X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

পরিবার বিচ্ছিন্ন শিশুদের পাশে মেলানিয়া

বিদেশ ডেস্ক
২২ জুন ২০১৮, ১৪:১৭আপডেট : ২২ জুন ২০১৮, ১৪:৩৪
image

অবৈধ অভিবাসী পরিবারগুলো থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন করার কঠোর নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প পরিবার বিচ্ছিন্ন শিশুদের সঙ্গে দেখা করেছেন। বৃহস্পতিবার (২১ জুন) মেক্সিকো সীমান্তের কাছে একটি ফ্যাসিলিটি সেন্টার পরিদর্শন করেন তিনি। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এ শিশুদেরকে কিভাবে দ্রুত পরিবারের সঙ্গে একত্রিত করা যাবে, তা নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রের কর্মীদের কাছ থেকে পরামর্শও চেয়েছেন মেলানিয়া। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।

মেলানিয়া
ট্রাম্প প্রশাসনের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র আওতায় অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া আটক অভিযান ও মামলার জেরে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে দুই হাজারেরও বেশি শিশু। শিশুরা আইনের চোখে অপরাধী না হওয়ায় তাদেরকে আটক মা-বাবার কাছ থেকে  করা হয়। মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তারা বলেছেন, ৫ মে থেকে ৯ জুন পর্যন্ত ২ হাজার ২০৬ জন বাবা-মার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে ২ হাজার ৩৪২ জন শিশুকে। তুমুল সমালোচনা ও চাপের মুখে বিচ্ছিন্নকরণ ঠেকাতে ‘পরিবারকে একত্রিত রাখা’র এক নির্বাহী আদেশ জারি করেন ট্রাম্প। তবে সেই আদেশেও ইতোমধ্যে বিচ্ছিন্ন হওয়া এই দুই সহস্রাধিক শিশুর ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।  

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসন প্রত্যাশী পরিবারগুলো থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্নকরণ বন্ধ করতে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার একদিন পরই আগে থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া শিশুদের দেখতে যান মেলানিয়া। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বৃহস্পতিবার (২১ জুন) অ্যান্ড্রুস বিমানঘাঁটি থেকে ম্যাকালেনে বর্ডার ফ্যাসিলিটিতে যান তিনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাকালেনে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৫০ জনেরও বেশি শিশুকে রাখা হয়েছে। সাধারণত প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে নিয়ে পরিবার থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন করা হলেও সীমান্তেই বিচ্ছিন্ন হতে হয়েছে এমন ছয় শিশুও ওই আশ্রয়কেন্দ্রে আছে।



আশ্রয়কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছেন মেলানিয়া
বৃহস্পতিবার আপব্রিং নিউ হোপ চিলড্রেন’স সেন্টার নামে ওই আশ্রয়কেন্দ্রে হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসের সেক্রেটারি অ্যালেক্স আজার ও সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে ওই শিশুদের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন মেলানিয়া। সেসময় মার্কিন ফার্স্ট লেডি বলেন, ‘এখানে এসে আনন্দিত বোধ করছি এবং শিশুদের দেখা ও তাদের সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায় আছি।তবে সবার আগে আপনাদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে নিই। আপনারা যে কাজ করেন, প্রতিদিন যে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং এ শিশুদের জন্য আপনারা যা করছেন তার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানাই। কিভাবে এ শিশুদেরকে দ্রুত সম্ভব তাদের পরিবারের সঙ্গে একত্রিত করা যাবে তা নিয়ে আপনাদের পরামর্শ চাই।’ মেলানিয়া একটি স্কুল কক্ষ পরিদর্শন করেন এবং প্রায় ২০ জন শিশুর সঙ্গে গল্প করেন। একটি শ্রেণিকক্ষে শিশুদেরকে ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস নিয়ে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছিলো। দেয়ালে ছিল হাতে আঁকা একটি আমেরিকান পতাকা। শিশুরা সেখানে স্বাক্ষর করেছে। মেলানিয়াও সেখানে স্বাক্ষর করেন।

ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষিত ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র আওতায় আটক অবৈধ অভিবাসীদের মামলা নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া চলমান অবস্থায় তাদের শিশু সন্তানদেরকে বিচ্ছিন্ন করে সরকারের ডিটেনশন ফ্যাসালিটিজ ও ফস্টার কেয়ারে রাখা হচ্ছিলো। সম্প্রতি এভাবে শিশুদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার নীতির বিরোধিতা করেন মার্কিন ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। মেলানিয়ার মুখপাত্র সিএনএন-কে জানান, ‘পরিবারের কাছ থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন করার দৃশ্যকে মেলানিয়া ঘৃণার চোখে দেখেন। তিনি আশা করেন,কংগ্রেসে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দুই পক্ষ শেষ পর্যন্ত অভিবাসন আইন সংস্কারের প্রশ্নে একমত হতে পারবে।’

শিশুদের জন্য তৈরি করা একটি শ্রেণিকক্ষ পরিদর্শন করেন মেলানিয়া
অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের রুখতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে সমালোচনার জবাবে শুরু থেকেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলে আসছেন,তিনি নতুন কোনও অভিবাসন নীতি গ্রহণ করেননি। বিগত ডেমোক্র্যাট প্রশাসনের নেওয়া নীতি মেনেই মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি। অবশ্য অবৈধ অভিবাসীদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নকরণের ঘটনা পূর্ববর্তী মার্কিন প্রশাসনগুলোতেও দেখা গেছে। তবে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন,সে সংখ্যাটা অনেক কম ছিল। বিগত মার্কিন প্রশসনগুলোর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, যেসব লোক অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতো এবং অপরাধের কোনও রেকর্ড ছিল না তাদের আইনের আওতায় অপরাধী সাব্যস্ত না করে শুধুই অস্থায়ীভাবে আটক করা হতো কিংবা বিতাড়িত করার সুপারিশ করা হতো। মা ও শিশুরা সাধারণত একসঙ্গেই থাকতো। তবে ট্রাম্প প্রশাসন সব ধরনের অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীর বিরুদ্ধে আইনগত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করার প্রায় ২৩০০ শিশু পরিবারবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অতীতে এমন নজির দেখা যায়নি। মেলানিয়ার পক্ষে তার মুখপাত্র সিএনএনকে জানান, বর্তমান মার্কিন ফার্স্টলেডি মনে করেন যাবতীয় আইন অনুসরণের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের শাসন পরিচালিত হওয়া উচিত হৃদয়গত বোধ দিয়ে।

বুধবার (২০ জুন) নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করতে গিয়ে ট্রাম্প দাবি করেন,‘পরিবারকে এক রাখতে চাই আমরা। আলাদা রাখার দৃশ্য আমার ভালো লাগেনি।’ ট্রাম্প বলেন,তার স্ত্রী মেলানিয়া ও মেয়ে ইভাঙ্কা তার ওপর এই নীতি থেকে সরে আসার জন্য চাপ দিচ্ছিল। তিনি বলেন,‘আমার মনে হয় হৃদয়সম্পন্ন যেকোনও মানুষ বিষয়টি অনুভব করবে।’ 

/এফইউ/
সম্পর্কিত
মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে জাতিসংঘের ভোটে রাশিয়ার ভেটো
বাংলাদেশকে ‘সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ দেশ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার
সর্বশেষ খবর
‘আশ্রয়ণ’: গ্রামীণ বসতি রূপান্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়
‘আশ্রয়ণ’: গ্রামীণ বসতি রূপান্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়
ছক্কা মেরেও আউট হলেন মুশফিক !
ছক্কা মেরেও আউট হলেন মুশফিক !
ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে মানববন্ধন
ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে মানববন্ধন
অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করতে হবে
রামরুর কর্মশালায় বক্তারাঅভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করতে হবে
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা