লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন সাবেক আন্তর্জাতিক ফুটবল তারকা জর্জ উইয়াহ। এর মধ্য দিয়ে আফ্রিকার প্রথম নির্বাচিত নারী প্রেসিডেন্ট এলেন জনসন সারলিফের স্থলাভিষিক্ত হলেন উইয়াহ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
উইয়াহের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে গত ৭০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হলো। লাইবেরিয়ায় সর্বশেষ ১৯৪৪ সালে শান্তিপূর্ণভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়েছিল। সে সময় উইলিয়াম তুবমানের কাছ থেকে দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট এডউইন বারক্লায়।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) লাইবেরিয়ার রাজধানী মোনরোভিয়ার কাছে একটি স্টেডিয়ামে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ঘানা, নাইজেরিয়া, সাউথ আফ্রিকা, মালি, আইভোরি কোস্টের রাষ্ট্রপ্রধানসহ বেশ কয়েকজন আফ্রিকান ও বিদেশি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
১৯৬৬ সালের ১ অক্টোবর লাইবেরিয়ার রাজধানী মোনরোভিয়ার একটি বস্তিতে জন্ম নেন জর্জ উইয়াহ। এরপর ফুটবলার হিসেবে তারকা খ্যাতির মাধ্যমে দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে মুক্তি পান। একমাত্র আফ্রিকান খেলোয়াড় হিসেবে ব্যালন ডি’অর জয়ী জর্জ উইয়াহ রাজনীতির খাতায় নাম লিখিয়েছেন ১৫ বছর আগে। ২০০৫ সালে লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হয়ে হেরে যান তিনি। ছয় বছর পর ভাইস প্রেসিডেন্ট পদেও পরাজয় হয় তার। এরপর ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে নিজ এলাকার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। আর এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও জয় পেয়ে গেলেন তিনি। এমন জীবন কাহিনীর জন্য অনেক লাইবেরিয়ান ৫১ বছর বয়সী নেতাকে বীর হিসেবে অভিহিত করছেন।
নির্বাচনের আগে উইয়াহ দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করার মাধ্যমে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। লাইবেরিয়া আকরিক লোহা ও রাবার রফতানির ওপর নির্ভরশীল। তবে বর্তমানে দুটি পণ্যেরই দাম নিম্নমুখী। এছাড়া দেশটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া ইবোলা রোগ মোকাবিলার চেষ্টা করে যাচ্ছে। দেশটিতে ইবোলায় আক্রান্ত হয়ে চার হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। লাইবেরিয়া বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি। দেশটির ৮০ শতাংশ মানুষের দৈনিক আয় দেড় ডলারেরও কম।