সিলিকন ভ্যালিতে নতুন এক বিতর্কের জন্ম হয়েছে। ক্ষুদে ব্লগ সাইট টুইটার’র সিনিয়র নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা প্রকৌশলী ক্লে হেইনেস একটি ভিডিওতে প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনার তথ্য প্রকাশ করেছেন। ভিডিওটি ব্যাপক হারে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে ক্লে দাবি করেছেন, প্রতিটি টুইটার অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীদের সব ধরনের গোপন তথ্যে তাদের প্রবেশগম্যতা (অ্যাকসেস) রয়েছে। এমনকি মুছে ফেলা বার্তাও দেখার সুযোগ রয়েছে তাদের।
প্রজেক্ট ভেরিটাস নামের একটি অলাভজনক অনুসন্ধানী প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও সাংবাদিক জেমস ও’কিফি ভিডিওটি পোস্ট করেছেন। এরই মধ্যে তা কয়েকহাজার টুইটারেই শেয়ার হয়েছে।
টুইটার কীভাবে ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে জানতে চাইলে ক্লে জানান, আমাদের যদি কখনও সমন জারি করা হয়। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলবাহিনীর পক্ষ থেকে তা হবে খুব বিপজ্জনক।
ব্যবহারকারীর সব তথ্যে তাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে জানিয়েছে ক্লে বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে যা করতে পারি তা ভয়ানক। প্রত্যেক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টের পূর্ণ প্রবেশগম্যতা আমাদের রয়েছে। ব্যবহারকারীদের পাঠানো সরাসরি বার্তা, মুছে ফেলা বার্তা ও মুছে ফেলা টুইটেও আমাদের প্রবেশগম্যতা রয়েছে। আমি আপনাদের বলতে পারি কোথা থেকে লগিন করেছেন, ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করছেন, কবে তা পরিবর্তন করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইনকুইসিটর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় হলো টুইটার কর্মকর্তা স্বীকার করলেন তারা ব্যবহারকারীর আইপি অ্যাড্রেস দিয়ে আচরণ পর্যালোচনা করে থাকে। তাত্ত্বিকভাবে এর অর্থ হলো, ব্যবহারকারীর আচরণে তারা নজরদারি চালাতে পারে।
Clay Haynes on the power Twitter employees have: "It's terrifying in my opinion…" "It's very, very dangerous… also it's very creepy Big Brother-ish"
— James O'Keefe (@JamesOKeefeIII) January 10, 2018
FULL VIDEO: https://t.co/LQvvdmfkEU pic.twitter.com/j28lvdRD97
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে টুইটারের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমসকে কোম্পানির মুখপাত্র বলেন, ব্যক্তিগতভাবে ভিডিওতে কথা ও ব্যক্তিগত সক্ষমতা টুইটারকে প্রতিনিধিত্ব করে না। মুখপাত্র আইন মেনে চলার প্রতি কোম্পানির অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
টুইটারসহ ফেসবুক ও গুগল সাম্প্রতিক সময়ে বেশ সমালোচনার মুখে রয়েছে। ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর পুলিৎজারজয়ী সাংবাদিক গ্রীনওয়াল্ড একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইন্টারসেপ্ট-এ। ওই প্রতিবেদনে তিনি ফাঁস করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সরকারের অনুরোধে অনেক অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলফে ফেসবুক। ইসরায়েল সরকার ও ফেসবুক প্রতিনিধিদের মধ্যে এই বিষয়ে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। ফিলিস্তিনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ফেসবুক সেন্সরশিপ জারি রাখবে বলে ইসরায়েলকে আশ্বস্ত করা হয়।
১৮ ডিসেম্বর টুইটার ঘোষণা দেয় নিপীড়ন ও বিদ্বেষমূলক যোগাযোগ মোকাবিলায় নতুন নীতি গ্রহণের কথা। ওই সময় তা ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়।