হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও শিক্ষাবর্ষে শ্বেতাঙ্গ শিক্ষার্থীরা সংখ্যালঘু হতে চলেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বিশ্বখ্যাত মার্কিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পরের শিক্ষাবর্ষে যারা ভর্তি হতে চলেছেন, তাদের অর্ধেকেরও বেশী হবেন অশ্বেতাঙ্গ।আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ৫০.৮ শতাংশ নতুন ছাত্র বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে আসছে।গত বছর এই হার ছিল ৪৭.৩ শতাংশ।
সবথেকে বেশি মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্ম দিয়েছে ম্যাসাচুসেটসভিত্তিক এই বিশ্ববিদ্যালয়। পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে বিবিসি বলছে, নতুন শিক্ষার্থীদের ২২.২ শতাংশ এশিয়ান-আমেরিকান। এরপর রয়েছে আফ্রিকান-আমেরিকান ১৪.৬ শতাংশ, হিস্পানিক বা ল্যাটিনো ১১.৬ শতাংশ এবং ন্যাটিভ আমেরিকান বা বিভিন্ন প্যাসিফিক দ্বীপ থেকে আসা ২.৫ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্বেতাঙ্গ প্রতিনিধিত্ব নিয়ে মার্কিন বিচার বিভাগ ও নিউইয়র্ক টাইমসের মধ্যে চলমান এক বিবাদের মধ্যে এই পরিসংখ্যান প্রকাশিত হলো।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমসের আগস্টের ১ তারিখের এক প্রতিবেদনে অভিযোগ তোলা হয়, ভর্তির নীতিমালা শ্বেতাঙ্গ আবেদনকারীদের বিপক্ষে থাকার কারণে বিচার বিভাগ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে 'ইতিবাচক পদক্ষেপ' নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।তবে বিচার বিভাগ খবরটি নাকচ করে জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জাতি-বর্ণের ভিত্তিতে ছাত্র ভর্তি করে এমন কোন অভিযোগ খতিয়ে দেখার কোন পরিকল্পনা তাদের নেই। তারা জানায়, যে নথির ভিত্তিতে নিউইয়র্ক টাইমস রিপোর্টটি করেছে, সেটি আসলে ২০১৫ সালে এশিয়ান-আমেরিকানদের পেশ করা একটি অভিযোগ। এতে দাবী করা হয়েছিল হার্ভার্ড এবং অন্যান্য আইভি লীগ বিশ্ববিদ্যালয় কোটা পদ্ধতি ব্যবহার করে ভালো ফলাফল করা এশিয়ানদের ভর্তি থেকে বঞ্চিত করছে।
হার্ভার্ডের মুখপাত্র র্যাচেল ডেন বলেন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠী থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে "প্রতিজ্ঞাবদ্ধ"।তিনি বলেন, "আমাদের বৈচিত্র্যপূর্ণ সমাজে নেতা হতে হলে শিক্ষার্থীদের এমন সক্ষমতা থাকতে হবে, যাতে করে তারা বিভিন্ন পটভূমি, জীবন-অভিজ্ঞতা এবং দৃষ্টিকোণ সম্পন্ন মানুষের সঙ্গে কাজ করেতে পারে"।"হার্ভার্ডের ভর্তি প্রক্রিয়ায় প্রত্যেক আবেদনকারীকে একজন সম্পূর্ণ মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর মার্কিন সুপ্রীম কোর্ট যে আইনি মান ঠিক করে দিয়েছে, আমরা তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ সবকিছু বিবেচনা করি"।
উল্লেখ্য, মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে জাতিগত কোটা নিষিদ্ধ করেছে, তবে নির্দেশনা দিয়েছে যে একজন আবেদনকারীর সার্বিক বিষয় পর্যালোচনার ক্ষেত্রে তার জাতিগত পটভূমির বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।
/বিএ/
