আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোয় জাতিগত নিধনযজ্ঞের শিকার হয়েছে কমপক্ষে আড়াইশ মানুষ। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে হতাহতের এই সংখ্যা নিশ্চিত করা হয়েছে। এক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হামলা এবং সরকারপন্থী গোষ্ঠীর অভিযানে ওই মানুষেরা প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে ৬০ জন শিশু রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবর থেকে এসব কথা জানা গেছে।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জেইদ রা’দ আল-হুসেইন এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। প্রাণ বাঁচাতে কঙ্গোর কাসাই এলাকা থেকে প্রতিবেশী দেশ অ্যাঙ্গোলায় পালিয়ে যাওয়া শরণার্থীদের দেয়া সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত মার্চ থেকে জুন মাসের মধ্যে মূলত সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠী ‘কামুইনা সাপুমিলিশিয়া’র হামলায় এসব হতভাগ্য মানুষের বেশিরভাগ নিহত হয়। এ ছাড়া, বিদ্রোহীদের দমনের জন্য গঠিত সরকার-পন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী বানা মুরার হাতেও কিছু মানুষ নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ ধারণা করছে, কঙ্গোর কাসাই এলাকায় অন্তত ৮০টি গণকবর রয়েছে। কঙ্গোর গৃহযুদ্ধের কারণে অন্তত ১৩ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া, ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রতিবেশী দেশ অ্যাঙ্গোলায় পালিয়ে গেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার তার প্রতিবেদনে এ ধরনের জাতি নিধনের ঘটনা যেন আর না ঘটে সে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কঙ্গো সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র ত্যাগ করে শান্তির প্রতি ফিরে আসারও আহ্বান জানান।
চলতি বছরের মার্চ মাসে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে অন্তত ৪০ জনের শিরশ্ছেদ করে বিদ্রোহী সেনারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পুলিশের একটি বহরে হামলা চালায় কামউইনা সাপু বিদ্রোহীরা। গত বছরের আগস্টে কাসাইয়ে বিদ্রোহী গ্রুপটির নেতাকে নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা করার পর পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।
জাতিসংঘ মার্চেই জানায়, কামউইনা সাপু নেতাকে হত্যার পর থেকে তখন পর্যন্ত ৪০০ মানুষ খুন হয়েছেন। ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন প্রায় দুই লাখ মানুষ।
/বিএ/