আরব আমিরাতের টাকা ভর্তি বিমান জব্দ করায় মঙ্গলবার সোমালিয়ার নিন্দা করেছে আরব আমিরাত। দেশটির সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে আশরাক আল আওসাত জানিয়েছে, জব্দ করা ওই বিমানটিতে কয়েক লাখ ডলার ছিল। বিমানের সঙ্গে সেগুলোও জব্দ করেছে সোমালিয়া। আফ্রিকা নিউজ সোমালিয়ার ভাষ্য উল্লেখ করেছে তাদের প্রতিবেদনে, বিমানে থাকা টাকা ভর্তি ব্যাগগুলো পরীক্ষা করতে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল আরব আমিরাত দূতাবাস কর্মকর্তারা।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সোমালিয়ার মোগাদিসু বিমানবন্দর থেকে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ৯৬ লাখ ডলার থাকা প্রাইভেট জেট প্লেনটি দখল করে নেয়। আরব আমিরাতের দাবি, ওই অর্থ সোমালিয়ার সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। বিমানটিতে থাকা কয়েকজনকে সোমালিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী বন্দুকের মুখে রেখেছিল এবং তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। আরব আমিরাত সোমালিয়ার ওই কাজের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ‘ সোমালিয়ার এম আচরণ কূটনৈতিক রীতিনীতি বিরুদ্ধ এবং তা দেশ দুটির মধ্যে ২০১৪ সালের নভেম্বরে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের খেলাপ।... সোমালিয়ার কঠিন সময়ে দেশটিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও স্থিতিশীলতা জোরদার করতে আরব আমিরাত তাদের সব ধরণের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং মানবিক সহায়তা দিয়েছে। অথচ এখন সোমালিয়া আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি ভেঙে এমন নিন্দনীয় কাজে জড়িয়েছে।’
বাহরাইনও আরব আমিরাতকে সমর্থন দিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী খালিদ আহমেদ আল খালিফা টুইটারে লিখেছেন, আরব আমিরাতের কাছ থেকে এতো সহায়তা পেয়েও সোমালিয়া যা করেছে তা অকৃতজ্ঞতা। তিনি সোমালিয়ার নিন্দা করে লিখেছেন, সোমালিয়ার পাইরেসি ও নিরাপত্তাহীনতার বিরুদ্ধে যে আরব আমিরাত তাদের সহায়তা করেছে, সেই আর আরব আমিরাতকে ‘দেশের শত্রু' আখ্যা দিয়ে তাদের কে অপমান করেছে সোমালিয়া। সোমালিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সোমালিয়াতে নিযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত থেকে শুরু করে দূতাবাসের কোনও কর্মকর্তাই টাকার ব্যাগগুলো নিয়ে সহযোগিতা করেননি। সেজন্য তারা সেগুলো জব্দ করেছে। সোমালিয়ার একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ভয়েস অফ আমেরিকার কাছে দাবি করেছেন, আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ব্যাগগুলোকে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করাতে এবং স্ক্যানিং করাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। যা সমস্যাটির সহজ সমাধান ছিল।
আফ্রিকা নিউজ লিখেছে, আরব আমিরাত ও সোমালিয়ার মধ্যে সম্পর্কের অবনতির পেছনে রয়েছে আরব আমিরাতের ও কাতারের সম্পর্কের অবনতি হওয়ার প্রেক্ষাপট। সোমালিয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাতার ও আরব আমিরাতের বিবাদের বিষয়ে তারা নিরপেক্ষ থাকবে। সোমালিয়া ও আরব আমিরাতের সম্পর্ক অনেক বড় ধাক্কা খেয়েছিল গত মাসে। তখন আরব আমিরাত, সোমালিয়া ও ইথিওপিয়ার মধ্যে বারবেরা বন্দর ব্যবস্থাপনা নিয়ে হওয়া চুক্তি ভেঙে দিয়েছিল সোমালিয়া। তাদের দাবি ছিল, ওই চুক্তি সোমালিয়ার অখণ্ডতার প্রতি হুমকি। সোমালিয়া আরব আমিরাতের দ্বারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেনাসদস্যদের বেতন দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১৪ সালের চুক্তি অনুযায়ী এতদিন তা আরব আমিরাতের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতো।