রাশিয়া যে কোনও সময় সাগরতলের ইন্টারনেট ক্যাবল কেটে দিয়ে যুক্তরাজ্যসহ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোকে বিপদে ফেলতে পারে। কেননা দেশটির জাহাজগুলোকে নিয়মিত আটলান্টিক ক্যাবল এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। লন্ডনের রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইনস্টিটিউটে দেওয়া বক্তব্যে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান স্টুয়ার্ট পিচ। তিনি দাবি করেন, রাশিয়ার কাছ থেকে ন্যাটোর প্রতি হুমকি আগের চেয়ে বেড়েছে। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
বিশ্বের প্রায় ৯৭ শতাংশ যোগাযোগ আর প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ কোটি ডলারের আর্থিক লেনদেন এসব ক্যাবল দিয়ে সম্পন্ন হয়। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ বিশ্বের বাকি দেশগুলো নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্যও ক্যাবলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাজ্যের বিমান বাহিনী প্রধান মার্শাল পিচকে গত সেপ্টেম্বরে ন্যাটোর সামরিক কমিটির প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তার ভাষায়, রাশিয়া এক 'ভিন্নধর্মী' যুদ্ধ শুরু করেছে। এ ক্যাবল কেটে দেওয়ার মানে হচ্ছে যুক্তরাজ্য ও তার সহযোগী দেশগুলোকে রাশিয়ার স্বার্থে তাদের নৌবাহিনীর সঙ্গে কাজ করতে বাধ্য করা।
তিনি বলেন, সাগরতল দিয়ে যাওয়া ওই ক্যাবল বিচ্ছিন্ন করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ইন্টারনেট যোগাযোগে বিপর্যয় নেমে আসবে। এতে আমাদের উন্নয়ন ও জীবনযাপনে নতুন ঝুঁকি তৈরি হবে।
এর আগে যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টির এমপি রিশি সাঙ্ক রাশিয়ার ডুবোজাহাজগুলোর এমন ‘আগ্রাসীভাবে কর্মকাণ্ডে’র ব্যাপারে মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। ২০১৩ সালে ক্রিমিয়া সংকটের সময়ও রাশিয়া প্রথমেই তাদের ইন্টারনেটের প্রধান ক্যাবলটি কেটে দিয়েছিল বলে মনে করিয়ে দেন সাঙ্ক।
ন্যাটোতে যুক্তরাজ্যের সেনাদের সংখ্যা সাত হাজার থেকে কমিয়ে ছয় হাজার করার প্রেক্ষিতে এর বিরোধিতায় এসব যুক্তি তুলে ধরেন পিচ।
ক্রিমিয়া আক্রমণের পর থেকেই যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো রাশিয়া তাদের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে আসছে। পূর্ব ইউরোপের ওই দেশটিতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে দেশটির নেতা ভ্লাদিমির পুতিন বিশ্বে তাদের অবস্থানের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করতে পেরেছিলেন।