মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে তার নির্ধারিত বৈঠক বাতিলের ঘোষণা দেওয়ায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। বৃহস্পতিবার (২৪ মে) এক জরুরি বৈঠকে মুন শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বলেছেন, তিনি ‘খুব হতভম্ব’ হয়েছেন এবং ‘১২ জুন উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক না হওয়াকে হতাশাজনক ব্যাপার’ বলে মনে করছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা খবরটি জানিয়েছে।
পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আগামী ১২ জুন সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে বৃহস্পতিবার (২৪ মে) উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিলের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিমের কাছে লেখা হোয়াইট হাউসের এক চিঠিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। চিঠিতে কিমকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনার সঙ্গে বৈঠকের জন্য আমি খুবই উন্মুখ ছিলাম। দুঃখজনকভাবে, ভয়ানক ক্ষোভ এবং প্রকাশ্য শত্রুতার উপর ভিত্তি করে দেওয়া আপনার অতি সাম্প্রতিক বিবৃতির প্রেক্ষিতে আমি মনে করি এটা বৈঠকের যথার্থ সময় নয়।’ ট্রাম্প জানান, কোনও এক সময় তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার নেতার মধ্যে বৈঠকের পথ প্রশস্ত হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের হাত ধরে। গত ২৭ এপ্রিল আন্তঃকোরীয় আলোচনায় দুই দেশের নেতা পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপারে সম্মত হওয়ার পর ট্রাম্প ও কিমের বৈঠকের তারিখটি নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু ওই বৈঠক বাতিল হয়ে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন মুন জায়ে ইন।
ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে আরও বেশি করে সরাসরি ও নিবিড় আলোচনার উপর জোর দিয়েছেন মুন। তিনি বলেন, বৈঠক বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কোরীয় উপদ্বীপের দেরি করা ঠিক হবে না।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল এক ঐতিহাসিক বৈঠকে কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত রাখতে সম্মত হন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসেডন্ট মুন জায়ে ইন। পরদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান,তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি। এরপর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইয়োন ইয়াং চ্যান জানান,মে মাসে পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্র বন্ধ করে দেবে উত্তর কোরিয়া। পুঙ্গেইরি পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার সাক্ষী রাখার জন্য বেশ কয়েকটি দেশ থেকে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানায় পিয়ংইয়ং। ২৪ মে সাংবাদিকদের সামনে পরমাণু কেন্দ্রটি ধ্বংসের দাবি করে উত্তর কোরিয়া। কিন্তু এদিনই ১২ জুনের বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে কিমকে চিঠি দেন ট্রাম্প।