কাতারের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাইটগুলো হ্যাকিং এর নেপথ্যে ভূমিকা থাকার কথা অস্বীকার করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।বিভিন্ন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট ওই দাবি করেছিল।
মে মাসের শেষের দিকে কাতারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কাতার নিউজ এজেন্ট (কিউএনএ) এবং সরকারি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়। হ্যাকাররা কিউএনএ’র ওয়েবসাইটে একটি ভুয়া প্রতিবেদন যুক্ত করে দেয়। ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ইরান, হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলকে সমর্থন জানিয়ে মন্তব্য করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় টিকে থাকবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। তবে, শুরু থেকেই কাতার দাবি করে আসছে দেশটির আমির কখনওই এ ধরনের মন্তব্য করেননি বরং কিউএনএ’র ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিশেষজ্ঞরা তখন এ হ্যাকিং এর খবরটি নিশ্চিত করতে পারলেও নেপথ্যে কারা আছে তা এতোদিন শনাক্ত করতে পারেননি।
আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, তিনি অভিযোগটি নাকচ করে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘অভিযোগটি সত্য নয়’। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত আমিরাতি দূত ইউসেফ আল ওতাইবা ওয়াশিংটন পোস্টের খবরটিকে নাকচ করে দিয়ে বলেছেন: “আর্টিকেলে হ্যাকিং নিয়ে যা যা অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলোর কোনওটিই আমিরাত করেনি....এটাই হলো কাতারের সত্যিকারের আচরণ। তালেবান থেকে শুরু করে হামাস এবং গাদ্দাফি পর্যন্ত জঙ্গিদের অর্থায়ন ও সমর্থন দেওয়াটা তাদের কাজ। সহিংসতায় উসকানি দেওয়া, চরমপন্থাকে উৎসাহিত করা এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর স্থিতিশীলতা নষ্ট করাটা কাতারের স্বভাব।”
তবে ওয়াশিংটন পোস্টের দাবি, নতুন করে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করার পর মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিশ্চিত হয়েছেন হ্যাকিংয়ের সঙ্গে আমিরাতের সংযোগ রয়েছে। তারা জানতে পেরেছে গত ২৩ মে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা হ্যাকিংয়ের পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। আর তার পরদিনই কাতার সরকারের সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়। সৌদি আরবে উপসাগরীয় দেশগুলোর নেতা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অংশগ্রহণের সন্ত্রাসবাদবিরোধী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরপরই হ্যাকারদের কবলে পড়ে কাতারের ওয়েবসাইট। তবে আমিরাতি কর্তৃপক্ষ সরাসরি হ্যাক করেছে নাকি চুক্তির ভিত্তিতে কাউকে দিয়ে হ্যাকিং চালিয়েছে তা নিশ্চিত করা হয়নি।
এর আগে গত ২০ জুন কাতারের অ্যাটর্নি জেনারেল আলি বিন ফেতাইস আল মারি দাবি করেছিলেন, সম্পর্ক ছিন্নকারী দেশগুলোই যে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কিউএনএর ওয়েবসাইট হ্যাক করে ভুয়া সংবাদ যুক্ত করে দিয়েছিল তার পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ আছে। তিনি দাবি করেছিলেন, দোহার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নকারী দেশগুলোর উৎপাদিত আইফোন ব্যবহার করে ওই সাইবার হামলা চালানো হয়েছিল বলে তারা প্রমাণ পেয়েছেন। তবে সেসময় নির্দিষ্ট করে দায়ী দেশগুলোর নাম উচ্চারণ করেননি মারি।
/এফইউ/বিএ/
