সৌদি আরবে যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) নেতৃত্বে চলমান দুর্নীতিবিরোধী আটক ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ১৭ জনকে ব্যাপক পিটুনি ও নির্যাতন করা হয়েছে। পিটুনিতে তাদের অবস্থা এতই শোচনীয় পড়েছে যে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। সৌদি আরবের চিকিৎসকের বরাত দিয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডলইস্ট আই এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনেও আটক ব্যক্তিদের মারধর ও চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে। সৌদি আরবের রাজ আদালতের সূত্রের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদের আটক করা হয়েছে তারা নিপীড়ন এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন।
যুবরাজ এমবিএসের নেতৃত্বে চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে কয়েকশ সৌদি ব্যবসায়ী ও অন্তত ১১ জন প্রিন্সকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত হোটেল রিৎজ কার্লটনে রাখা হয়েছে। ওই হোটেলে কর্তব্যরত এক চিকিৎসকের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ১৭ জনের অবস্থা শোচনীয়। তাদের হাসপাতালের চিকিৎসা প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কূটনীতিক, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ও প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের আশঙ্কা সৌদি যুবরাজ বেপরোয়া আচরণ করছেন এবং তা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি যুবরাজের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন।
অজ্ঞাত একটি সূত্র মিডলইস্ট আই-কে জানিয়েছে, নভেম্বরের শুরুতে পাঁচ শতাধিক মানুষকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য আদায়ের জন্য জিজ্ঞাসাবাদে নির্যাতন করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ধনকুবের আল-ওয়ালিদ বিন তালাল ও ন্যাশনাল গার্ডের সাবেক প্রধান মিতেব বিন আব্দুল্লাহ রয়েছেন। মিতেব প্রয়াত সৌদি বাদশা আব্দুল্লাহর ছেলে।
আটক ব্যবসায়ীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন, সৌদি আরবের বৃহত্তম নির্মাণ কোম্পানি বিনলাদিন গ্রুপের সিইও বকর বিন লাদেন ও খালিদ আল-তুয়াইজরি।
দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে সৌদি কর্তৃপক্ষ কয়েক হাজার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে। সতর্ক করে জানিয়েছে, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে সংশ্লিষ্ট যে কোনও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে।