X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারে বেসামরিক হত্যায় ৬ সেনার বিরল কারাদণ্ড

বিদেশ ডেস্ক
২১ জানুয়ারি ২০১৮, ১৯:৪০আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০১৮, ১৯:৪২

রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞে অভিযুক্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ছয় সেনা সদস্যকে দশ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিন দিনমজুরকে হত্যায় এই বিরল রায় দিয়েছে দেশটির এক সামরিক ট্রাইব্যুনাল। শনিবার এই রায় দেওয়া হয় বলে কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ব্যাংকক পোস্ট। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলছে, মিয়ানমারে এ ধরনের ঘটনা বিরল।

মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের ফাইল ছবি

সংঘর্ষ কবলিত কাচিন প্রদেশে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এই তিন দিনমজুরকে হত্যা করা হয়েছিল। শুক্রবার ট্রাইব্যুনাল সেনাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয় সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ তদন্তে।

কাচিন প্রদেশের পুলিশ কর্মকর্তা মিন জিয়াউ জানান, শুনানির সময় ছয় সেনা সদস্য হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন।

এই প্রদেশে জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহীরা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে প্রায় সাত বছর ধরে। এ সংঘর্ষের জেরে প্রায় এক লাখ মানুষ পালিয়েছেন এবং অনেকেই শরণার্থী শিবিরে বাস করছেন।

গত বছরের মে মাসে পাঁচ ব্যক্তির সঙ্গে নিহত তিন বেসামরিক নাগরিককে আটক করেছিল সেনারা। নিহতরা তখন একটি গ্রাম থেকে শরণার্থী শিবিরে ফিরছিলেন। দুই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং তারা শিবিরে ফিরে আসেন। তিন দিন পর অপর তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ছয় সেনা সদস্যের বিচার বিরল ঘটনা এবং দেশটির সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে যে দায়মুক্তি পেয়ে আসছে সেটার সমাপ্তির প্রথম প্রদক্ষেপ। পুরো বিচার রুদ্ধদ্বার কক্ষে আয়োজিত হওয়ায় তা নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে সংস্থাগুলো।

ফর্টি রাইটস’র মিয়ানমারের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ডেভিড বাউল্ক বলেন, রুদ্ধদ্বার কক্ষে এ ধরনের বিচার আয়োজনে সেনাবাহিনীর অনেক কারণ রয়েছে। এর ফলে বড় আকারের ও পরিকল্পিত নিপীড়নের ঘটনা আড়াল করা যায় সহজে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। বিদ্রোহীদের দমনে সংঘটিত এসব নিপীড়নের ঘটনায় সেনাবাহিনী দায়মুক্তি পেয়ে আসছে। সম্প্রতি রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানে নৃশংসতা, হত্যা ও ধর্ষণযজ্ঞের মুখে সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালায় আরসা সদস্যরা। জবাবে ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলে অভিযান জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। স্থানীয় বৌদ্ধদের সহায়তায় সেখানে বহু বাসিন্দাকে হত্যা ও ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ত্রাণ সংস্থাগুলোর মতে, এই পর্যন্ত অভিযানের কারণে প্রতিবেশি বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক। জাতিসংঘ ওই অভিযানকে জাতিগত নিধনের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এতোদিন মিয়ানমার ও দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের নিপীড়নের কথা অস্বীকার করলেও কয়েকদিন আগে সেনাপ্রধান ১০ রোহিঙ্গাকে হত্যা চার সেনা সদস্যের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।

 

/এএ/
সম্পর্কিত
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৫ অভিবাসী নিহত
সর্বশেষ খবর
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা