X
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রেফতার হলে কী ঘটবে অ্যাসাঞ্জের ভাগ্যে?

আশফাক মাহমুদ
২৩ জুলাই ২০১৮, ১৬:৪৫আপডেট : ০১ আগস্ট ২০১৮, ২০:০২
image

বিকল্প সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করা হলেও তাকে গুরুতর কোনও সাজা দেওয়া সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। যুক্তরাজ্যের আদালতে জামিন শর্ত ভঙ্গের কারণে জরিমানাসহ সর্বোচ্চ ৩ মাস আর আদালত অবমাননার অভিযোগ প্রমাণ করা গেলে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে তার। প্রত্যর্পণের মধ্য দিয়ে তার বিচার করতে গেলে বেশ জটিলতায় পড়তে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। গোয়েন্দাবৃত্তির অভিযোগে কাউকে প্রত্যর্পণ করা যায় কি না, তার নিষ্পত্তি হতে হবে যুক্তরাজ্যের আদালতে, যা একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। যদি তাকে প্রত্যর্পণ করাও যায়, তথ্য ফাঁসের অভিযোগে অস্ট্রেলীয় নাগরিক এবং সাংবাদিক পরিচয়ধারী অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে কোনও দণ্ড ঘোষণার সুযোগ ক্ষীণ। অ্যাসাঞ্জকে বড় ধরণের সাজা দিতে গেলে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য চুরিতে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ দরকার পড়বে। অ্যাসাঞ্জ তেমন কিছু যে করেননি, সেটা কমবেশি সবার জানা। তিনি গোটা দুনিয়ার মানুষকে ক্ষমতাশালীদের তথ্য ফাঁসে উদ্ধুব্ধ করেছেন। এখন ব্রাডলি ম্যানিং-এর মতো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা তার দ্বারা তথ্য ফাঁসে অনুপ্রাণিত হয়েছেন এমনটা যদি প্রমাণ করাও যায়, তারপরও সেই অভিযোগে তাকে সাজা দেওয়া খুবই কঠিন হবে।

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ

উইকিলিকসে মার্কিন নথি ফাঁসের পর সুইডেনে দুইজন নারী অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেন। দুই অভিযোগে ২০১০ সালের ২০ আগস্ট সুইডেন অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে দুইটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তবে গ্রেফতারি পরোয়ানা দুইটিই একদিনের মাথায় প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তারপরও সুইডেনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে তদন্ত চালু থাকে। ২০১০ সালের নভেম্বরে আবারও অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়; এবার আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা। পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যে থাকা অ্যাসাঞ্জকে প্রত্যর্পণের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের আদালতে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের সময় তার আইনজীবীরা দাবি জানান, ইউরোপীয় গ্রেফতারি পরোয়ানাটি অ্যাসাঞ্জের জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ, গ্রেফতারি পরোয়ানাটি জারি করেছিলেন সুইডেনের তদন্ত কর্মকর্তা। ২০০৩ সালের প্রত্যর্পণ চুক্তিতে আদালতকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তাকে নয়। ২০১২ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যের আদালত রায় দেয়, তদন্ত কর্মকর্তার জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানাও বৈধ। এ রায়ের প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্য থেকে সুইডেনে বা যুক্তরাষ্ট্রে অথবা সুইডেন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যর্পণ করা হবে এমন আশঙ্কায় জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ জামিনের শর্ত ভঙ্গ করে ২০১২ সালের জুন মাসে অ্যাসাঞ্জ ইকুয়েডর দূতাবাসে যান এবং রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন।

যুক্তরাজ্যে অ্যাসাঞ্জের বিচারের প্রশ্ন

যুক্তরাজ্যে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে এখন যে একটি মাত্র অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে রয়েছে তা হলো আদালতের দেওয়া ওই জামিনের শর্ত ভঙ্গ করা। তবে এই অভিযোগে জরিমানাসহ তার সর্বোচ্চ ৩ মাসের কারাদণ্ড হতে পারে। ইন্টারসেপ্ট লিখেছে, অ্যাসাঞ্জ যে সময়টুকু ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের জেলে কাটিয়েছেন, সেটাকেই নতুন সাজা কার্যকর হওয়া হিসেবে গণ্য করার দাবি করা হতে পারে। অ্যাসাঞ্জকে ১০ দিনের জন্য ওয়ান্ডসওর্থ কারাগারে থাকতে হয়েছিল। সেখান থেকেই জামিনে বেরিয়ে তাকে ৫৫০ দিন গৃহবন্দি থাকতে হয়েছিল।

গ্রেফতার হলে কী ঘটবে অ্যাসাঞ্জের ভাগ্যে?

