X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে চান বাংলাদেশি-আমেরিকান রাজনীতিক

ব্রজেশ উপাধ্যায়, যুক্তরাষ্ট্র
২০ এপ্রিল ২০১৮, ১২:৩১আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০১৮, ১৪:২৬
image

মার্কিন অঙ্গরাজ্য পেনিসেলভেনিয়ার লেফটেন্যান্ট গভর্নর পদের জন্য লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নারী নিনা আহমেদ । নির্বাচিত হলে পেনিসেলভেনিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে তিনি ট্রাম্পের অভিবাসননীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন দাঁড় করাতে চান। লিনা মনে করেন, অভিবাসন প্রশ্নে ট্রাম্পের নীতিগত অবস্থান বিদ্বেষমূলক হলেও যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ অভিবাসীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।   

নিনা আহমেদ

১৫ মে অনুষ্ঠিত হবে প্রাথমিক নির্বাচন। নির্বাচনে জয়লাভ করলে তিনিই সর্বপ্রথম বাংলাদেশি-আমেরিকান হিসেবে এত বড় পদে থাকবেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির অন্যান্য চার প্রার্থীর তুলনায় তাকে পিছিয়ে রাখা হলেও তার দাবি, অন্যান্য প্রার্থীর চেয়ে অনেক বেশি তহবিল সংগ্রহ করেছেন তিনি।

ঢাকার  রাজনীতি সচেতন পরিবারে জন্ম নেওয়া নিনা আহমেদ ২১ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।  সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি। গত বছরের শেষদিকে ফিলাডেলফিয়ার ডেপুটি মেয়র হিসেবেও দায়িত্বপালন করেন এই মোলকিউলার জীববিজ্ঞানী ও উদ্যোক্তা । আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে সম্প্রতি নিনা কথা বলেছেন বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে।  জানান তার পরিকল্পনা ও চিন্তার কথা।

প্রশ্ন: আপনি তো বিজ্ঞানী, রাজনীতিতে আসলেন কেন?

নিনা: বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয়, তখন আমার বয়স ১২ বছর। বিষয়টি আমার ওপর অনেক প্রভাব ফেলে। আমি দেখতাম মানুষ স্বাধীনতার জন্য রাস্তায় নামছেন, নিজেদের ‍উৎসর্গ করছেন। আমার মনে হয় তখনই আমি রাজনীতিকে ভালোবেসে ফেলি। এরপর আমি দেখি কীভাবে সেনা সদস্যরা নারী ও শিশুদের ধর্ষণ করে সমাজকে অস্থিতিশীল করে তোলে। আমার মা আমাকে ছেলে সাজিয়ে রাখে। সেখান থেকেই হয়তো নারীদের জন্য কিছু করার প্রেরণা পাই আমি।

ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে চান বাংলাদেশি-আমেরিকান রাজনীতিক

প্রশ্ন: আপনার নির্বাচনী ওয়েবসাইটে লেখা ‘ট্রাম্পের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত’। এর মাধ্যমে কি বোঝাতে চাইছেন আপনি?

নিনা: অভিবাসনের প্রথম প্রজন্মের একজন হওয়ায় আমি পেনিসেলভেনিয়ার প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। আমি সবাইকে বলতে চাই, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিদ্বেষ ছড়ালেও যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসীদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাবে। আমি সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে চাই। এটা শুধু টিভি বা টুইটারেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। কারণ, এতে যারা কষ্ট করে এই দেশ তৈরি করছে তাদের আত্মত্যাগ বোঝা যায় না। হাজার হাজার মানুষ এভাবে চিন্তা করে। আমি তাদের আওয়াজ সবার সামনে তুলে ধরতে চাই।

প্রশ্ন: তবে পেনিসেলভেনিয়ার অনেক মানুষ ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন। এখানে জয়লাভও করেছেন তিনি। তাদের উদ্দেশ্যে আপনি কি বলতে চান?

