জার্মানিতে একজন ইরানি কূটনীতিক গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানাতে ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত এবং জার্মানির চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সকে (রাষ্ট্রদূতের অনুপস্থিতির কারণে) তলব করেছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার এখবর জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে।
খবরে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে ইউরোপীয় কূটনীতিকদের সঙ্গে আলাপ করে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি। তিনি জার্মানিতে ইরানি কূটনীতিক আটকের ঘটনায় তেহরানের প্রতিবাদের কথা জানান।
আরাকচি বলেন, ভিয়েনা কনভেনশনের আওতায় কূটনীতিকরা যে দায়মুক্তি ভোগ করেন তার ভিত্তিতে অবিলম্বে ওই ইরানি কূটনীতিককে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি যখন ইউরোপ সফর করছিলেন তখন এ সফরের অর্জনকে ম্লান করে দিতে বোমা হামলার কথিত পরিকল্পনায় ইরানি কূটনীতিকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে খুশি করতে এ কাজ করা হয়েছে বলে ইরান মনে করে।
উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ইরান বিশ্বের যেকোনো স্থানে যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলার বিরোধী এবং এ নীতিতে কোনও পরিবর্তন আসেনি। তিনি বলেন, প্যারিসে মোনাফেকিন গোষ্ঠীর (নির্বাসিত ইরানের বিরোধীদের জোট) জমায়েতে বোমা হামলার পরিকল্পনার দায়ে বেলজিয়ামে যে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে তারা এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীরই সদস্য। কাজেই গোটা ঘটনাটি যে পূর্ব পরিকল্পিত তা সহজেই অনুমেয়।
সাক্ষাতে তিন ইউরোপীয় কূটনীতিক ইরানের এ প্রতিবাদের কথা নিজ নিজ দেশকে জানানোর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
ফ্রান্সে নির্বাসিত ইরানের বিরোধীদের একটি বৈঠকে বোমা হামলার পরিকল্পনার সন্দেহে জার্মানিতে এক ইরানি কূটনীতিককে গ্রেফতার করার কথা জানায় বেলজিয়াম। একই ঘটনায় বেলজিয়ামে দুই ব্যক্তি এবং ফ্রান্সেও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
ইরানের নির্বাসিত বিরোধীদের জোট প্যারিসভিত্তিক ন্যাশনাল কাউন্সিল অব রেসিস্ট্যান্স অব ইরান (এনসিআরআই)। ইরানের সরকার উৎখাতে এই জোটটি কাজ করে যাচ্ছে। শনিবার কোনোরকম বাধা ছাড়াই প্যারিসের ভিলেপিনেতে তাদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বেশ কয়েকজন সাবেক ইউরোপীয় ও আরব মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি গিলিয়ানিও বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।
এনসিআরআই-এর মূল সংগঠন পিপল’স মুজাহিদিন অর্গানাইজেশন অব ইরান। মুজাহিদিন-এ-খালক নামেই সংগঠনটি বেশি পরিচিত। এই সংগঠনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০০৯ ও যুক্তরাষ্ট্র ২০১২ সাল পর্যন্ত সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকায় রেখেছিল।