ফ্রান্সে একজন কারাবন্দী হেলিকপ্টারে করে জেল থেকে পালিয়েছে। ওই কয়েদি দীর্ঘদিন ধরে অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িত। সর্বশেষ একটি ব্যর্থ ডাকাতির ঘটনায় তাকে কারাবন্দী করা হয়। ওই ডাকাতি প্রচেষ্টার সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছিলেন। বার্তাসংস্থা রয়টার্স লিখেছে, শনিবার তার সহযোগীরা রীতিমতো কারাগারের ভেতরে হেলিকপ্টার অবতরণ করায় এবং সেখান থেকে তাকে বাইরে বাইরে নিয়ে যায়। রেদোইন ফাইদ নামের ওই দাগি অপরাধী ২০১৩ সালেও একবার জেল থেকে পালিয়েছিল। পুলিশ সন্দেহ করছে, হেলিকপ্টারটির পাইলটকে তারা জিম্মি করে ওই কাজে বাধ্য করেছিল। হেলিকপ্টারটি পরবর্তীতে বিধ্বস্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
৪৬ বছর বয়সী ফাইদ ২০১৩ সালে যখন জেল থেকে পালিয়েছিল তখন সে ৪ জন কারারক্ষীকে মানববর্ম বানিয়েছিল। কয়েকটি দরজা বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে সে জেল থেকে বের হওয়ার পথ তৈরি করে। তারপর কারাগারের সামনে অপেক্ষমাণ থাকা গাড়িতে করে সেখান থেকে চলে গিয়েছিল। অন্যান্য অপরাধে প্রায় এক দশক জেলে থাকার পর ২০০৯ সালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তখন সে তার অপরাধ জীবনের ওপরে একটি বইও লিখেছিল। তার বক্তব্য, আল পাচিনো পরিচালিত স্কারফেসের মতো অপরাধ জগতের ওপর নির্মিত চলচিত্র তাকে অনুপ্রাণিত করেছে।
এবার পালাবার সময় তার কয়েকজন সহযোগী প্রথমে কারাগারের জেলে গিয়ে ফাইদের মুক্তি দাবি করতে থাকে। এতে কারারক্ষীদের মনোযোগ চলে যায় তাদের দিকে। ফাইদকে এ সময় দর্শণার্থীদের কক্ষে এনে রাখা হয়েছিল। সহযোগীদের ওপর দলটি কারাগারের ভেতরে হেলিকপ্টারটি অবতরণ করায় এবং ফাইদকে নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে ও তার সহযোগীদের খুঁজে বের করতে সব ধরণের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ফাইদের অপরাধ জীবন ও শাস্তির বিষয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ফাইদ প্যারিসের অপরাধপ্রবণ এলাকায় বেড়ে উঠেছে এবং সেই এলাকাগত প্রভাবেই অপরাধ দুনিয়ায় পা রেখেছে। ১৯৯০ সালেই ফাইদ ডাকাত দল পরিচালনা করত। ডাকাতির মামলায় ২০০১ সালে রেদোইন ফাইদকে ৩০ বছরের জেল দেওয়া হয়েছিল। ফরাসি পুলিশ মনে করে, ২০১০ সালে যে ডাকাতি চেষ্টার ঘটনায় একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা মারা গিয়েছিলেন তার মূল পরিকল্পনাকারী ফাইদ। ২০১৩ সালে জেল থেকে পালানোর মামলায় তাকে গত বছর ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর গত এপ্রিলে সাজা ঘোষিত হয়েছে ২০১০ সালের ডাকাতি চেষ্টা মামলার।