X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গাদের হাতেই প্রণীত হলো রাখাইনে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের তালিকা

বিদেশ ডেস্ক
১৭ আগস্ট ২০১৮, ১৮:৪৬আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০১৮, ১৮:৫৩
image

মানবাধিকার অনুসন্ধানকারীদের যেমন হওয়ার কথা, মহিবুল্লাহ তাদের মতো নয়। সবসময় পান চিবোতে থাকেন তিনি। বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে প্লাস্টিক আর বাঁশে তৈরি একটি কুঁড়েঘর তার আবাস। শিবিরে দেওয়া প্রতিদিনের খাবারের লাইনেও দেখা মেলে তার। তবে মহিবুল্লাহসহ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি দল এমন কিছুই করে দেখিয়েছে, যা করতে সক্ষম হননি বিদেশি সরকার বা সাংবাদিকরা। ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়া রোহিঙ্গাদের তালিকা প্রণয়ন করেছেন কোমরে বাধার ঐতিহ্যবাহী বার্মিজ বেল্ট ক্ল্যাড ইন লঙ্গিস পড়া একদল রোহিঙ্গা। ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে তার আওতায় তালিকা প্রণয়ন করেছেন তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স-এর এক বিশেষ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, তালিকায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়া ১০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গার নাম অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ বলছে, হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়া রোহিঙ্গাদের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে বেশি, পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে অনেকের নাম অন্তর্ভূক্ত করতে পারেনি তারা। তালিকাটি সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত না হলেও মানবাধিকার-বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন,  মিয়ানমারের মাবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে প্রণীত ওই হত্যাযজ্ঞের তালিকা কাজে আসবে। তবে প্রণীত তালিকা নিয়ে মিয়ানমার সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
রোহিঙ্গাদের হাতেই প্রণীত হলো রাখাইনে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের তালিকা

গত বছরের ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা চৌকিতে আরসার হামলাকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের কারণ বলা হলেও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে এবং তাদের ফেরার সব পথ বন্ধ করতে আরসার হামলার আগে থেকেই পরিকল্পিত সেনা-অভিযান শুরু হয়েছিল। চলমান জাতিগত নিধনে হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ। এক বছরেও মিয়ানমারের এই পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনও পরিবর্তন ঘটেনি। এখনও আশার আলো দেখার মতো, নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হওয়ার মতো অবস্থায় নেই বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লাখ লাখ মানুষ। 

ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস নামে পরিচিত ত্রাণ সংস্থা মেডিসিন স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স বর্তমানে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করছে। তারা জানায় আগস্টে সংঘটিত সহিংসতার শুরুতেই ৬ হাজার ৭০০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এরপর আর কোনও সংখ্যা জানা যায়নি। জানা যায়নি কারও পরিচয়ও। এবার ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ ব্যানারে রোহিঙ্গাদের নিজেদের প্রণীত তালিকায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তালিকা প্রণয়নকারীরা জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। তাদের প্রত্যেকের নাম, বয়স, বাবার নাম, ঠিকানা এবং কিভাবে হত্যা করা হয়েছে সেই বিস্তারিতও তুলে ধরা হয়েছে তালিকাটিতে। তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে ২০১৬ সালের অক্টোবরে সহিংসতায় নিহত রোহিঙ্গারাও।

‘আমি যখন শরণার্থী হয়ে গেলাম, তখন থেকেই কিছু করার তাড়না অনুভব করতে থাকি।’ জানান ৪৩ বছর বয়সী মহিবুল্লাহ। তিনি বিশ্বাস করেন, তার তৈরি এই তালিকাটি ঐতিহাসিক তালিকা হয়ে থাকবে। নাহলে সবাই এর কথা ভুলে যাবে। রয়টার্স এই তালিকা নিয়ে মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কেউ ফোন ধরেনি। গত বছরের শেষদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী থেকে দাবি করা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর ১৩ সদস্য নিহত হয়েছিলেন এবং ৩৭৬ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের মরদেহ উদ্ধার করেছে তারা। তাদের দাবি, ৫ সেপ্টেম্বর সামরিক অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

