X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পকে মাথা ঠাণ্ডা রাখার আহ্বান জাপানের

বিদেশ ডেস্ক
১১ মার্চ ২০১৮, ০৯:৫১আপডেট : ১১ মার্চ ২০১৮, ০৯:৫৬

হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মাথা ঠাণ্ডা রাখার আহ্বান জানিয়েছে জাপান। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রী হিরোশিগে সেকো বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে আমরা ‘ঠাণ্ডা মাথার আচরণ’ করার আহ্বান জানাই। রবিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রে ইস্পাত আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ১০ শতাংশ কর আরোপের পরিকল্পনার কথা জানান ট্রাম্প। ওই টুইটের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ওই দুইটি খাতে উল্লিখিত মাত্রার শুল্ক আরোপের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ১৫ দিনের মধ্যে আদেশটি কার্যকর হবে। প্রতিবেশী কানাডা ও মেক্সিকোকে আপাতত এর বাইরে রাখা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতেই জাপানের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য এলো।

হিরোশিগে সেকো বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দূত রবার্ট লাইটহাইজারের কাছে জাপানের উদ্বেগের বিষয়টি জানানো হয়েছে। বাজারে এর নেতিবাচক বিষয়টি সম্পর্কে তাকে সতর্ক করা হয়েছে।

রবার্ট লাইটহাইজার যুক্তরাষ্ট্র-জাপান বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টি উত্থাপন করেছেন কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে হিরোশিগে সেকো বলেন, না। তিনি শুধু সময়সূচী ও প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেছেন।

বাড়তি ট্যারিফ প্রত্যাহারে জাপান কী ধরনের শর্তে রাজি হতে পারে-এ বিষয়ে কিছু জানাননি দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী। তবে তিনি জানান, জাপান সরকারের প্রতিক্রিয়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মাবলীর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।

হিরোশিগে সেকো বলেন, জাপানি ব্যবসাগুলোর ওপর ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাবের ওপর নজর রাখা হবে। এর ভিত্তিতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দূত রবার্ট লাইটহাইজারের সঙ্গে বৈঠকের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপানের কর্মকর্তারা এই আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন।

এর আগে ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের পাল্টা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের ন্যায়সঙ্গত পাল্টা জবাব দেবে চীন। তবে এ ধরনের একটি যুদ্ধে সব পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। ইতিহাস স্বাক্ষ্য দেয় যে, বাণিজ্য যুদ্ধ সমস্যা সমাধানের কোনও সঠিক পথ নয়। বিশেষ করে আজকের এই বিশ্বায়নের যুগে বাণিজ্য যুদ্ধ বেছে নেওয়া একটি ভুল পদক্ষেপ। এটা শুধু ক্ষতিই বয়ে আনবে।

ওয়াং ই বলেন, আধুনিকায়নের পথযাত্রায় চীনকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। তবে এজন্য যুক্তরাষ্ট্রকে স্থানচ্যুত করতে হবে না।

চীনা পার্লামেন্টের মুখপাত্র ঝাং ইয়েসুই বলেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনও বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য প্রতিবিধান ও তদন্ত ব্যুরোর প্রধান ওয়াং হেজুন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্ত বহুপাক্ষিক বাণিজ্য প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। স্বাভাবিক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ওপর এর প্রভাব পড়বে।

তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত যদি যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ চীনের স্বার্থের ওপর আঘাত হানে তাহলে নিজ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিলে উদ্যোগ নেবে বেইজিং।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, যদি সব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে তাহলে বিশ্ব বাণিজ্যের শৃঙ্খলায় নিঃসন্দেহে মারাত্মক প্রভাব পড়বে।

হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য যুদ্ধের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত, কৃষিসহ অন্যান্য পণ্যের ওপর কর বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জিন ক্লাউডি জানকার এর কঠোর জবাব দেওয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘কোনও অন্যায্য ব্যবস্থার কারণে আমাদের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমরাও চুপ করে বসে থাকবো না। এমন হলে হাজার হাজার ইউরোপিয়ানের চাকরি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। আমরা হার্লি-ডেভিসন, লেভিস-এর বোরবোন ও নীল জিনসের ওপর কর আরোপ করবো।’

ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লি মাইরে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ বাণিজ্য যুদ্ধে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বিষয়টি নিয়ে  ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্তিশালী, সহযোগিতামূলক ও সমন্বিত প্রতিক্রিয়া’র ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করছে কানাডা, মেক্সিকো, চীন ও ব্রাজিলও। কানাডা যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি ইস্পাত রফতানি করে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই কর আরোপকে ‘পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তারা কানাডার শিল্পকে রক্ষা করতে সমর্থ হবেন বলে তিনি আত্মবিশ্বাসী।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, ট্রাম্পের এই বিধিনিষেধ শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেই প্রভাব ফেলবে না, বরং এটি যুক্তরাষ্ট্রের নিজের অর্থনীতিরও ক্ষতি করবে।

/এমপি/
সম্পর্কিত
ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে: ম্যাক্রোঁ
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিমার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য রয়েছে
মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে জাতিসংঘের ভোটে রাশিয়ার ভেটো
সর্বশেষ খবর
রনির ব্যাটে প্রাইম ব্যাংককে হারালো মোহামেডান
রনির ব্যাটে প্রাইম ব্যাংককে হারালো মোহামেডান
কুড়িগ্রামে বৃষ্টির জন্য নামাজ, এপ্রিলে সম্ভাবনা নেই বললো আবহাওয়া বিভাগ
কুড়িগ্রামে বৃষ্টির জন্য নামাজ, এপ্রিলে সম্ভাবনা নেই বললো আবহাওয়া বিভাগ
‘উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে’
‘উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে’
২৬ বছরের বন্ধুত্বের স্মৃতিচারণ করলেন মামুনুল
২৬ বছরের বন্ধুত্বের স্মৃতিচারণ করলেন মামুনুল
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা