যুক্তরাষ্ট্রে এক পুলিশ কর্মকর্তার ‘অকারণ’ গুলিতে নিহত হয়েছেন একজন অস্ট্রেলীয় নারী। মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস এলাকায় পুলিশ ওই নারীকে কারণ ছাড়াই গুলি করে। মিনেসোটা ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক সেফটির (বিসিএ) বরাত দিয়ে বিভিন্ন মার্কিন ও অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম খবরটি নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, ঘটনার বিচার দাবি করেছে নিহতের স্বজনেরা। এরইমধ্যে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের। চলছে তদন্ত।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার ৯১১ নাম্বারে একটি ফোন আসে এবং সম্ভাব্য হামলার অভিযোগ করে পুলিশের কাছ থেকে সহায়তা চাওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুলিশের জরুরি সেবা প্রদানকারী দলের দুই কর্মকর্তা। সেসময় এক কর্মকর্তা গুলি ছুড়লে তাতে মারাত্মকভাবে বিদ্ধ হন এক নারী। শনিবারের ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে জনসুরাক্ষায় কাজ করা রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিসিএ।
মিনিয়াপোলিস-এর মেয়র বেসটি হগ জানিয়েছেন, পুলিশের এনকাউন্টার অথবা আকস্মিক গোলাগুলিতে কেউ নিহত হলে ঘটনাটি যেন খতিয়ে দেখা যায়; তা নিশ্চিত করতে পুলিশ কমকর্তাদের শরীরে ক্যামেরা যুক্ত করে দেওয়া হয়। তবে বিসিএ বলছে, শনিবারের ঘটনার সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের বডি ক্যামেরাগুলো চালু করা ছিল না।
অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহত নারীর নাম জাস্টিন ড্যামন্ড। তার বয়স ৪০ বছর। মিনিয়াপোলিস এলাকায় বসবাসরত ওই নারীকে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন জাস্টিন। তার সৎ পুত্র জ্যাক ড্যামন্ড জানান, বাড়ির কাছে খুব গোলমালের শব্দ শুনে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছিল। পরে পুলিশের গুলিতে তাকেই নিহত হতে হয়।
পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, “সহায়তা চেয়ে ফোন পাওয়ার পর পুলিশ কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এরপর তারা ব্যবস্থা নিতে শুরু করেন, তখন এক কর্মকর্তার গুলিতে ওই নারী নিহত হন। আর এরপরই ব্যুরো অব ক্রিমিনাল এপ্রিহেনশন (বিসিএ)-কে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট এ ঘটনাটি এখন বিসিএ তদন্ত করবে।” পুলিশের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, “সময়ক্ষেপণ না করেই এক পুলিশ কর্মকর্তা গুলি ছোড়েন এবং তা ওই নারীর শরীরে মারাত্মকভাবে আঘাত করে।”
এক শোক মিছিলে অংশ নিয়ে তার সৎপুত্র জ্যাক ড্যামন্ড বলেন, “মূলত এক পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে আমার মা মারা গেছেন। কিন্তু কী কারণে তাকে গুলি করা হয়েছে তা আমার জানা নেই। আমি এর জবাব চাই। আমি শুধু জানি বাড়ির পাশে গোলমালের শব্দ শুনে তিনি পুলিশকে ডেকেছিলেন। সম্ভবত খারাপ কিছু ঘটছে এমন সন্দেহ থেকে পুলিশকে ডাকা হয়েছিল।” বিসিএ’র পক্ষ থেকে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বেতনসহ প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
জাস্টিন ড্যামন্ড সিডনি হাইস্কুলে পড়াশোনা করেছেন। ২০০২ সালে ইউনিভার্সিটি অব সিডনি থেকে ভেটেরিনারি সায়েন্স থেকে গ্রাজুয়েশন করেন তিনি। ইয়োগা প্রশিক্ষক জাস্টিন ড্যামন্ড তিন বছর ধরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্বাস্থ্য, জীবনযাপন এবং মেডিটেশনের শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। মিনিয়াপোলিসের স্থানীয় বাসিন্দা ডন ড্যামন্ডের সঙ্গে তার বাগদান হয়েছিল এবং আগামী মাসেই তাদের বিয়ের কথা ছিল।
/এফইউ/বিএ/
