লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের গৃহায়ন ও অন্যান্য সেবা দিতে স্থানীয় কাউন্সিলকে সহায়তা করবে সরকার। এ ব্যাপারে কাউন্সিলকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে বুধবার একটি কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। গত মাসে গ্রেনফেল টাওয়ারের ওই অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৮০ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ব্রিটিশ বাংলাদেশিরাও রয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সাজিদ জাভিদ লন্ডনে অগ্নিকবলিতদের পুনর্বাসনে সরকারি টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, এটা হবে সম্পূর্ণ স্বাধীন টাস্কফোর্স।
সাজিদ জাভিদ বলেন, এ টাস্কফোর্স স্থায়ী আবাসনের আগ পর্যন্ত অস্থায়ী বাসস্থানে থাকা ওয়েস্ট লন্ডনের শত শত মানুষকে সহায়তা করবে।
এর আগে গ্রেনফেল টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পদত্যাগ করেছেন স্থানীয় কাউন্সিল প্রধানের নিকোলাস প্যাজেট-ব্রাউন। এ ঘটনায় অব্যাহত সমালোচনার মুখে তিনি কেনসিংটন ও চেলসা কাউন্সিলের প্রধানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন।
প্যাজেট-ব্রাউন বলেন, আমাকে বাধ্য হয়ে এই বিয়োগান্তক ঘটনার দায়ভার নিতে হচ্ছে। আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
চলতি বছরের ১৪ জুন লন্ডনের ২৪ তলা বিশিষ্ট গ্রেনফেল টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৭৯ জন প্রাণহানির শিকার হন।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিকোলাসকে অভিযুক্ত করে তার পদত্যাগ দাবি উঠে বিভিন্ন মহল থেকে। লন্ডনের মেয়ার সাদিক খানসহ দেশটির সিনিয়র রাজনীতিকরা তার পদত্যাগের দাবি তোলেন। গ্রেনফেল টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনের ঘটনাকে স্বাভাবিক দুর্ঘটনা বলে মানতে পারছেন না লন্ডনের বাসিন্দরাও।
ভবনের চতুর্থ তলায় লাগা আগুন কী করে এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারল, তার জবাব চাইছেন স্থানীয়রা। লন্ডনবাসীর দাবি, এ বিপর্যয়ে যাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
আগুনের ভয়াবহতা দেখে ভবনটির নির্মাণের ধরন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। খোঁজা হচ্ছে ভবনটির নির্মাণজনিত ত্রুটি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে কেন আগুন এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল।
২০১৬ সালের মে মাসে ভবনটির সংস্কার করার সময় এর বাইরে অ্যালুমিনিয়াম প্যানেল ব্যবহার করা হয়। আগুন ভীতির কারণেই ৪০ ফুটের বেশি উঁচু ভবনে ওই প্রলেপ ব্যবহার করা যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ। গ্রেনফেলের এই ঘটনায় ন্যায়বিচার চেয়ে জাস্টিস ফর গ্রেনফেল নামে ফেসবুকে একটি ইভেন্ট খুলেছেন লন্ডনের নাগরিকেরা।
২০১৬ সালে ভবনটির সংস্কার কাজ করা রাইডন কন্সট্রাকশন অবশ্য দাবি করেছে তারা সবরকম অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ‘আমরা গ্রেনফেল টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের কথা শুনে খুবই মর্মাহত। হতাহত আর তাদের পরিবারের পাশে রয়েছি। রাইডন কোম্পানি সংস্কার কাজ শেষ করেছে ২০১৬ সালের গ্রীষ্মে। সে সময় সকল প্রকার অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।’
/এমপি/