অ্যাসাঞ্জের কৌঁসুলি জেন রবিনসন ইন্টারসেপ্টকে জানিয়েছেন, জামিনের শর্ত ভঙ্গের জন্য অ্যাসাঞ্জকে সাজা দিতে চাইলে তারা যুক্তি দেবেন, জামিনের শর্ত ভঙ্গের পেছনে তার যুক্তিযুক্ত কারণ ছিল। অ্যাসাঞ্জের আশঙ্কা ছিল, তাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যর্পণ করা হবে। কারাদণ্ড দেওয়া হলে ইতোমধ্যে তাকে যে পরিমাণ সময় জেলে থাকতে হয়েছে সেটাকেই যেন জামিনের শর্ত ভঙ্গের জন্য দেয় শাস্তি হিসেবে গণ্য করার আবেদন জানানো হবে। অবশ্য যুক্তরাজ্যের সরকার পক্ষের কৌঁসুলিরা যুক্তি দিতে পারেন, যুক্তরাজ্যের আইনি ব্যবস্থা থেকে অ্যাসাঞ্জের পলাতক থাকাটা নিছক কোনও আশঙ্কার বিষয় নয়। তিনি পরিকল্পিতভাবে ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের আইনি ব্যবস্থার হাত থেকে মুক্ত হতে। এই অভিযোগ নিছক জামিনের শর্ত ভঙ্গের মতো ‘ছোট’ অভিযোগ নয়। উদ্দেশ্যমূলক ও পরিকল্পিতভাবে ব্রিটিশ আইন ব্যবস্থাকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ প্রমাণ কার গেলেও অ্যাসাঞ্জকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে অন্তত এক বছরের জন্য অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাজ্যের কারাগারে থাকতে হতে পারে।

সুইডেনে বিচারের প্রশ্ন

অ্যাসাঞ্জ দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়ার সময় ইকুয়েডরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, চাইলে সুইডেনের তদন্তকারীরা ইকুয়েডর দূতাবাসে গিয়ে অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। কিন্তু তদন্তকারীরা রাজি হননি। সুইডেনের আইনে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর ধর্ষণ কিংবা যৌন হয়রানির অপরাধে বিচারের সুযোগ নেই। অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলোর মধ্যে যৌন হয়রানির অভিযোগকারী মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ২০১৫ সালেই মামলাটির পুনঃতদন্তের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ধর্ষণের মামলাটির ২০২০ সাল পর্যন্ত তদন্তের সুযোগ রয়েছে। এ কথা মাথায় রেখে সুইডেনের তদন্তকারীরা অ্যাসাঞ্জকে জিজ্ঞাসাবাদে যুক্তরাজ্যের ইকুয়েডর দূতাবাসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সে সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে অ্যাসাঞ্জ বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে না দেওয়ার নিশ্চয়তা দিলে তিনি নিজেই সুইডেনে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হবেন। তবে সুইডেন জানিয়েছিল, আইনগতভাবে এমন নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ল বিল্ড আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, তার দেশ অ্যাসাঞ্জকে এমন কোনও দেশের হাতে তুলে দেবে না, যেখানে তার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। তবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া না হলেও ম্যানিংয়ের মতো দীর্ঘ কারাবাসের ঝুঁকির উপস্থিতিতে অ্যাসাঞ্জ সেখানে ফিরতে চাননি। ইতোমধ্যে সুইডেন অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে থাকা আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এখন নতুন করে আবারও আন্তর্জাতিক পরোয়ানা জারি কিংবা অ্যাসাঞ্জ নিজে থেকে সুইডেনে ফিরে না গেলে সেখানে তার বিচারের কোনও সুযোগ নেই।

গ্রেফতার হলে কী ঘটবে অ্যাসাঞ্জের ভাগ্যে?

যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে বিচারের প্রশ্ন

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বরাক ওবামার সময়েও এ মতই প্রাধান্য পাচ্ছিল যে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করা হলে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে এবং ভবিষ্যতে তথ্যের প্রবাহকে অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করার সুযোগ তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ২০১৭ সালের নভেম্বরে সিআইএ পরিচালক থাকা অবস্থায় মন্তব্য করেছিলেন, ‘উইকিলিকস রাশিয়ার মতো বিদেশি শত্রু রাষ্ট্রের দ্বারা পরিচালিত গোয়েন্দা সংস্থা। তারা মনে করেছে, মার্কিন সংবিধানে থাকা সংবাদমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা তাদের বিচারের মুখোমুখি হওয়া থেকে রক্ষা করবে। সেই ধারণা ভুল। গোপন তথ্যের অযথার্থ উপস্থাপনে তাদের সুযোগ দেওয়াটা মহান সংবিধানের লঙ্ঘন।’ বিকল্প ধারার সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্টারসেপ্ট লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা অনুযায়ী অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে তাদের বিচারিক প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে যুক্তরাজ্য যদি অ্যাসাঞ্জকে প্রত্যর্পণ করতেও চায় সেক্ষেত্রে গোয়েন্দাবৃত্তির মতো ‘রাজনৈতিক অপরাধে’ কাউকে প্রত্যর্পণ করা যায় কি না তা নির্দিষ্ট করতে যুক্তরাজ্যের আদালতের এক থেকে তিন বছর সময় লেগে যাবে। লন্ডন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে ওই সময়টুকু অ্যাসাঞ্জকে কারগারেই থাকতে হবে। আর অতীতে জামিন শর্ত ভঙ্গ করায় এবার তার জামিন পাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক আইনমন্ত্রী এরিক হোল্ডার তথ্য ফাঁসের কারণে ৩৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ব্র্যাডলি ম্যানিংয়ের (চেলসিয়া ম্যানিং) উদাহরণ টেনে বলেছিলেন, অ্যাসাঞ্জের কঠোর সাজা নিশ্চিতের প্রচেষ্টায় তদন্ত চলছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে আদৌ কি আইনগতভাবে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব?
নিউ ইয়র্কের একজন প্রত্যর্পণ আইন বিশেষজ্ঞ জ্যাকুয়েস সেমেলম্যান বিবিসিকে বলেছেন, সুইডেন ও যুক্তরাজ্যের পক্ষে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানো কঠিন। গুপ্তচরবৃত্তির মতো ‘রাজনৈতিক অপরাধের’ অভিযোগে কাউকে প্রত্যর্পণ করাটা যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাষ্ট্র-সুইডেন এবং যুক্তরাজ্য-সুইডেনের প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত আইনে সম্ভব নয়। মার্কিন কংগ্রসের গবেষক জেনিফার এলিসিয়ার লেখা একটি প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে বিবিসি জানিয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কোনও প্রত্যর্পণ আইনেই গোয়েন্দাবৃত্তিকে প্রত্যর্পণের যোগ্য অপরাধ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়নি।’ তারপরও যদি প্রত্যর্পণ করা হয় তাহলে মার্কিন আদালতে কীভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করবেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ? বিশ্লেষকরা বলেছেন, গোয়ান্দাবৃত্তির মতো অপরাধে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সাজা দেওয়ার উদাহরণ থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন এমন কাউকে গোয়েন্দাবৃত্তির অভিযোগে সাজা দেওয়াটা কঠিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান আইনি কাঠামোতে।

গ্রেফতার হলে কী ঘটবে অ্যাসাঞ্জের ভাগ্যে?
অ্যাসাঞ্জ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। তার ‘গোয়েন্দাবৃত্তির’ সঙ্গে কোনও দেশের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত। আর তিনি নিজেও যুক্তরাষ্ট্রে থেকে কাজ করেন না। এসবের পাশাপাশি রয়েছে সাংবাদিক পরিচয়। হাডসন ইন্সটিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক এবং ‘নেসেসারি সিক্রেটস: ন্যাশনাল সিকিউরিটি, দ্য মিডিয়া অ্যান্ড দ্য রুল অফ ল’ বইয়ের লেখক গ্যাব্রিয়েল স্কোয়েনফেল্ড মনে করেন, সাংবাদিক হলে গোয়েন্দাবৃত্তির অভিযোগ আনাটাই কঠিন । যদি তাকে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে নথি ফাঁসের দায়ে দাঁড়াতেই হয় তাহলে অবশ্যম্ভাবীভাবে তিনি নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে দাবি করবেন। আগে মাত্র একজন ব্যক্তিকে গোয়েন্দাবৃত্তির অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করা হলেও তিনি সরকারি চাকরি না করায় এবং অন্য কোনও দেশের পক্ষে গোয়েন্দাবৃত্তি না করায় তাকে অভিযুক্ত করার মার্কিন প্রচেষ্টাটি ব্যর্থ হয়। অ্যাসাঞ্জও মার্কিন সরকারের চাকরি করেন না, তার বিরুদ্ধেও অন্য কোনও দেশের পক্ষে গোয়েন্দাবৃত্তি করার অভিযোগ প্রমাণিত নয়।

