মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কিংবা সামরিক হামলার ভয়ে ভীত নয় ইরান—এ হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি) বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতির জন্যও প্রস্তুত রয়েছে তেহরান। পার্স টুডের খবরে আইআরজিসি সূত্রে এসব কথা জানানো হয়েছে।
ওয়াশিংটন সময় বিকেল ৪টায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এর আগেই এক টুইটার বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি মঙ্গলবার বিকালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা নিয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা দেবেন। ঘোষণার পরপরই আইআরজিসি’র সেকেন্ড ইন-কমান্ড ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হোসেইন সালামি গতকাল (মঙ্গলবার) বলেন, ইরাক যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর শত্রুরা ইরানের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রগুলোর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেছে। কিন্তু ইরান হচ্ছে এখন মধ্যপ্রাচ্যের পরাশক্তি এবং ইরানের জনগণ মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কিংবা সামরিক হামলার ভয় করে না।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হোসেইন সালামি বলেছেন, “বিভিন্ন সমীকরণে ইরান আজ ভালো অবস্থানে রয়েছে এবং আমাদের শত্রু আমেরিকা, ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং এ অঞ্চলের মার্কিন পুতুল সরকারগুলোর জানা উচিত, হুমকির মুখে ইরানের জনগণ সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতির জন্যও নিজেদের প্রস্তুত করেছে।”
পরমাণু চুক্তি থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরে আসার ঘোষণাকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়েছে তেহরান। প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ঘোষণা দিয়েছেন, চুক্তি বহাল রাখতে ওয়াশিংটনকে পাশ কাটিয়ে স্বাক্ষরকারী ইউরোপীয় ৫ দেশের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে তার দেশ। আলোচনায় সমঝোতা হলে চুক্তি বহাল থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। চুক্তি স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলোও মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের একা এই চুক্তি বাতিলের এখতিয়ার নেই।
২০১৫ সালে তেহরানের সঙ্গে পরমাণু ইস্যুতে ৬ জাতিগোষ্ঠী চুক্তি স্বাক্ষর করে। বুধবার পূর্বসূরি ওবামার আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে তা থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জয়েন্ট কমপ্রিহেন্সিভ প্লান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামের এই চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন তিনি। চুক্তি কার্যকর রাখতে প্রতি তিন মাস অন্তর মার্কিন প্রেসিডেন্টের সম্মতির দরকার এই চুক্তির। আগামী ১২ মে পরবর্তী তিন মাসের জন্য এই চুক্তিতে ট্রাম্প স্বাক্ষর না করলে সমঝোতা ভেস্তে যাবে।