রোহিঙ্গারা নিজেদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবেই দেখে। তবে ১৯৮০’র দশকে তৎকালীন মিয়ানমারের সেনাশাসিত জান্তা সরকার এক আইনের বলে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়। কয়েক প্রজন্ম ধরে রাখাইনে বসবাস করে এলেও তাদেরকে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী বলে চিহ্নিত করে চালানো হয় কাঠামোবদ্ধ সেনা প্রচারণা। ২০১৪ সালে আদমশুমারিতেও উপেক্ষা করা তাদের। ২০১৫ সালে নির্বাচন হলেও তাদের ছিলো না ভোটাধিকার। ধাপে ধাপে সেখানকার মানুষদের মাঝে রোহিঙ্গাবিদ্বেষী মনোভাব গড়ে তোলা হয়। সর্বশেষ গত বছর নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে সহিংসতা জোরালো করলে বাংলাদেশ পালিয়ে আসে লাখ লাখ রোহিঙ্গা।  বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাস করা ওই রোহিঙ্গারা এখানে নিজেদের গুছিয়ে নিতে শুরু করেছে। এখানে তাদের সেনাবাহিনীর ভয় নেই। তাই হত্যাযজ্ঞের তালিকা প্রণয়নে নেমে পড়েছেন তারা। তাদের মোবাইলে ধারণ করা রয়েছে হত্যাকাণ্ডের ভিডিও। রোহিঙ্গাদের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রয়াসের বিরুদ্ধে এটাই তাদের মুল অস্ত্র।

কোমরে বাধার ঐতিহ্যবাহী বার্মিজ বেল্ট ক্ল্যাড ইন লঙ্গিস পড় একদল রোহিঙ্গাই ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ ব্যানারে ওই তালিকা প্রণয়ন করেছে। তালিকা প্রণয়নকারীরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীরা অভিযোগ করেছে যে রোহিঙ্গারা বিশ্বের সমর্থন পেতে হত্যাযজ্ঞের কথা বানিয়ে বলেছে সে সম্পর্কে অবগত রয়েছে তারা। কিন্ত তারা জোরালোভাবে দাবি করেছে যে, তালিকা করার সময় তারা খুবই সাবধান ছিলেন, সবার নাম তোলা সম্ভব হয়নি। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। পূর্বে ত্রাণকর্মী হিসেবে দায়িত্বপালন করা মহিবুল্লাহ বলেন, ‘মংডু জেলার তুলাতোলি গ্রাম থেকে যারা পালিয়ে এসেছেন তারা সবাই বলেছেন নিহতের সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি। কিন্তু আমরা নাম পেয়েছি ৭৫০ জনের। তাই ৭৫০ জনই নিহত লিখেছি।’ তিনি জানান, ‘আমরা প্রত্যেক পরিবারে গিয়েছি, প্রত্যেকের নাম ধরে ধরে কথা বলেছি, তথ্য নিয়েছি। হামলার শিকার পরিবার থেকেই সবচেয়ে বেশি তথ্য পেয়েছি আমরা। কিছু তথ্য পেয়েছি প্রতিবেশী থেকে। কোনও আত্মীয় না পেলে আমরা পাশের গ্রামের মানুষের কাছ থেকে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করেছি।’

এই তালিকা তৈরি করা রোহিঙ্গারা পূর্বে কেউ ছিলেন ত্রাণকর্মী, কেউ শিক্ষক, কেউবা ধর্মীয় নেতা। এখন শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়ার পর এই কাজটিই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছেন তারা। কারণ সরকারি সহায়তা ছাড়া কোনও বিদেশি সংস্থাই রাখাইনে যেতে পারছে না। কিয়াক পান দু গ্রামের সাবেক প্রশাসক মোহাম্মদ রাফি নামে এক রোহিঙ্গাও এই তালিকা তৈরিতে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের গোষ্ঠীর মানুষরা অশিক্ষিত। সাক্ষাতাকরের সময় অনেকই দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু এরপরও যা তথ্য পেয়েছি তার খুবই বিশ্বাসযোগ্য।’

