ফ্রান্সে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চলন্ত গাড়ি দিয়ে হামলার সাম্প্রতিক প্রবণতায় নতুন করে যুক্ত হলো প্যারিসের কাছাকাছি এক গ্রাম। সেখানকার একটি পিজা ক্যাফেতে চলন্ত গাড়ি ঢুকিয়ে দেওয়া হলে ১৩ বছর বয়সী এক বালিকা প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছেন ১২ জন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। এ ঘটনায় গাড়িচালককে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে ফরাসি নিরাপত্তা সূত্র। একে জঙ্গি হামলা বলতে নারাজ তারা।
জঙ্গি হামলাকে কারণ দেখিয়ে এ পর্যন্ত ৫ বার জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে এতে হামলা বন্ধ হয়নি। ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ৬ষ্ঠ দফায় জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। সেই ঘোষণার পর গেল সপ্তাহেও প্যারিসে এক ব্যক্তি একদল সৈন্যর ওপর চলন্ত গাড়ি তুলে দিলে ছয় সৈন্য আহত হন; পালানোর চেষ্টাকালে পুলিশের গুলিতে আহত অবস্থায় হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবারের হামলাস্থল প্যারিস থেকে ৫৫ কিলোমিটার পূর্বে লা ফেরতে-সু-জুয়ারের কাছে সেপ্ত-সর্ত নামের গ্রাম। সেখানে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই হামলা হয়। প্রাথমিক প্রতিবেদনগুলোতে নিহত বালিকার বয়স ৮ বছর বলা হলেও পরে তার বয়স ১৩ বলে জানানো হয়। ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ঘটনার পর ঘাতক বিএমডব্লিউটির চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৩২ বছর বয়সী ওই চালকের জাতীয়তা নিশ্চিত করেছেন। মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন. সন্দেহভাজন হামলাকারী ফরাসি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আরটিএল রেডিও জানিয়েছে, পুলিশের কাছে গাড়িতে অস্ত্রশস্ত্র থাকার কথা স্বীকার করেছে হামলাকারী।ইচ্ছাকৃতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলা হলেও এটিকে জঙ্গি হামলা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে না। আহতদের মধ্যে তার ছোট ভাইও আছে বলে পুলিশের সূত্রগুলো একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, হামলার সঙ্গে জঙ্গিবাদের কোনও সংযোগ পাননি তারা।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের নভেম্বরে প্যারিসে আত্মঘাতী বোমা হামলার পর প্রথম জরুরি অবস্থা জারি করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়াঁ ওলাঁদ। ওই হামলায় অন্তত ১৩০ জন নিহত হয়েছিলেন। গত বছর নিস শহরে এক ট্রাক হামলায় নিহত হন ৮৬ জন।
/বিএ/