন মোটামুটি পরিষ্কার। সূত্র: দ্য হিল, আল জাজিরা।

/এমপি/

সম্পর্কিত
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে নিজেকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, গ্রেফতার ১
স্থায়ী সংঘাতে পরিণত হচ্ছে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা: তুরস্ক
সর্বশেষ খবর
দ্বিতীয় বিয়ের চার দিন পর বৃদ্ধকে হত্যা, দুই ছেলে পলাতক
দ্বিতীয় বিয়ের চার দিন পর বৃদ্ধকে হত্যা, দুই ছেলে পলাতক
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেলো ইউপি সদস্যের
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেলো ইউপি সদস্যের
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আট বছর পর জাবিতে ডিন নির্বাচন
আট বছর পর জাবিতে ডিন নির্বাচন
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা