কাতারের সম্পদ দখলের উদ্দেশ্যেই সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) উপসাগরীয় সংকট তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন শেখ আবদুল্লাহ বিন আলী আল থানি। গত বছরের জুনে উপসাগরীয় চার দেশ কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর তিনি সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের বিভিন্ন টেলিভিশনে দোহার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। কাতার রাজপরিবারের এই সদস্য এখন বলছেন, তাকে ‘প্রচণ্ড চাপে’ রাখা হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা তার একটি অডিও রেকর্ড হাতে পাওয়ার দাবি করে এই খবর জানিয়েছে।
‘সন্ত্রাসবাদে মদদের’ অভিযোগে গত বছরের জুনে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে উপসাগরীয় চার দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর। সৌদি আরবের নেতৃত্বে তারা দেশটির ওপর স্থল, সমুদ্র আর আকাশ অবরোধ আরোপ করে। ওই উদ্যোগকে সমর্থন করে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে কাতারের বিরুদ্ধে কথা বলতেন দেশটির রাজপরিবারের সদস্য শেখ আবদুল্লাহ বিন আলী আল থানি। তিনি আগে থেকেই সৌদি আরবে বসবাস করে আসছিলেন। সে সময় কাতার সরকারের মূল বিরোধী নেতা হিসেবে তাকে চিত্রিত করা হতে থাকে। তবে এবার ভিন্ন কথা বলছেন তিনি।
আল জাজিরা জানিয়েছে, ১৫ জানুয়ারি রেকর্ড করা শেখ আবদুল্লাহর একটি অডিও বার্তা তারা হাতে পেয়েছেন। ওই বার্তায় বলতে শোনা যায় তাকে ‘প্রচণ্ড চাপে’ রাখা হয়েছে। আর এতে করে তিনি নিজের ‘জীবন শেষ করে’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। অডিও বার্তায় তিনি বলেন, মোহাম্মদ বিন জায়েদ (ইউএই-এর যুবরাজ) ও মোহাম্মদ বিন সালমানের (সৌদি যুবরাজ) লাভ আর অন্যায়ভাবে কাতারের সম্পদ দখলের চেষ্টার ভিত্তিতেই উপসাগরীয় সংকট তৈরি করা হয়েছে। শেখ আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার কাতারি অনুসারীদের নিজেদের অবস্থানে ঠিক থাকার আহ্বান জানাই। এদের সম্পর্কে সাবধান হোন। তারা আপনাদের দেশকে ধ্বংস করতে অর্থ দিয়ে ফাঁদে ফেলতে পারে’।
অডিও বার্তায় আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ওপর চাপ, কারাবাস ও বাড়ি ফিরে পরিবার বিশেষ করে দুই মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে না পারার কারণে নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে অন্য কারও ক্ষতি হবে না।’
এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি এক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন শেখ আবদুল্লাহ। সেখানে তিনি বলেন, আরব আমিরাতে ‘কারাগারে’ আটক আছেন তিনি। আর তার কিছু ঘটলে শেখ মোহাম্মদ দায়ী থাকবেন। আল জাজিরা বলছে, শেখ মোহাম্মদ বলতে তিনি কাতারের যুবরাজকে ইঙ্গিত করেছিলেন। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) কুয়েতের উদ্দেশ্যে রওনা দেন কাতার রাজপরিবারের সদস্য। পরে তাকে একটি হুইল চেয়ারে করে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এর একদিন আগে আবদুল্লাহর সহোদর শেখ খালিদ আল জাজিরাকে বলেছিলেন, আমিরাত কর্তৃপক্ষের অব্যাহত চাপের কারণে তার ভাইয়ের স্বাস্থ্য ভেঙে পড়েছে। তবে তার অবস্থা স্থিতিশীল আর শিগগিরই হাসপাতাল ছাড়তে পারবেন।