নিনা: আমি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বা তার সঙ্গে লড়াই করতে নামছি না। আমি চাই পেনিসেলভেনিয়ার যেসব ত্যাগী মানুষকে আমরা ভুলে গেছি তারা যেন আওয়াজ তুলতে পারেন। সবাই যেন স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও চাকরি পায়। প্রথমে আমার ডেমোক্রেটদের কাছে ভোট চাইবো। এরপর আরও পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগোবো। 

প্রশ্ন: বর্তমান পরিস্থিতিতে অভিবাসী ও মুসলিমদের প্রতি অবিশ্বাস ও বিদ্বেষ বাড়ছে। একজন বাংলাদেশি মুসলিম হিসেবে আপনার এই বার্তা পৌঁছানো কতটা কঠিন?

নিনা: একজন মানুষের অনেক পরিচয় থাকে। আমি একজন নারী, বিজ্ঞানী, একজন মা, একজন মানবাধিকার কর্মী, ফিলাডেলফিয়ার সাবেক ডেপুটি মেয়র, যা এশিয়ান-আমেরিকান হিসেবে প্রথম। এই সবকিছু নিয়েই আমি। অবশ্যই এমন অনেকে থাকবেন যারা আমাকে ভোট দেবেন না। তবে আমি নিশ্চিত করতে চাই, পেনিসেলভেনিয়ায় অনেক ভালো মানুষ আছেন, যারা আমার মতো চিন্তা করেন। আপনারা ভালো কিছু খুঁজে বের করবেন।

প্রশ্ন: এখানকার বাংলাদেশিদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন?

নিনা: তাদের কারণেই আমি এতকিছু করতে পারছি। সব সময়ই আমাকে সবকিছু দিয়ে সমর্থন জানিয়েছে তারা। বাংলাদেশিদের মধ্য থেকেই আমার তহবিল সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু পেনিসেলভেনিয়া নয়, পুরো যুক্তরাষ্ট্র থেকে তারা আমাকে সমর্থন করেছেন। যারা আমাকে চেনেও না তারাও আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।

ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে চান বাংলাদেশি-আমেরিকান রাজনীতিক

প্রশ্ন: সাম্প্রতিক আইনে অনেক বাংলাদেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নথিভুক্ত না থাকায় অনেককে চলে যেতে বলা হচ্ছে। এই বিষয়ে আপনার কোনও পরিকল্পনা আছে?

নিনা: আমি বিষয়গুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমি বিশ্বাস করি, অবৈধ ব্যক্তি বলে কিছু নেই। অনথিভুক্তি হলেও আপনি একজন মানুষ। আমি একজন বিজ্ঞানী এবং আমি জেনেটিক বৈচিত্র খুবই ভালো বুঝি। এই বৈচিত্রই মানব জাতিকে শক্তিশালী ও উদ্ভাবনী করে তুলেছে।

প্রশ্ন: আপনার সফলতার সম্ভাবনা নিয়ে কি মনে হয়?

নিনা: এখন পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। আমি সেরা তিন-এ আছি। এখন পর্যন্ত আমিই সবচেয়ে বড় তহবিল গড়ে তুলেছি। আমার চ্যালেঞ্জ, সবাই যেন আমাকে চিনতে পারেন। আমার বার্তা পৌঁছালে তারা অবশ্যই ভোট দেবেন।

 

/এমএইচ/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতায় উদযাপিত হলো ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’
২০২৪ সালের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির তালিকায় বাংলাদেশ ১৬তম
বিএনপির প্রবাসী নেতাদের গ্রেফতারের অপেক্ষায় অ্যাসাইলাম শিকারিরা
সর্বশেষ খবর
বায়ার্নের কোচ হওয়া থেকে এক ধাপ দূরে জিদান
বায়ার্নের কোচ হওয়া থেকে এক ধাপ দূরে জিদান
সিরীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ইসরায়েলের হামলা
সিরীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ইসরায়েলের হামলা
পিছিয়ে থেকেও ব্রাজিলিয়ান-গ্রানাডিয়ানের গোলে আবাহনীর দারুণ জয়
পিছিয়ে থেকেও ব্রাজিলিয়ান-গ্রানাডিয়ানের গোলে আবাহনীর দারুণ জয়
শিশু হাসপাতালে আগুন: পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
শিশু হাসপাতালে আগুন: পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!