নিজেদের ওয়েবসাইট থেকে ইসরায়েলের নৃশংসতার আলামত সম্বলিত ভিডিও সরিয়ে ফেলছে ইউটিউব। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদুলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে ইসরায়েল বিদ্বেষী হাজার হাজার পোস্ট আসার পর এমন সিদ্ধান্ত নেয় তারা। ইউটিউব কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক নীতি লঙ্ঘন করায় ভিডিওগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, ইসরায়েলি দমনপীড়ন আড়াল করতে দ্বৈতনীতির আশ্রয় নিয়েছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ।
ভূমি দিবসকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধে গুলি চালিয়ে অন্তত ২১ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। আহত হয়েছেন ১৫০০ ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি হুমকি অগ্রাহ্য করে ভূমি দিবস উপলক্ষ্যে টানা ছয় সপ্তাহের কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্বে গাজা সীমান্তে জড়ো হয়েছিল হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। ইসরায়লি সেনাবাহিনী তাদের ওপর গুলি ছুঁড়লে নিহত হন বেশ কয়েকজন। তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সম্প্রতি ইউটিউবে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি নৃশংসতার আলামত সম্বলিত একটি ভিডিও শেয়ার করেন ফিলিস্তিনি শিক্ষক ও মানবাধিকার কর্মী সানা কাশেম।
মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের খবরে আনাদুলু এজেন্সিকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, সানা কাশেমের শেয়ারকৃত সেই ভিডিওটি মুছে ফেলেছে ইউটিউব। বিখ্যাত মার্কিন অধ্যাপক নরম্যান ফিঙ্কেলস্টাইনও একই সেই ভিডিও ইউটিউবে শেয়ার করেন। ইউটিউব কর্তৃপক্ষ সেটিও সরিয়ে নেয়। নরম্যান এর কারণ জানতে চেয়ে ইউটিউবকে চিঠিও লেখেন। আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের হাতে প্রত্যেকটি শিশু হত্যার শিকার হওয়া পর্যন্ত তারা হয়তো অপেক্ষা করবে। তারপর হয়তো ভিডিওটি প্রকাশ করবে।’
Youtube reposts Gaza video, but classifies it pornographyhttps://t.co/XAWnrW2L63
— Norman Finkelstein (@normfinkelstein) April 25, 2018
এই সাক্ষাতকারের কিছুক্ষণ পর ইউটিউব থেকে জানানো হয়, তারা ভিডিওটি পুনঃপ্রকাশ করবে। এক পর্যায়ে ভিডিওটি পুনঃপ্রকাশ করলেও তাতে প্রবেশগম্যতার ক্ষেত্রে বয়সের বাধ্যবাধকতা যুক্ত করে ইউটিউব। সাধারণত যৌনতানির্ভর (অ্যাডাল্ট) কনটেন্টের ক্ষেত্রে এমন নীতি নেওয়া হয়ে থাকে। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় টুইটবার্তায় নরম্যান বলেন, ‘ইউটিউব সরিয়ে নেওয়া ভিডিওটি পুনঃপ্রকাশ করেছে, তবে পর্নোগ্রাফি হিসেবে!’
ইসরায়েলি ভিডিও প্রত্যাহারের কারণ হিসেবে ইউটিউব প্রাতিষ্ঠানিক নীতির কথা বললেও সমালোচকরা এর নেপথ্যে ইসরায়েলি নৃশংসতা আড়ালের প্রচেষ্টা দেখছেন। অস্ট্রেলীয় মানবাধিকরাকর্মী রবার্ট মার্টিন বলেন, ‘ইউটিউবে আমার সবগুলো ভিডিও ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে কারণ আমি ইসরায়েলের সমালোচনা করেছিলাম।’ মন্ডোইজ নিউজ ওয়েবসাইট বলছে, ‘দ্বিমুখী আচরণ: ইউটিউব ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ইয়াসির মুর্তজার হত্যাকাণ্ডর ভিডিও সরিয়ে ফেলেছে। কিন্তু ইসরায়েলিদের ওপর হামলা হওয়ার সব ভিডিও রেখে দিয়েছে।’