আন্দ্রেজ ম্যানুয়েল লোপেজ ওবরাদোর যে মেক্সিকোর পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন তা প্রায় নিশ্চিত। দেশটির নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সূত্রে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, তিনি প্রায় ৫৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোট নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর দ্বিগুণ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীরা হার স্বীকার করে নিয়ে শুভকামনা জানিয়েছেন। ওবরাদোর বামপন্থী হিসেবে পরিচিত। এটি ছিল তার তৃতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়া। ২০০০ সালে তিনি মেক্সিকো সিটির মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন।
রবিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে চলা নির্বাচনি প্রচারণায় মেক্সিকোতে বহু সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এতে ১৩০ জন রাজনৈতিক নেতা ও দলীয় কর্মী প্রাণ হারান। এই নির্বাচনে সমর্থকদের কাছে আমলো নামে পরিচিত ওবরাদোরর প্রধান প্রতিপক্ষ ছিলেন ক্ষমতাসীন ‘ইনস্টিটিউশনাল রেভ্যুলেশনারি পার্টি’ (পিআরআই) ও ‘ন্যাশনাল অ্যাকশন পার্টির’ (প্যান) প্রার্থীরা। ক্ষমতাসীন পিআরআইয়ের প্রার্থী জোসে অ্যান্তোনিও মিয়াদে ভোটের হিসেবে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। ওবরাদোরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি তার জন্য সফলতা কামনা করেছেন। আর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা প্যানের প্রার্থী রিকার্ডো নাইয়া বলেছেন, ‘আমি তার বিজয় স্বীকার করে নিচ্ছি। আমি তাকে অভিনন্দন জানাই এবং সমৃদ্ধ মেক্সিকোর জন্য তার সফলতা কামনা করি।’
নির্বাচনে বিপুল পরিমাণ ভোট পাওয়া ওবরাদোর তার নির্বাচন পরবর্তী প্রথম প্রকাশ্য ভাষণে জানিয়েছেন, দুর্নীতির মূলোৎপাটন ও দায়মুক্তির সংস্কৃতির অবসান ঘটানো তার প্রধান লক্ষ্য। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার’ সম্পর্ক স্থাপন করতে চান।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বামপন্থী ওবরাদোর বিজয় প্রসঙ্গে বিবিসি লিখেছে, ক্ষমতাসীন পিআরআই সমর্থিত প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতোর শাসনে মেক্সিকোর জনগণ অখুশি ছিল। দেশটিতে একদিকে যেমন দেখা দিয়েছিল অর্থনৈতিক মন্দা, অন্যদিকে তেমন ছিল দুর্নীতির প্রাদুর্ভাব। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার প্রতিশ্রুতিটিকে নির্বাচনি প্রচারণার কেন্দ্রে রেখেছিলেন ওবরাদোর। তিনি বেতন ও পেনশন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার সমালোচকরা বলেছিল, তিনি জনপ্রিয়তার জোয়ারে ভাসলেও দেশের অর্থনীতি তার হাতে ছেড়ে দেওয়া যায় না।
আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষিত না হলেও লোপেজ ওবরাদোরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ট্রাম্প। ওবরাদোর এমনিতে ট্রাম্পের সমালোচক। তিনি বলেছেন, যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে তিনি ট্রাম্পকে বোঝাবার চেষ্টা করবেন।