X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিক্ষোভের মধ্যেই জার্মানিতে শুরু হচ্ছে জি-টোয়েন্টি সম্মেলন

বিদেশ ডেস্ক
০৬ জুলাই ২০১৭, ২৩:৩৮আপডেট : ০৬ জুলাই ২০১৭, ২৩:৪২

বিক্ষোভের মধ্যেই জার্মানিতে শুরু হচ্ছে জি-টোয়েন্টি সম্মেলন অব্যাহত বিক্ষোভের মধ্যেই ৭ জুলাই জার্মানির হামবুর্গে শুরু হচ্ছে দুই দিনের জি-টোয়েন্টি সম্মেলন। এ সম্মেলন যতই এগিয়ে আসছে, ততই জার্মানির বিভিন্ন স্থানে জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। বিশ্বের প্রধান শক্তিগুলোর জলবায়ু এবং বাণিজ্য নীতির প্রতিবাদ করছেন বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা। প্রতিবাদকারীরা তাদের প্ল্যাকার্ডগুলো ইংরেজিতে লিখে এনেছেন। কারণ, তারা চান তাদের বার্তাগুলো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাক। অধিকাংশ বার্তাই পরিবেশ সুরক্ষার জন্য তৈরি। রাজপথের বাইরে পানিপথেও প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন অনেকে। ব্যানার ও রঙ্গিন জ্যাকেট পরে আলস্টার নদীতে নৌবহর সাজিয়েছেন প্রতিবাদকারীরা। নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে বহু সাধারণ মানুষ ওই নৌবহরকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

এমন এক সময়ে দুনিয়ার শক্তিধর নেতারা এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন, যখন তাদের মধ্যে মতবিরোধ তুঙ্গে রয়েছে। নিকট অতীতে জি-টোয়েন্টি’র কোনও সম্মেলন ঘিরে এমন অবস্থা দেখা যায়নি।

জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবে গত ১২ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সম্মেলন আয়োজনের অভিজ্ঞতা ভালোই রয়েছে তার। ২০০৭ সালে জার্মানির বাল্টিক সি রিসর্ট হাইলিগেনডামে জি-সেভেন বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ২০১৫ সালে বাভারিয়ার এলমাওতে সি-সেভেনের আরেকটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এখন হামবুর্গে আয়োজিত হচ্ছে জি-টোয়েন্টি সম্মেলন। এ আয়োজনের সভাপতিত্বের দায়িত্বে রয়েছে জার্মানি। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, তুরস্কসহ ২০টি ধনী এবং উন্নয়নশীল দেশের প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।

হামবুর্গের এই সম্মেলনেটি চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। ম্যার্কেল নিজেই স্বীকার করেছেন সেকথা। তিনি বলেন, ‘‘চলতি বছর বিশেষভাবে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে জি-টোয়েন্টি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমি এখানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর কথা বলবো: সন্ত্রাসবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন, সংরক্ষণবাদ–  এসবই আমাদের এজেন্ডায় রয়েছে। বিশ্ব বর্তমানে এক অস্থির অবস্থার মধ্যে রয়েছে, ঐক্যের অভাব স্পষ্ট।”

তিন ক্ষমতাধর নেতা

বিশ্বে ঐক্যের অভাব স্পষ্ট করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। তিন নেতাই জি-টোয়েন্টি বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। এটাও পরিষ্কার যে, তিন নেতাই বৈঠকে নিজেদের এজেন্ডা এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।

ট্রাম্প এই বৈঠককে পুতিনের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি সাক্ষাতের সুযোগ হিসেবে নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে আলোচনার বিষয় অনেক। ইউক্রেন সংকট, সিরিয়া যুদ্ধের পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নানা নিষেধাজ্ঞা এবং মার্কিন নির্বাচনে মস্কোর প্রভাব বিস্তারের মতো নানা ইস্যু উঠে আসতে পারে তাদের আলোচনায়।

বিক্ষোভের মধ্যেই জার্মানিতে শুরু হচ্ছে জি-টোয়েন্টি সম্মেলন

জলবায়ু নিয়ে বিতর্ক

জি-টোয়েন্টি সামিটে ট্রাম্পের কাছে আলোচনার অবশ্য আরও বিষয়বস্তু রয়েছে। স্টিলের বাড়াবাড়ি রকমের উৎপাদনের বিরুদ্ধে উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করবেন তিনি। এমনকি এজন্য নিষেধাজ্ঞার দিকেও যেতে পারেন। আর এটাও পরিষ্কার যে, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার যে ঘোষণা ট্রাম্প দিয়েছেন, তার নড়চড় হবে না। ম্যার্কেল এই প্রসঙ্গে বলেছেন যে, ‘‘যেহেতু প্যারিস চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সেহেতু আমরা হামবুর্গে আলোচনা সহজ হবে আশা করতে পারি না।''

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে ব্যবধান স্পষ্ট এবং সেটা আমি লুকাতে গেলে তা অসততা হবে। আমি সেটা করবো না। কেউ যদি মনে করে যে, বিচ্ছিন্নতাবাদ আর সংরক্ষণবাদের মাধ্যমে এই সমস্যার (জলবায়ু পরির্বতন) মোকাবিলা করা যাবে, তাহলে সে বড় ভুল করবে।''

আলোচনায় আরও যা থাকছে

জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়াও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথ লড়াই, নারী নীতি এবং স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে আলোচনা হবে সম্মেলনে। এসব বিষয়ে অবশ্য ঐক্মত্যে পৌঁছানোর ব্যাপারে আশাবাদী ম্যার্কেল। শরণার্থী নীতি নিয়ে আলোচনাতেও মতবিরোধ তেমন একটা হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি মুক্ত বাণিজ্য নিয়েও জোটের একটি শক্ত অবস্থান চান ম্যার্কেল।

যদিও সম্মেলনে আফ্রিকার উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে নেই, তবে আলোচনায় থাকছে আফ্রিকাও। আফ্রিকায় উন্নয়ন সহায়তা অব্যাহত রেখেই বিভিন্ন খাতে সরকারি এবং বেসরকারি তরফ থেকে বিনিয়োগ বাড়ানোর পক্ষে জি-টোয়েন্টির সভাপতিত্বকারী দেশ জার্মানি। এটা সম্ভব হলে ইউরোপের ওপর শরণার্থীদের চাপ কমবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

হামবুর্গ সম্মেলন কভার করতে বিশ্বের ৬৫টি দেশের প্রায় পাঁচ হাজার সাংবাদিক অ্যাক্রেডিটেশন করেছেন। সম্মেলন ঘিরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সামলাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন প্রায় ২০ হাজার পুলিশ সদস্য। সূত্র: ডয়চে ভেলে।

/এমপি/

সম্পর্কিত
মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত সহায়তা বিলে ভোট আজ
রুশ গুপ্তচর সন্দেহে জার্মানিতে গ্রেফতার ২
ইইউ দেশগুলোকে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র-বিধ্বংসী অস্ত্র পাঠাতে হবে: বোরেল
সর্বশেষ খবর
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার বিকল্প নেই
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার বিকল্প নেই
জনগণ এনডিএ জোটকে একচেটিয়া ভোট দিয়েছে: মোদি
জনগণ এনডিএ জোটকে একচেটিয়া ভোট দিয়েছে: মোদি
সোনার দাম কমেছে, আজ থেকেই কার্যকর
সোনার দাম কমেছে, আজ থেকেই কার্যকর
অতিরিক্ত মদপানে লেগুনাচালকের মৃত্যু
অতিরিক্ত মদপানে লেগুনাচালকের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া