X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

যখন মারছিল, তখন কোথায় ছিল পুলিশ: গো-রক্ষকদের তাণ্ডবে স্বামীহারা মরিয়ম

বিদেশ ডেস্ক
০১ জুলাই ২০১৭, ১৭:০৪আপডেট : ০১ জুলাই ২০১৭, ১৭:০৬


যখন মারছিল, তখন কোথায় ছিল পুলিশ: গো-রক্ষকদের তাণ্ডবে স্বামীহারা মরিয়ম সাদা চাদরে ঢাকা নিথর দেহটার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়েছিলেন পঁয়ত্রিশ বছরের মরিয়ম খাতুন। মাঝেমধ্যেই ডুকরে উঠছেন। মরিয়মদের বাড়ির সামনে মোতায়েন হয়েছে পুলিশ। পুরো গ্রাম কার্যত পুলিশে সয়লাব। কান্না জড়ানো গলায় মরিয়মের আক্ষেপ, ‘এখন পুলিশ এসে কী লাভ? আমার স্বামীকে যখন ওরা মারছিল, তখন কোথায় ছিল পুলিশ?’
এই প্রশ্নটা শুধু রামগড়ের আলিমুদ্দিনের স্ত্রী মরিয়মের একার নয়, ঘুরছে মনুয়া গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যেও। গ্রামের চারদিকে পুলিশি মোতায়েন দেখে মনে হয় গ্রামে কোনও ভিআইপি আসছেন। গ্রামেরই এক বাসিন্দা বাবলু হোসেন প্রশ্ন তোলেন, ‘আলিমকে তো কোনও নির্জন জায়গায় মারা হয়নি। ভরদুপুরে রাস্তার উপরে মারা হয়েছে। কয়েক পা এগোলেই বাজারের মোড়। সেখান থেকে পুলিশ আসতে এত সময় লাগল?’
দুই কামরার বাড়িতে স্ত্রী মরিয়ম ও ছয় ছেলেমেয়েকে নিয়ে ছিল আলিমুদ্দিনের সংসার। সংসারের উপার্জনের মানুষ বলতে তিনিই ছিলেন। বছর দশেকের ছেলে শাহবাজও বুঝতে পারছে এই নৃশংস ঘটনার কথা। তার কথায়, ‘বাবা বলল দুপুরে বাড়ি এসে খাবে। অপেক্ষায় ছিলাম। বাবা আর ফিরলই না!’
কাঁচে ঢাকা গাড়িতে আলিমুদ্দিনের দেহ যখন ফিরল তখন মাঝরাত। আলিমুদ্দিনের দেহ গ্রামে প্রবেশের আগেই গ্রাম ঘিরে ফেলেছিল পুলিশ। শুক্রবার বিকালে তার দেহ কবর দেওয়ার পরেও গ্রামের পুলিশি পাহারা ওঠেনি। আলিমুদ্দিনের পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ঠিকা শ্রমিক থেকে শুরু করে সংসার চালানোর জন্য যখন যা কাজ পেতেন, তাই করতেন তিনি। মরিয়মের দাবি, ‘আমার স্বামী কখনও মাংস কেনাবেচার ব্যবসা করেননি। তার গাড়িতে মাংস কী ভাবে এল বুঝতে পারছি না!’
ছয় সন্তানকে নিয়ে এখন সংসার চালানোই মরিয়মের কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। তার কথায়, ‘খুব হিসেবি ছিলেন আমার স্বামী। ছোটখাটো কাজ করেও আস্তে আস্তে টাকা জমিয়ে একটা পুরনো মারুতি ভ্যান কিনেছিলেন। গাড়িটা থাকলেও ব্যবসার কাজে লাগানো যেত। সেটাও তো ওরা পুড়িয়ে দিল।’
বৃহস্পতিবার গরুর মাংস বহনের অভিযোগে আলিমুদ্দিন পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তার পিকআপ ভ্যানও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় ১৩ জন অভিযুক্তদের মধ্যে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস বলেন, ‘রামগড়ের ঘটনার দ্রুত তদন্তের জন্য চারটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে সিআইডি-রও একটি দল রয়েছে। ফার্স্ট ট্রাক কোর্টের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃতদের বিচার হবে।’
রাজ্য পুলিশের ডিজি ডি কে পাণ্ডে জানান, দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ফরিদাবাদে ঈদের কেনাকাট করতে যাওয়ার সময় চলন্ত ট্রেনে গরুর মাংস খাওয়ার অপরাধে গণপিটুনিতে নিহত কিশোর জুনায়েদের বড় ভাইকে দিল্লি হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
/এএ/

সম্পর্কিত
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট কাল
ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য খালাস করে গেলেন যে নারী ট্রাকচালক
সর্বশেষ খবর
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা