কুর্দি বিদ্রোহীদের সংগঠন ওয়াইপিজিকে সহায়তা দেওয়ার খবরে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তুরস্ক। মঙ্গলবার তুরস্কের সংসদে দলীয় সাংসদদের উদ্দেশে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত তুরস্কের ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করবে। খুব শিগগির যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের সাথে তার একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া বাজেটে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে যুদ্ধরত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহের জন্য বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। সিরিয়ায় এই খাতে ব্যয়ের জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বরাদ্দ চেয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন। এছাড়া সীমান্ত সুরক্ষার জন্য আরও ২৫০ মিলিয়ন ডলারের বরাদ্দ চেয়েছে তারা। তবে এসব বরাদ্দের কত টাকা ওয়াইপিজিকে দেওয়া হবে তা নিশ্চিত না হলেও তুরস্কের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো প্রচার করছে, ৫৫০ মিলিয়ন ডলারই কুর্দিদের জন্য ব্যয় করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়াইপিজিকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তাদের সঙ্গে ঐক্য করা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে না বলে মঙ্গলবার মন্তব্য করেন এরদোয়ান। তিনি বলেন, ‘আমাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র যদি ওয়াইপিজিকে অর্থায়ন করে তাহলে আমাদেরকেও সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
গত মাসে সিরিয়ার আফরিনে ‘অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চ’ অভিযান চালিয়ে দক্ষিণ সীমানা থেকে কুর্দিদের বিতাড়িত করার চেষ্টা করে তুরস্ক। কুর্দিদের দখলে থাকা সিরিয়ার মানবিজ শহর দখল করারও হুমকি দিয়েছিল আঙ্কারা। এমনকি মানবিজে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের সেনা বাহিনীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, কুর্দিদের বিরুদ্ধে তুর্কিদের যুদ্ধের মাঝখানে তারা যেন না আসে।
তবে ওয়াশিংটন জানিয়ে দেয় মানবিজ থেকে সেনা প্রত্যাহারের কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। গত সপ্তাহেও দুই মার্কিন কমান্ডার মানবিজ পরিদর্শনে গিয়েও ওই পরিকল্পনার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। পরিদর্শনের সময় যুক্তরাষ্ট্রের লেফটেন্যান্ট জেনারেল পল ফাঙ্ক বলেন, ‘আঘাত করা হলে আমরা আগ্রাসী হবো।’
ওই মন্তব্যের সূত্র ধরে এরদোয়ান সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, এটা খুব পরিষ্কার যে যারা এমন কথা বলে তাদের ‘অটোমান থাপ্পড়’ খাওয়ার অভিজ্ঞতা নেই।
কুর্দিদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের আগে থেকেই অসন্তুষ্ট তুরস্ক। আঙ্কারার বিরুদ্ধে তিন দশক ধরে যুদ্ধ করা পিকেকে-কে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে তুরস্ক। তাদের ধারণা, সিরিয়ার ওয়াইপিজির সাথে তুরস্কের কুর্দিদের যোগাযোগ রয়েছে। অনেক আগেই ‘কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টিকে’ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে তুরস্ক। আর অন্যদিকে, ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে, কুর্দিদের সহায়তা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
