X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

শান্তিতে নোবেল জিতলো পারমাণবিক অস্ত্রবিরোধী জোট আইসিএএন

বিদেশ ডেস্ক
০৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:০৪আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:২৬
image

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে এ বছর শান্তিতে নোবেল জিতে নিয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র বিলোপে প্রচারণাকারী সংগঠনের জোট ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবলিশ নিউক্লিয়ার উইপনস (আইসিএএন)। নরওয়ের স্থানীয় সময় শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকাল ১১টায়  সংগঠনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তিতে নোবেলজয়ী ঘোষণা করা হয়। পুরস্কার ঘোষণা করতে গিয়ে নোবেল কমিটি পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকির ব্যাপারে সতর্ক করে। নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির নেতা বেরিট রেইস অ্যান্ডারসন বলেন, 'আমরা এখন এমন এক বিশ্বে বাস করছি যেখানে পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে আরও বৃহত্তর পরিসরে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।' নোবেল কমিটি জানায়, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ এবং এ ধরনের অস্ত্র বিলোপে একটি চুক্তির জন্য আইসিএনএ'র প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে এ সংগঠনকে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বেরিট রেইস আরও জানান, পুরস্কার জয়ের খবরে আইসিএএন নেতা বিট্রিস ফিন 'আনন্দ' প্রকাশ করেছেন।

আইসিএএন

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, পারমাণবিক অস্ত্র বিলোপে প্রচারণা চালানো সংগঠন আইসিএএন ১০০টিরও বেশি দেশে তৃণমূল পর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সর্বপ্রথম অস্ট্রেলিয়ায় কার্যক্রম শুরু করলেও সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে ভিয়েনায়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির সদর দফতর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। 

পুরস্কার জয়ের পর ফেসবুকে একটি বিবৃতি দিয়েছে আইসিএএন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আণবিক যুগ শুরুর পর থেকে যারা পারমাণবিক অস্ত্র রোধে সোচ্চার থেকেছেন, এসব অস্ত্র রাখার বৈধ উদ্দেশ্য নেই দাবি করে যারা সরব থেকেছেন এবং বিশ্ব থেকে এ ধরনের অস্ত্র বিলোপ করতে যারা সোচ্চার থেকেছেন সেই লাখ লাখ ক্যাম্পেইনার ও বিশ্বের উদ্বেগী মানুষদেরকে পুরস্কারটি উৎসর্গ করা হচ্ছে।’

এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ৩১৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে পোপ ফ্রান্সিস, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, সিরিয়ার উদ্ধারকর্মী দল হোয়াইট হেলমেটস, যৌথভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোগেরিনি ও ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ, পশ্চিম আফ্রিকান জোট ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোওয়াস) এবং জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ গ্রান্দি, আমেরিকান সিভিল রাইট ইউনিয়নের নাম আলোচনায় ছিল। শেষ পর্যন্ত পুরস্কার জিতে নিয়েছে আইসিএএন।  

১৯০১ সাল থেকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। তখন থেকে এ পর্যন্ত ৯৮ বার নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হলো। পুরস্কারের ছয়টি ক্যাটাগরির মধ্যে পাঁচটি ক্যাটাগরির বিজয়ী সুইডিশ নোবেল কমিটি ঘোষণা করলেও শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা নরওয়ে কমিটি দিয়ে থাকে। এ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন একজন। তিনি হলেন ভিয়েতনামের বিপ্লবী, কূটনীতিবিদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব লি ডাক থো।

এ বছর এ পর্যন্ত শান্তিসহ মোট ৫টি ক্যাটাগরিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৯ অক্টোবর সোমবার অর্থনীতিতে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণার মধ্য দিয়ে এ বছরের পুরস্কার ঘোষণার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। আর বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে ডিসেম্বরে।

মহাকর্ষীয় তরঙ্গ সন্ধানের জন্য ২০১৭ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি বিজ্ঞানী। তারা হলেন রেইনার ওয়েইস,ব্যারি ব্যারিস ও কিপস থ্রোন। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবদান রাখায় ২০১৭ সালে চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার জিতে নেন তিন মার্কিন বিজ্ঞানী জেফরি হল,মাইকেল রোশবাশ ও মাইকেলন ইয়াং। আর এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জাপানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক কাজু ইশিগুরো। আরজৈবকণার প্রতিচ্ছবি ধারণের নতুন কৌশল উদ্ভাবনের স্বীকৃতি হিসেবে চলতি বছরে রসায়ন শাস্ত্রে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন রিচার্ড হেন্ডারসন,জোয়াকিম ফ্যাংক এবং জ্যাক দুবাশে। ক্রায়ো ইলেকট্রনিক পদ্ধতির প্রয়োগে জৈবকণার চিত্রধারণ আরও উন্নত ও সহজ করে তুলেছেন ওই তিন বিজ্ঞানী। 

উল্লেখ্য, ১৮৯৫ সালের নভেম্বর মাসে আলফ্রেড নোবেল তার মোট উপার্জনের ৯৪% (৩ কোটি সুইডিশ ক্রোনার) দিয়ে তার উইলের মাধ্যমে নোবেল পুরষ্কার প্রবর্তন করেন। এই বিপুল অর্থ দিয়েই শুরু হয় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান। ১৯৬৮ তে তালিকায় যুক্ত হয় অর্থনীতি। পুরস্কার ঘোষণার আগেই মৃত্যু বরণ করেছিলেন আলফ্রেড নোবেল। আইনসভার অনুমোদন শেষে তার উইল অনুযায়ী নোবেল ফাউন্ডেশন গঠিত হয়। তাদের ওপর দায়িত্ব বর্তায় আলফ্রেড নোবেলের রেখে যাওয়া অর্থের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ন করা এবং নোবেল পুরষ্কারের সার্বিক ব্যবস্থাপনা করা। আর বিজয়ী নির্বাচনের দায়িত্ব সুইডিশ একাডেমি আর নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটিকে ভাগ করে দেওয়া হয়।

/এফইউ/

/এফইউ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিন-রামাফোসার ফোনালাপ
ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিন-রামাফোসার ফোনালাপ
ভিসা-পাসপোর্ট হারিয়ে প্রবাসী অজ্ঞান, ৯৯৯-এ কলে উদ্ধার
ভিসা-পাসপোর্ট হারিয়ে প্রবাসী অজ্ঞান, ৯৯৯-এ কলে উদ্ধার
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
উত্তর কোরিয়া সফর করলেন রুশ গোয়েন্দা প্রধান
উত্তর কোরিয়া সফর করলেন রুশ গোয়েন্দা প্রধান
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর যেতে সময় লাগবে ৪৪ মিনিট
গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর যেতে সময় লাগবে ৪৪ মিনিট