ভেনেজুয়েলায় চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের সতর্ক করে দিয়েছেন দেশটির নবনিযুক্ত প্রসিকিউটর তারেক সাব। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেছেন, আন্দোলনকারী নেতাদের খুঁজে বের করে কারাগারে পাঠানো হবে। বিদ্বেষমূলক অপরাধ সংক্রান্ত নতুন একটি আইন পাসের একদিন আগে তিনি এ মন্তব্য করলেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নতুন এ আইন সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের দমনে ব্যবহার করা হবে।
চলতি মাসের গোড়ার দিকে ভেনেজুয়েলার নতুন পার্লামেন্ট গঠিত হওযার পর তারেক সাব’কে নিয়োগ দেওয়া হয়। দেশটিতে গত এপ্রিলে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তারেক সাব বলেন, বিদ্বেষপূর্ণ অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার সঙ্গে প্রসিকিউটর অফিসের সম্মানের প্রশ্ন জড়িত।
নতুন পার্লামেন্ট গঠনের পর তারেক সাব-এর পূর্বসূরি লুইসা অর্তেগা’কে বরখাস্ত করে দেশটির প্রশাসন। এর আগে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে তাকে নিজ অফিসে ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখা হয়। এ সময় টুইটারে দেওয়া পোস্টে লুইসা অর্তেগা বলেন, পাবলিক প্রসিকিউটর সদর দফতর অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা আমি প্রত্যাখ্যান করছি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগেই আমি এই বিধিবহির্ভূত পদক্ষেপের নিন্দা জানাই।
নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে নতুন পার্লামেন্টের অভিষেক স্থগিত করতেও আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন সাবেক প্রসিকিউটর লুইসা অর্তেগা। নির্বাচনের সুষ্ঠু হয়েছে কিনা-এর তদন্তে দুইজন বিচারককেও নিয়োগ দিয়েছে তার কার্যালয়।
ভেনেজুয়েলার বিরোধীদের অভিযোগ ক্ষমতা কুক্ষিগত করতেই এই বিতর্কিত নির্বাচন করেছেন মাদুরো। এজন্য নির্বাচনেও অংশ নেয়নি তারা। বরং তাদের ডাকা সরকারবিরোধী গণভোটে অংশ নিয়েছেন ৭০ লাখ মানুষ। তবে প্রেসিডেন্ট মাদুরো’র দাবি, আন্দোলনকারীরা মার্কিন ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর অবরোধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে কোনও মার্কিন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মাদুরোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখতে পারবে না। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলার নির্বাচনে রাষ্ট্র কর্তৃক সেনা সদস্যদের অতিরিক্ত বল প্রয়োগের কারণে তারা নির্বাচনকে স্বীকৃতি না-ও দিতে পারে।
মাদুরোর দাবি, বিপ্লবের জন্য এই ভোটের প্রয়োজন। মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ভয় করেন না। তার ভাষায়, ‘সাম্রাজ্যবাদী ট্রাম্প আমার বিরুদ্ধে তার পদক্ষেপে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি আমাকে কতটা ঘৃণা করেন। কিন্তু আমি বিদেশি সরকারের নির্দেশ কখনও মানিনি এবং ভবিষ্যতেও মানবো না। আমি স্বাধীন দেশের প্রেসিডেন্ট।’ প্রেসিডেন্ট মাদুরো’র দাবি, আন্দোলনকারীরা মার্কিন ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছে।
/এমপি/