মাসব্যাপী আয়োজিত বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর ফিফা বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দিন আজ। ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’-এর চূড়ান্ত বিজয়ী কে হয়, তা দেখার অপেক্ষায় বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, পর্তুগাল, স্পেন, ইংল্যান্ড এরইমধ্যে বিদায় নিয়েছে আসর থেকে। আর চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালি প্রথমবারের মতো বাছাই পর্বে বাদ পড়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে থাকা তাদের অনেক সমর্থকের মনেই ব্যথা রয়েছে। তবে মাঠে না থাকলেও এক অর্থে এখনও টুর্নামেন্টের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে দেশটির নাম। বহুল আকাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপ ট্রফি যে তৈরি হয় ইতালিতেই। এর নকশাকারীও একজন ইতালীয় নাগরিক।
৬০ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম ইতালি প্রথম রাউন্ডে বাদ পড়ে যায়। তবে ট্রফির সঙ্গে এমন করে তাদের নাম জড়িয়ে আছে, ইতালি এক অর্থে কখনও বিশ্বকাপের কোনও আসর থেকে বিদায় নেয় না। মিলানের কাছেই ছোট এক শহর পাডেরনো দুগনানো। সেখানে গোলাপি দেয়ালের এক কারখানা আছে। দেখে বোঝার উপায় নেই এমন একটি কারখানায় তৈরি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত ট্রফি।
১৯৭০ সালে ইতালীয় শিল্পী সিলভিও গাজানিগা এই ট্রফির ডিজাইন করেন। নতুন বিশ্বকাপ ট্রফির নকশা আহ্বান করা হলে তিনিই সেই প্রতিযোগিতায় জেতেন। এরপর থেকে প্রতি চার বছরেই এই ট্রফি তৈরি করা হয় এবং জয়ী দলের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
তামা ও দস্তার তৈরি খালি কাঠামোর ওপর অনাকাঙ্ক্ষিত ও অতিরিক্ত ধাতব পদার্থগুলো কেটে কাঙ্ক্ষিত আকার দেওয়া হয়।
এরপর হাতুড়ি দিয়ে সেই ট্রফিতে খুঁটিনাটি নকশাগুলোকে পূর্ণতা দেওয়া হয়।
এরপর শুরু হয় পলিশ করা ও প্রলেপ দেওয়া। তারপর আল্ট্রাসনিক পদ্ধতিতে অতিরিক্ত সব ধাতব ও গ্রিজ বের করে দেওয়া হয়।
রিনসিংয়ের মাধ্যমে ময়লা ও পরিষ্কারক দ্রব্যও মুছে ফেলা হয়।
এটাই ওই কারখানার গ্যালভানিক ডিপার্টমেন্ট।
গ্লাইডিংয়ের পর ডিসটিলড পানি দিয়ে ট্রফিটি পরিষ্কার করা হয়।
সবুজ মার্বেল পাথর সংযুক্তের পর পূর্ণতা পায় ট্রফিটি। এরপর জারপন দিয়ে পলিশ করা হয়।
এরপর ট্রফিটিকে শুকানো হয়। শেষবারের মতো সবকিছু পরীক্ষা করা হয় আবার।
জিডিই বার্টনির একজন বিশেষজ্ঞ এরপর সূক্ষ্মভাবে পরীক্ষা করেন সব ঠিক আছে কিনা।
একটি স্বর্ণের মেডেল ট্রফিতে যুক্ত করা হয়।
এরপর অ্যালকোহল দিয়ে পরিষ্কার করা হয় মেডেল। এই কারখানা থেকেই সবচেয়ে বিখ্যাত ট্রফিগুলো প্রস্তুত করা হয়। এরমধ্যে আছে উয়েফা সুপার কাপ, উয়েফা ইউরোপা লিগ, ফিফা বিশ্বকাপ ও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি।