ফিলিস্তিনিদের রক্তস্রোতের ওপর জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের পর এবার ভিন্ন রূপে দেখা গেলো ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রিডম্যানকে। সম্প্রতি তার হাতে জেরুজালেমের একটি ছবি তুলে দেয় ইসরায়েলি এনজিও আচিয়া। এতে দেখা যায়, সেখানে ইসলামের তৃতীয় পবিত্র মসজিদ আল আকসা এবং ডোম অব দ্য রক-এর অস্তিত্ব নেই। এর বদলে ছবিতে ঠাঁই পেয়েছে ইহুদি উপাসনালয় থার্ড টেম্পল। অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের সংবাদ সংস্থা কিকার হাশাপাতে এই ছবি প্রকাশের পর সমালোচনা তৈরি হলে নড়েচড়ে বসে মার্কিন দূতাবাস। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রিডম্যান এ ছবির ব্যাপারে অসতর্ক ছিলেন। তাকে প্রতারিত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি হতাশ। হারাম আল শরিফের বর্তমান অবস্থার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে।
তেল আবিবের কাছেই অবস্থিত একটি ইসরায়েলি শহরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রিডম্যানের সফরে তার হাতে ছবিটি তুলে দেন আচিয়ার এক কর্মকর্তা। এই এনজিওটি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করে থাকে। তবে সমালোচনার মুখে ওই ছবির জন্য ক্ষমা চেয়েছে আচিয়া। এনজিওটি বলছে, প্রকৃতপক্ষে ওই ঘটনা ছিল তাদের একজন কর্মীর সস্তা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড।
সমালোচকরা বলছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের হাতে আল আকসাবিহীন জেরুজালেমের ছবি তুলে দেওয়ার মাধ্যমে মসজিদটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ইহুদিবাদীদের পরিকল্পনার বিষয়টি সামনে এসেছে।
টুইটারে আলী আসকার নামের একজন লিখেছেন, ‘ট্রাম্পের আদেশ পেলে তারা পবিত্র হারাম আল শরিফও ধ্বংস করে দেবে।’
বর্তমানে ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রিডম্যান ট্রাম্পের প্রতিষ্ঠানের সাবেক আইনজীবী। তিনি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপনকে সমর্থন করেন। ইসরায়েলের পক্ষে তার বহু বক্তব্য-বিবৃতি রয়েছে।
What's missing in this photo of Jerusalem that US Ambassador to Israel David Friedman is looking at? The Dome of the Rock & Al-Aqsa Mosque. Removing the Islamic holy sites is a long-term goal of far-right Israeli Jewish extremists who want to erase Palestinians from Jerusalem. pic.twitter.com/Y0AnKbAm2B
— The IMEU (@theIMEU) May 22, 2018
২০১৮ সালের ১৪ মে এই জেরুজালেম শহরে ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধন করে ট্রাম্প প্রশাসন। এদিন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলে পড়ে দখলদার বাহিনী। আট মাসের শিশুসহ ৬২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। হোয়াইট হাউসের দুই গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা ট্রাম্পের জামাতা ইহুদি ধর্মাবলম্বী জ্যারেড কুশনার ও মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প যখন সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে মার্কিন দূতাবাস স্থাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ করছিলেন, ফিলিস্তিনিরা তখন হতাহতদের নিয়ে ব্যস্ত। ইসরায়েলের ওই বর্বর হত্যাযজ্ঞ দুনিয়াজুড়ে সমালোচনার তৈরি হয়। ওআইসি’র জরুরি বৈঠক আহ্বান করে তুরস্ক। তবে ট্রাম্প সমর্থক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই হত্যযজ্ঞের খবর প্রকাশ করায় যুক্তরাষ্ট্রের উদারপন্থী সংবাদমাধ্যমগুলোর সমালোচনা করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের চমৎকার অনুষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে তারা হামাসের পক্ষ নিয়েছে। সূত্র: আল জাজিরা।