বাণিজ্য স্বার্থের বিষয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে পিঠে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ল্যারি কুডলো। আর বাণিজ্য উপদেষ্টা নাভারো বলেছেন, তার স্থান হওয়া উচিত দোজখের বিশেষ স্থানে! যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান লিখেছে, ‘নর্থ আটলান্টিক ট্রেড এগ্রিমেন্ট’ (নাফটা) চুক্তি নিয়ে কানাডার সমর্থন লাভে ব্যর্থ যুক্তরাষ্ট্র জি-৭ সম্মেলনের যৌথ ইশতেহার থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু কানাডার সমর্থন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ কুডলো ট্রুডোর বিরুদ্ধে, ‘কানাডার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সুবিধা পেতে আনাড়ি মতো রাজনৈতিক স্টান্টবাজি’ করার অভিযোগ এনেছেন। শনিবার সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ল্যারি কুডলো আরও বলেছেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ‘বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন’ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ‘দ্বিমুখী আচরণ’ করেছেন।
গত শনিবার ট্রুডো সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছিলেন। তার ভাষ্য ছিল, নাফটায় যুক্তরাষ্ট্র যে ‘সানসেট ক্লজ’ দাবি করছে তা মনে নেওয়া সম্ভব নয়। ‘সানসেট ক্লজে’ চুক্তি রহিত হয়ে যাওয়ার বা পুনর্বিবেচনার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া থাকে। ট্রাম্প চেয়েছিলেন, ওই ধারাটি বলবৎ করতে। তাছাড়া ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা শুল্কের জাবাবে পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়েও কানাডার দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়েছিলেন ট্রুডো। গার্ডিয়ান লিখছে, ট্রুডোর এইসব কথাবার্তায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ট্রাম্প। তিনি এক টুইটার বার্তায় ট্রুডোকে ‘অসৎ ও দুর্বল’ আখ্যা দিয়েছেন। সেখানেই তিনি জানিয়েছিলেন জি-৭ সম্মেলনের যৌথ ইশতেহার থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেবে যুক্তরাষ্ট্র।
জি-৭ সম্মেলনের যৌথ ইস্তাহারে, বিশ্বের শক্তিশালী ওই ৭টি দেশ ‘উন্মুক্ত, স্বচ্ছ এবং পারস্পারিক কল্যাণের জন্য বাণিজ্য’ করার প্রত্যয় ঘোষণা করা হয়েছিল। একই সঙ্গে তারা সংরক্ষণবাদের বিরুদ্ধেও কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কুডলো বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্মেলনের আগ মুহূর্তে ট্রাম্পের এমন কিছু করা উচিত হতো না যা যুক্তরাষ্ট্রকে দুর্বল হিসেবে প্রতীয়মান করে। আর ট্রাম্পও সেরকম কিছু করেননি।
অপরদিকে শনিবার ফক্স নিউজে ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো সমালোচনা করে বলেছেন, ‘দোজখের বিশেষ স্থানে জায়গা হওয়া উচিত ট্রুডোর।’ তার ভাষ্য, যেসব বিদেশি নেতারা ট্রাম্পের সঙ্গে অবিশ্বস্ততার সঙ্গে কূটনৈতিক সমঝোতা করে ও বের হওয়ার সময় পেছন দিক থেকে ছুরিকাঘাত করে তাদের জায়গা হবে দোজখের বিশেষ স্থানে। আর জাস্টিন ট্রুডো তেমন কাজই করেছেন।