X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

উত্তর কোরিয়ায় নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়াবে যুক্তরাষ্ট্রসহ ২০ দেশ

বিদেশ ডেস্ক
১৭ জানুয়ারি ২০১৮, ১৭:৩৮আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০১৮, ১৭:৪৮

 

 

উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্র পরিহারে বাধ্য করতে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপে একমত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ২০টি দেশ। কোরীয় যুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষে থাকা এসব দেশ কানাডার ভ্যানকউভারে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে। আর সমঝোতায় না আসলে ‍উত্তর কোরিয়ায় সামরিক অভিযানের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টেলারসন।  বৈঠকে দুই কোরিয়ার মধ্যে নতুন আলোচনাকে সমর্থন জানিয়ে তা উত্তেজনা কমাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। সমস্যাটি কূটনৈতিক উপায়ে সমাধান প্রয়োজন ও তা সম্ভবও বলে একমত হয়েছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী

২০১৭ সালে তৃতীয়বারের মতো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে। গত ১১ বছরে এই সংখ্যা ১০ বার। দেশটির অর্থনীতিতে এসব নিষেধাজ্ঞার বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তবে সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পারমাণবিক শক্তিতে ভীত হয়ে পড়েছে। তাই তারা আমাদের দেশের ওপর কঠিন নিষেধাজ্ঞা ও চাপ সৃষ্টির জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।

 

জাতিসংঘে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরও উত্তর কোরিয় নেতা কিম জং উন যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত করার মতো পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ না করার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ঘোষণায় কোরিয় উপদ্বীপে আবারও যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার আয়োজনে দিনব্যাপী বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার উপর  চাপ বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়। খবরে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার পরমাণু বা ক্ষেপণাস্ত্র এলাকায় আগেই সামরিক অভিযান চালানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী টেলারসন এমন ‘রক্তপাতের অভিযান’র প্রশ্ন বাতিল করে দিয়ে বলেছেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ বা প্রেসিডেন্টের কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি এমন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করব না।’ তবে উত্তর কোরিয়ার হুমকি দিন দিন বাড়ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

টেলারসন বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের খুব সংযমী ও বিচক্ষণ হওয়া প্রয়োজন। আমাদের বুঝতে হবে যে, হুমকি বাড়ছে। উত্তর কোরিয়া প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা ও সমঝোতার পথ বেছে না নিলে নিজেরাই অন্য বিকল্প তৈরি করে দেবে।’

টেলারসন বলেন, ‘আমাদের মতে উত্তর কোরিয়ার সঠিক পদক্ষেপ হবে সবচেয়ে ভাল বিকল্পটি বেছে নেওয়া। আর সংলাপই হলো সেরা বিকল্প। তারা সামরিক পরিস্থিতির দিকে তাকালে তার ভাল ফল বয়ে আনবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন আলোচনার সময়। কিন্ত্র তারা যে আলোচনা করতে চায়, এ কথাটি তাদেরই বলতে হবে।’

জাতিসংঘের ইতোমধ্যে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর করার বিষয়টি নিশ্চিত করতেই ভ্যানকউভার বৈঠকের আয়োজন করা হয়। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, তারা উত্তর কোরিয়ার উপর অসহযোগ নিষেধাজ্ঞা আরোপে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে সম্মত হয়েছে।  তাছাড়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব মানতে বাধ্য করার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতেও দেশগুলো সম্মত হয়েছে।     

টেলারসন বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টাকারী জাহাজগুলো থামাতে সব দেশকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘নতুন আক্রমণ  ঘটল ‘ উত্তর কোরিয়াকে অবশ্যই ‘নতুন পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।  তিনি বলেন, বৈঠকে চীন ও রাশিয়াকে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা অবশ্যই পুরোপুরিভাবে কার্যকর করানোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসার কারণে উত্তর কোরিয়ার আচরণে পুলকিত না হতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানান জাপানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কানো। তিনি বলেন,  ‘এখনই চাপ কমানোর বা উত্তর কোরিয়াকে পুরস্কৃত করার সময় আসেনি। বরং নিষেধাজ্ঞা যে কাজ করছে তারই প্রমাণ হিসেবে এই আলোচনাকে দেখা উচিত।’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে সোমবার রাতের খাবারে অংশ নিয়েছেন। সে সময় তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সমাধানকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তবে সামরিকও বিকল্পও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কূটনৈতিক সমাধানকে বেশি পছন্দ করছি এটা জনগণের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর একটি সুযোগ দিবে।’

বৈঠকে রাশিয়া ও চীনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর না করার অভিযোগ আনা হয়। সেখানে তাদের কঠোরভাবে সমালোচনা করা হয়।

জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী পরমাণু ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে উ. কোরিয়া। তবে দক্ষিণে থাড নামে পরিচিত উচ্চ প্রযুক্তির মিসাইল প্রতিরোধ ব্যবস্থা মোতায়েন নিয়ে ২০১৬ সালের বছরের জুলাইয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চুক্তি হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে দেশটি। দ. কোরিয়ায় উচ্চতর ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার ঘোষণার বিপরীতে ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা শুরু করে উ. কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার বিপরীতে একে তারা যোগ্য জবাব (ফিজিক্যাল রেসপন্স) বলে মনে করে। ব্যালাস্টিক মিসাইলের সর্বশেষ পরীক্ষাটি তারা চালিয়েছিল গত সেপ্টেম্বরে। ওই মাসেই তারা ষষ্ঠ পারমাণবিক পরীক্ষাও চালিয়েছে। এরপর  একাধিক আন্তঃমহাদেশীয় পারমাণবিক পরীক্ষাও চালিয়েছে তারা। মিসাইল ছুঁড়েছে জাপানের ওপর দিয়েও।

 

/আরএ/
সম্পর্কিত
নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত, যা জানা গেলো
বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রশংসা করলেন ডোনাল্ড লু
যুক্তরাষ্ট্রে ছুরিকাঘাতে ৪ জন নিহত
সর্বশেষ খবর
কুড়িয়ে পাওয়া সাড়ে চার লাখ টাকা ফিরিয়ে দিলেন ইজিবাইকচালক
কুড়িয়ে পাওয়া সাড়ে চার লাখ টাকা ফিরিয়ে দিলেন ইজিবাইকচালক
সরকার ক্ষমতায় থাকতে ভোটের ওপর নির্ভর করে না: সাকি
সরকার ক্ষমতায় থাকতে ভোটের ওপর নির্ভর করে না: সাকি
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং দ্বৈরথ
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং দ্বৈরথ
বিপজ্জনক অবস্থা থেকে ফিরেছেন খালেদা জিয়া: মির্জা ফখরুল
বিপজ্জনক অবস্থা থেকে ফিরেছেন খালেদা জিয়া: মির্জা ফখরুল
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
কারাগারে যেভাবে সেহরি-ইফতার করেন কয়েদিরা
কারাগারে যেভাবে সেহরি-ইফতার করেন কয়েদিরা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি