X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

মালয়েশিয়ায় অভিবাসী গ্রেফতারে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এমপিদের উদ্বেগ

বিদেশ ডেস্ক
০৮ আগস্ট ২০১৭, ২০:২১আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০১৭, ২০:৪২
image

মালয়েশিয়ায় অভিবাসী গ্রেফতারের সাম্প্রতিক ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর এমপিরা। তাদের নিয়ে গঠিত জোট আসিয়ান পার্লামেন্টারি ফর হিউম্যান রাইটস-এপিএইচআর অন্যায্য প্রক্রিয়ায় অভিবাসী গ্রেফতার এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নেতিবাচক ভূমিকার সমালোচনা করেছে। অভিবাসীদের ঝুঁকি আর অনিশ্চিত জীবনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে তাদের মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে এপিএইচআর। অভিবাসীদের অধিকার সংরক্ষণে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে একটি আঞ্চলিক চুক্তি করার আহ্বান জানিয়েছে তারা। মালয়েশিয়ার অভিবাসীদের মানবাধিকারবিষয়ক ৪ দিনের এক সত্য অনুসন্ধানকারী মিশন শেষে এসব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়।


মালয়েশিয়ায়  অভিবাসী গ্রেফতারে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার পার্লামেন্ট সদস্যদের উদ্বেগ

এশীয় অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য মালয়েশিয়া খুবই জনপ্রিয়। তবে এর মধ্যে কয়েক লাখ অভিবাসীর বৈধ কাগজপত্র নেই। কর্তৃপক্ষ আপাত ব্যবস্থা হিসেবে যে কার্ড সংগ্রহ করতে বলেছিল, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে অবৈধদের সর্বোচ্চ ২৩ শতাংশ তা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিল। সময়সীমা পার হওয়ার পর অভিযান শুরু হয়।  সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, এখন পর্যন্ত আটক ৬ হাজার অভিবাসীর মধ্যে বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এছাড়া মিয়ানমার, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামেরও অনেক নাগরিক আটক হয়েছেন। তবে এসব ক্ষেত্রে যেন মানবাধিকার ক্ষুণ্ন না হয় সেই বিষয়টি নজরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন আসিয়ান পার্লামেন্টারি ফর হিউম্যান রাইটস- এপিএইচআর।

ফিলিপাইনের হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভের সদস্য এবং এপিএইচআর এর বোর্ড মেম্বার টেডি বাগুইলাত বলেন, ‘চলমান গ্রেফতার প্রক্রিয়ার কারণে বহু অভিবাসী ঝুঁকি আর অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নেতিবাচক ভূমিকা আর ভয়ঙ্কর প্রক্রিয়া অবলম্বনের মধ্য দিয়ে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটছে।’ ফিলিপাইনের কংগ্রেসম্যান এমি দি জিসাস বলেন, ‘অনেক অভিবাসীই এখন আতঙ্কে রয়েছেন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বৈরী আচরণ ও কারাগারে মানবেতর পরিবেশেরও অভিযোগ রয়েছে।’
মালয়েশিয়ায় অভিবাসী শ্রমিক

এপিএইচআর-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংস্থাটির সদস্যরা মালয়েশিয়ায় অভিবাসীদের মানবাধিকারবিষয়ক এক সত্য অনুসন্ধানকারী মিশন সম্পন্ন করেন। সফরের সময় এমপিরা বিভিন্ন নাগরিক সমাজের সংগঠন, অভিবাসী ও শরণার্থী সম্প্রদায়, জাতিসংঘের সংস্থা, সরকারি কর্মকর্তা এবং মালয়েশিয়ান পার্লামেন্টের প্রতিনিধিসহ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দেশটির অভিবাসী কর্মী, শরণার্থী, অভিবাসন প্রত্যাশী এবং মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তারা। পাশাপাশি ওইসব মানুষকে যে ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, সেগুলো মোকাবিলায় আঞ্চলিক সমাধানও খুঁজে বের করেন তারা।

