ম্যানচেস্টার হামলার নেপথ্যে থাকা নেটওয়ার্কের একটা ‘বড় অংশকে’ গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছে ব্রিটিশ পুলিশ। এমনটাই মনে করছে দেশটির পুলিশ বিভাগ। সোমবার রাতের ওই হামলার ঘটনায় এখনও আট ব্যক্তিকে নিরাপত্তা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ পুলিশের সন্ত্রাসবাদবিরোধী সর্বোচ্চ কর্মকর্তা মার্ক রাউলি। তিনি জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর তদন্তে ‘অসাধারণ অগ্রগতি’ রয়েছে। তবে এখনও তদন্তে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িত রয়েছে।
মার্ক রাউলি বলেন, আরও কেউ হয়তো গ্রেফতার হতে পারেন। তবে পুলিশের বিশ্বাস, তারা এ নেটওয়ার্কের একটা বড় অংশকে ধরাশায়ী করতে সক্ষম হয়েছেন।
মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষজ্ঞ অভিযান বিষয়ক সহকারী কমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্যজুড়ে পুলিশ এক হাজার ৩০০-এর বেশি অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে পূর্বপরিকল্পিত কোনও অনুষ্ঠানের সূচি পরিবর্তন না করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আপনারা নিজেদের সময় উপভোগ করুন।
ম্যানচেস্টার হামলার ঘটনায় নতুন করে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মস এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশ। এ নিয়ে ম্যানচেস্টারের হামলাকে কেন্দ্র করে সর্বমোট ১০ জনকে আটক করা হলো। শুক্রবারও সেন্ট হেলেনস, মারসিসাইডসহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রাখে পুলিশ।
২২ মে সোমবার রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী আরিয়ানা গ্র্যান্ডের কনসার্টে চালানো ওই হামলায় ২২ জন নিহত আর ৬৪ জন আহত হয়। লিবীয় বংশোদ্ভূত ২২ বছরের তরুণ সালমান আবেদিকে হামলাকারী হিসেবে শনাক্ত করে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে নিরাপত্তা সূত্র দাবি করে, এটা এক ব্যক্তির সংঘটিত (লোন উলফ) হামলা। তবে মঙ্গলবার সেই অবস্থান থেকে সরে তারা হামলায় একাধিক মানুষের জড়িত থাকার সন্দেহের কথা জানায়।
সেই থেকেই অন্যান্য সন্দেহভাজনদের খোঁজে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। সর্বশেষ আরও একজনকে আটক করার কথা জানিয়েছে তারা। গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশ জানায়, এ নিয়ে মোট আটককৃতের সংখ্যা ১০ হলেও নিরাপত্তা হেফাজতে রয়েছে ৮ জনকে। বাকি দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সালমানের দুই ভাই ইসমাইল, হাশেম এবং তাদের বাবা রমজান রয়েছেন। ম্যানচেস্টার হামলার পরেরদিনই ইসমাইলকে গ্রেফতার করা হয়। আর এর পরে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-র সঙ্গে জড়িত থাকা ও ত্রিপোলিতে হামলার পরিকল্পনা করার সন্দেহে হাশেম ও তার বাবা রমজান গ্রেফতার হন। গোয়েন্দা সূত্রকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইল জানিয়েছে, সালমানের গোটা পরিবারই জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাতে উইগানের একটি বাড়িতে পুলিশি অভিযানের কারণে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এখন তারা আবার বাড়িতে ফিরেছেন।
ম্যানচেস্টারে সোমবার রাতের হামলার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে আরও বড় ধরনের হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। হুমকির আশঙ্কা ‘তীব্র’ থেকে ‘সংকটপূর্ণ’ অবস্থায় পৌঁছে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে রাস্তায় রাস্তায় পুলিশকে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য ৩৮০০ সেনা মোতায়েন করার কথা জানান ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
/এমপি/