ফাঁস করা নথি আদৌ বড় কোনও ক্ষতির কারণ হয়েছে কি না সেটিও সাজা প্রদানের ক্ষেত্রে বিবেচ্য। উইকিলিকসে মার্কিন গোপন নথি ফাঁস হওয়ার প্রেক্ষিতে সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস বলেছিলেন, ফাঁস হওয়া দূতাবাসের ওই নথিগুলোর কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সামান্যই ক্ষতি হয়েছে।’ ২০০৫ সালের এমন একটি ঘটনায় ক্ষতির পর্যাপ্ত প্রমাণ না মেলায় দুই ইসরায়েলির সাজা নিশ্চিত করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে কিছু করতে চান না জানিয়ে অ্যাসাঞ্জ উইকিলিকসে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ফাঁস হওয়া নথি থেকে ব্যক্তিগত তথ্যগুলো মুছে দিতে তাদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র ওই আহ্বান প্রত্যাখ্যানের পর অ্যাসাঞ্জ মন্তব্য করেছিলেন, ব্যক্তিগতভাবে কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মার্কিন অভিযোগটি নিছকই ‘কথার কথা।’

গ্রেফতার হলে কী ঘটবে অ্যাসাঞ্জের ভাগ্যে?

অ্যাসাঞ্জ ম্যানিংয়ের সঙ্গে তথ্য চুরির ষড়যন্ত্রে অংশীদার ছিলেন, এটা প্রমাণ করতে পারলে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে শক্ত অভিযোগ গঠন করা সম্ভব। তখন তিনি সরকারি নথি সংগ্রহের ষড়যন্ত্রে জড়িত ব্যক্তি হিসেবে দোষী হবেন। ‘তথ্যের প্রচারকারী’ হওয়ার অভিযোগের চেয়ে তথ্য ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগ গুরুতর। বিশ্লেষকরা বলছেন, সেখানেও ‘কিন্তু’ আছে। গোপন তথ্য ফাঁসের বিষয়ে বিশ্ব জুড়ে সাংবাদিকরা নিয়মিত কাজ করেন। কাউকে গোপন তথ্য দিতে অনুপ্রাণিত করার অভিযোগটিও শক্ত শাস্তি দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নাও হতে পারে। এই মত পোষণ করেন মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা এবং ‘হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের’ আইন ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শক পল রোজেনউইগ। যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের গবেষক জেনিফার এলসিয়ার লিখেছেন, ‘এমন কোনও মামলা এখন পর্যন্ত দেখিনি যেখানে অননুমোদিত সূত্রের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য প্রকাশের কারণে কারও শাস্তি হয়েছে।’ 
আরও পড়ুন: অচিরেই গ্রেফতার হচ্ছেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ?


/বিএ/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সরকারের সব সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা নিশ্চিত করা বড় চ্যালেঞ্জ: সেনাপ্রধান
সরকারের সব সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা নিশ্চিত করা বড় চ্যালেঞ্জ: সেনাপ্রধান
মহিলা সমিতি মঞ্চে ‘অভিনেতা’ ও ‘টিনের তলোয়ার’
মহিলা সমিতি মঞ্চে ‘অভিনেতা’ ও ‘টিনের তলোয়ার’
ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জোরদার করলো ইইউ
ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জোরদার করলো ইইউ
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আ.লীগের, আছে শাস্তির বার্তাও
উপজেলা নির্বাচনমন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আ.লীগের, আছে শাস্তির বার্তাও
সর্বাধিক পঠিত
এএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
রেস্তোরাঁয় ‘মদ না পেয়ে’ হামলার অভিযোগএএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট