যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, আলোচনার বদলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিতে। সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে থেরেসা মে জানিয়েছেন, ট্রাম্পের ওই পরামর্শ তিনি মেনে নেবেন না। বরং তিনি আলোচনার মাধ্যমেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের বিষয়ে সব কিছু চূড়ান্ত করতে চান। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হলেও ঠিক কি কি শর্তে যুক্তরাজ্য ইইউ ত্যাগ করবে তা নিয়ে যুক্তরাজ্যের সরকারে দেখা দিয়েছে মতবিরোধ।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া নিশ্চিতের দায়িত্ব পালনকারী মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন। তিনি পদত্যাগের পর মন্তব্য করেছেন, থেরেসা মে যেভাবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছেন তাতে ইইউ আরও বেশি বেশি আবদার করার সুযোগ পাবে। মে খুব সহজেই ইইউকে অনেক বেশি ছাড় দিয়ে দিচ্ছেন। ২০১৬ সালে গণভোটের মাধ্যমে ইইউ ত্যাগের সিদ্ধান্তের পক্ষে জোরালো ভূমিকা রাখা ডেভিড ডেভিসের পদত্যাগের পরে পদত্যাগ করেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনিও ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে থেরেসা মের পরিকল্পনার সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করেন। তিনি মন্তব্য করেছেন, থেরেসা মে সরকারের ব্রেক্সিট পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে আদতে ব্রেক্সিট স্বপ্নের মৃত্যু হতে যাচ্ছে। ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি উপনিবেশ হয়ে উঠবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেও ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের থেরেসা মের পরিকল্পনার বিষয়ে খুব একটা প্রশংসাসূচক কিছু বলেননি। ট্রাম্পের ভাষ্য, ‘মে ও তার মন্ত্রিসভার প্রস্তাবে মনে হচ্ছে, আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেই বাণিজ্য করতে যাচ্ছি। তাই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাতিল হয়ে যেতে পারে। কীভাবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করা যায়,তা নিয়ে আমি থেরেসাকে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি আমার কথা শোনেননি। আমার কথায় তিনি রাজি হননি। এখন তিনিই বুঝবেন, কী করতে হবে। আমি কিন্তু রাস্তা দেখিয়েছিলাম।’
ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের প্রসঙ্গে বিবিসির অ্যান্ড্রু মার থেরেসা মের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। জবাবে মে জানিয়েছেন, ট্রাম্প তাকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টার ইইউয়ের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে তিনি সে পরামর্শ গ্রহণ করেননি। ট্রাম্পের ওই পরামর্শ গ্রহণ না করলে তিনি ঠিক কি প্রক্রিয়ায় ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করবেন তা জানতে চাইলে মে বলেছেন, ট্রাম্পের দেওয়া অন্য একটি পরামর্শ তিনি অনুসরণ করবেন। সংবাদ সম্মেলনে সবার সামনে ট্রাম্প একথাও বলেছিলেন, মে যেন হাল ছেড়ে না দেন। মে ট্রাম্পের সে পরামর্শের অনুসরণ করবেন; ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে তিনি হাল ছাড়বেন না। আলোচনার মাধ্যমেই ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে তিনি যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে ভালো অবস্থা নিশ্চিতের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।