স্পেনের বার্সেলোনাতে সাম্প্রতিক হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে স্পেনের মসজিদে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক ইমামকে সন্দেহ করা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, আবদেল বাকি এস সাত্তি নামের ওই ইমামের জন্ম মরক্কোতে। যে সন্ত্রাসী চক্রকে স্পেনে জোড়া হামলার জন্য দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে তা সাত্তিই গঠন করেছিলেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। স্পেনের বার্সেলোনায় হামলার আগেরদিন আলকানার এলাকার একটি বাড়িতে বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ হয়েছিল। সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া তিনটি মরদেহের মধ্যে সাত্তি রয়েছেন কিনা তা জানতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে। সাত্তির ব্যাপারে অবগত সূত্র এবং স্পেনের পুলিশের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো খবরটি জানিয়েছে।
১৭ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) স্পেনে দুটি সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে তদন্তের অগ্রগতি জানাতে গিয়ে রবিবার (২০ আগস্ট) কাতালান পুলিশ প্রধান জোসেফ লুইস ট্রাপেরো বলেন, তাদের ধারণা ওই সন্ত্রাসী চক্রটির সদস্য সংখ্যা ছিল ১২ জন। ছয় মাস ধরে হামলার পরিকল্পনা করছিল তারা। ধারণা করা হচ্ছে রিপোল শহরে ওই সন্ত্রাসী চক্রের সদস্যদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়েছিল। তারা একসঙ্গে ফুটবল খেলতো এবং একে অপরকে উগ্রপন্থা, বিদ্বেষ ও গণহারে হত্যার পথে আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিল। আর ওই রিপোল শহরেরই একটি মসজিদে ইমাম হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন আবদেল বাকি এস সাত্তি। গত সপ্তাহে সন্তানদের নিয়ে রিপোল শহর থেকে লাপাত্তা হয়ে যান ৪০ বছর বয়সী ইমাম। শহরের মুসলিম সম্প্রদায়ের কেউ কেউ ভেবেছিলেন সাত্তি নিজ দেশ মরক্কো গেছেন।
সাত্তি রিপোল ছেড়ে ১৪৫ মাইল দক্ষিণের শহর আলকানারে গিয়েছিলেন কিনা তা শনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। রিপোল যাওয়ার আগে আলকানারে থাকতেন সাত্তি। এ শহরেই ওই সন্ত্রাসী চক্রটি একটি পরিত্যক্ত বাড়িকে বোমার কারখানা হিসেবে ব্যবহার করতো। তবে বার্সেলোনার হামলার আগেরদিন ওই বাড়িতে বিস্ফোরণের কারণে তাদের পরিকল্পনাগুলো ভেস্তে যায়।
কাতালান পুলিশের দাবি, তারা ওই সন্ত্রাসী চক্রের ১২ জনকেই শনাক্ত করতে পেরেছে। এরমধ্যে ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে, দুইজন নিজেদের বোমাতেই উড়ে গেছে, চারজন নিরাপত্তা হেফাজতে রয়েছে এবং একজন পলাতক রয়েছে।
স্পেনের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে বার্সেলোনার লাস রামব্লাসে পথচারীদের ভিড়ে ভ্যান উঠিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ১৪ জন নিহত হন। এরপর স্থানীয় সময় মধ্যরাতের দিকে ক্যামব্রিলসের কাছে আরেকটি হামলার প্রচেষ্টা হলে পাঁচ সন্দেহভাজনকে হত্যার মধ্য দিয়ে তা ঠেকিয়ে দেওয়ার দাবি করে পুলিশ। ওই ঘটনায় সাতজন (ছয় পথচারী ও এক পুলিশ) আহত হন। এই দুই হামলার আগে বৃহস্পতিবার সকালে আলকানার এলাকার একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। এতে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। এটিকে প্রথমে দুর্ঘটনা বলে মনে করা হলেও পরে পুলিশ ধারণা করে তিনটি ঘটনার সংযোগ রয়েছে। রবিবার স্পেনের পুলিশ জানায়, বার্সেলোনায় দুটি সন্ত্রাসী হামলা চালানো চক্রের কাছে ১২০টি গ্যাস ক্যানিস্টার ছিল। গাড়ি হামলায় এসব ক্যানিস্টার ব্যবহার করার পরিকল্পনা ছিল হামলাকারীদের।