অনুসন্ধান শেষে তাদের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে: আসিয়ানভূক্ত দেশগুলোর নথিভুক্ত এবং অনথিভুক্ত দুই ধরনের অভিবাসীর ক্ষেত্রে‌ই নিপীড়িত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কেননা সরকারগুলো তাদের যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত করে না। এটা শ্রমিক প্রেরণকারী এবং শ্রমিক নিয়োগকারী দেশ দুইয়ের ক্ষেত্রেই বাস্তব। তাই অভিবাসী শ্রমিকরা যেন তাদের মৌলিক মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে, সেজন্য অঞ্চলগত পদক্ষেপ জরুরি। অভিবাসীদের অধিকার সংরক্ষণে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে একটি আঞ্চলিক চুক্তি করার আহ্বান জানায় সংস্থাটি। চুক্তিটি ওই শ্রমিক এবং তাদের পরিবারগুলোকে সুরক্ষা দেবে। প্রমোশন অ্যান্ড প্রটেকশন অব মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কারস ইন ২০০৭ নামের আসিয়ান ঘোষণার পর থেকেই এমন একটি চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা চলছে। বছরের শেষদিকে এ নিয়ে আবারও আলোচনার কথা রয়েছে।

কুয়ালালামপুরে একদল বিদেশি শ্রমিক

এপিএইচআর এর বোর্ড মেম্বার টেডি বাগুইলাত বলেন  ‘আমাদের গত কয়েকদিনের আলাপচারিতায় এটা স্পষ্ট হয়েছে যে একটি বড় ক্ষেত্র উন্নয়নের অপেক্ষায় আছে। শ্রমিক প্রেরণকারী ও নিয়োগকারী দেশ এ দুই পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে এবং যার যার দিক থেকে অভিবাসী কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈরী আচরণের অবসান ঘটানোর উদ্যোগ নিতে হবে। নিপীড়নের শিকার শরণার্থীদের নিরাপত্তা ও অধিকারের সুরক্ষায় পদক্ষেপ নিতে হবে।’

চারদিনের অনুসন্ধান শেষে সংস্থাটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, অভিবাসীদের অর্থনৈতিক অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নে পুরো অর্থনৈতিক প্রক্রিয়াটিই ভয়াবহ নেতিবাচক প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তির ওপর দাঁড়ানো। এতে সুপারিশ করা হয়েছে, অভিবাসী শ্রমিকরা আসিয়ানের সামগ্রিক অঞ্চলজুড়ে একটা বড় ধরনের অর্থনৈতিক অবদান রাখে, যা সরকারগুলোর আমলে নেওয়া উচিত।

অভিবাসী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযান

মালয়েশিয়ায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের অবৈধ শ্রমিকদের বৈধতা নিশ্চিতের জন্য ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছে সে দেশের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। তবে আপাত ব্যবস্থা হিসেবে ওই অবৈধ শ্রমিকদের ৩০ জুনের মধ্যে ই-কার্ড তথা কাজের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে বলেছিল তারা। এই সময়সীমা কোনওভাবে বাড়ানো হবে না জানিয়ে নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর থেকেই অভিযানের মধ্য দিয়ে অবৈধদের গ্রেফতার শুরু করে মালয়েশিয়া।

/এফইউ/বিএ/

সম্পর্কিত
সমলিঙ্গের বিয়ে অনুমোদনের পথে থাইল্যান্ড
মস্কোয় কনসার্টে হামলা: প্রশ্নের মুখে রুশ গোয়েন্দা সংস্থা
সুপেয় পানির অপচয়, বেঙ্গালুরুতে ২২ পরিবারকে জরিমানা
সর্বশেষ খবর
ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক রকেট হামলা হিজবুল্লাহর
ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক রকেট হামলা হিজবুল্লাহর
হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেফতার ৫
হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেফতার ৫
ন্যাটোর কোনও দেশ আক্রমণের পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার: পুতিন
ন্যাটোর কোনও দেশ আক্রমণের পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার: পুতিন
বাস-সিএনজির সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ ৩ জন নিহত
বাস-সিএনজির সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ ৩ জন নিহত
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
কারাগারে যেভাবে সেহরি-ইফতার করেন কয়েদিরা
কারাগারে যেভাবে সেহরি-ইফতার করেন কয়েদিরা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
‘বউদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ালে বর্জনের কথা বিশ্বাস করবো’
বিএনপির নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী‘বউদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ালে বর্জনের কথা বিশ্বাস করবো’