এখন পর্যন্ত বিশ্বে ৮৩০ কোটি টন প্লাস্টিক উৎপন্ন হয়েছে বলে দাবি মার্কিন বিজ্ঞানীদের। আর ২০৫০ সাল নাগাদ প্লাস্টিকের পরিমাণ দাঁড়াবে ১২০০ কোটি টন। তাদের দাবি, অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে পৃথিবী যেন ‘প্লাস্টিকের গ্রহ’ হয়ে উঠছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত ৬৫ বছরে প্লাস্টিকের অধিক উৎপাদন এবং খোলা প্রকৃতিতে এর দ্রুত ছড়িয়ে পড়া বাড়ছে আশংকাজনক হারে।
সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার একদল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোলজিস্ট প্লাস্টিকের উৎপাদন এবং ব্যবহার ও দূষণ সম্পর্কে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। সেখানে দেখা যায়, এই বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক পণ্যের অন্তত অর্ধেক উৎপাদন হয়েছে গত ১৩ বছরে। বাতিল প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার হয়েছে শতকরা মাত্র ৯ভাগ। ১২শতাংশকে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে আর বাকিটা ছড়িয়ে পড়েছে প্রকৃতিতে। আশংকাজনক হারে ছড়িয়ে পড়ছে সাগরে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থায়িত্ব এবং উপযোগিতার কারণেই ইস্পাত, সিমেন্ট এবং ইট ছাড়া মানুষের তৈরি আর সব কিছু থেকে এই বস্তুর উৎপাদন হার বেশি। বিশাল পরিমাণ উৎপাদিত প্লাস্টিকের প্রায় ৭৯ শতাংশই ছড়িয়ে পড়েছে খোলা প্রকৃতিতে। প্লাস্টিক বর্জ্যে দিনে দিনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ। ড. রোল্যান্ড গেয়ার নামের এক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ‘এই পৃথিবী খুব দ্রুতই পরিণত হবে একটি প্লাস্টিকের তৈরি গ্রহে। আর যদি আমরা এমনটা না চাই, তাহলে বিশেষ করে প্লাস্টিকের তৈরি জিনিস ব্যবহারে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
গবেষণায় আরও দাবি করা হয়, ২০১৪ সালে রিসাইক্লিং বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য হার ইউরোপে ছিল শতকরা ৩০ভাগ। সবচেয়ে কম রিসাইক্লিং হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, মাত্র ৯ শতাংশ। আর এই অধিকহারে উৎপাদন শুরু হয় ১৯৫০ এর সময় থেকে। প্লাস্টিক পণ্য পচনশীল না হওয়ায় এটিকে অত্যন্ত তাপ প্রয়োগ করে নি:শেষ করে দেয়া দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তারচেয়েও বেশি জরুরি প্লাস্টিকের সঠিক প্রয়োজন নিরুপণ করে তারপর এর উৎপাদনে যাওয়া। আর এর জন্যে দরকার একটি সমন্বিত আলোচনা।
/এমএইচ/