শরণার্থী ক্যাম্পের সংকীর্ণ গলিতে বসে পুরোচিত্র তৈরি করা অনেক কঠিন। অনেক মানুষ একসঙ্গ জড়ো হয়ে নিজেদের মতামত দিতে থাকেন। কখনও বৃষ্টির কারণে ছুটোছুটি শুরু হয়ে যায়। আজান দিলেও সবাই নামাজের জন্য চলে যায়। আবার একসঙ্গে হলে সামান্য তারিখ নিয়েও বিবাদ লেগে যায়। জানা যায়, নভেম্বরে একদিন জুম্মার নামাজের পরে এই প্রকল্পের বিষয়টি সবার মাথায় আসে। তখনই পরিকল্পনা করা হয় এবং কয়েকমাস ধরে এই তালিকা তৈরির কাজ চলে।

এই প্রকল্পতেও অনেক ত্রুটি আছে। হাতে লেখা এই তালিকাটি একত্র করেছে স্বেচ্ছাসেবীরা। ফটোকপি করে ছড়িয়ে দেওয়ার হয়েছে অনেকের কাছে। আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বার্মিজ ভাষায় কথা বলেন। তাদের নামও বার্মিজ। তবে সব তথ্য রেকর্ড করা হয় ইংরেজিতে। এজন্য বেশ জটিলতায় পড়তে হয় তাদের। যেমন তুলা তুলি গ্রামের নামই ৩০টি বানানে লেখা হয়েছে। তালিকাটি সংরক্ষণ করা হচ্ছিলো একটি ক্লিনিকের পেছনের ঘরের এক শেল্ফে। রয়টার্সও এই তালিকা পর্যালোচনা করে জানিয়েছে, পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত নয় এটি। তারা জানায় ২০১৬ সালের অক্টোবরের সহিংসতায় নিহতদের মাধ্যমে এই তালিকার শুরু বলা হলেও ২০১৫ ও ২০১২ সালের সহিংসতায় নিহত বেশ কয়েকজনের নাম আছে এতে।  তালিকার বেশিরভাগ অংশ ইউরোপীয় প্রক্রিয়ায় লিপিবদ্ধ হলেও (প্রথমে দিন ও পরে মাস) কয়েকটি ছিলো আমেরিকান প্রক্রিয়াতেও। তাই কিছু ক্ষেত্রে বোঝা যাচ্ছে না যে আসলে ৯ মে লেখা হয়েছে নাকি ৫ সেপ্টেম্বর। তালিকার কতগুলো ভার্সন রয়েছে সেটাও স্পষ্ট না। কারণ রয়টার্সের কাছে সাক্ষাতকার দেওয়ার সময়ই অনেক রোহিঙ্গা শার্টের পকেট কিংবা লুঙির ভাঁজ থেকে ছোট তালিকা বের করে দিয়েছে। তালিকা তৈরি করা রোহিঙ্গারা বলেন, তারা প্রাপ্ত তথ্যের সারাংশ উপস্থাপন করেছেন। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনসহ বিদেশি প্রতিনিধি দলের কাছে প্রত্যাবাসনের দাবিও জানানো হয়েছে।

তালিকা তৈরি করা রোহিঙ্গারা দিন দিন আরও বেশি সংঘবদ্ধ হয়েছেন। তারা তিনটি কুঁড়েঘরে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন এবং বৈঠক করেছেন। ভেতরে রেখেছেন টেবিল, প্লাস্টিক চেয়ার, ল্যাপটপ ও গ্রুপের নাম সম্বলিত একটি বড় ব্যানার। যেন নিজেদের অফিসই তৈরি করে ফেলেছেন। এমএসএফ এর করা জরিপে আসলে জোর দেওয়া হয়েছিলে যে কতজনের চিকিৎসা সুবিধা প্রয়োজন। তাই কতজন নিহত হয়েছেন সেটা স্পষ্ট ছিলো না। রোহিঙ্গাদের করা তালিকার মতো এত বিস্তারিতও উল্লেখ ছিলো না সেটাতে। মহিবুল্লাহ ও তার বন্ধুরা আশা প্রকাশ করেন, তাদের তৈরি করা তালিকা মিয়ানমারের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও মিয়ানমারের বিচারের সময় কাজে লাগবে তালিকাটি। কোনও কোনও রোহিঙ্গার আশা, হয়তো এই তালিকার মধ্য দিয়ে মিয়ানমারকে বিচারের আওতায় নেওয়া যাবে আর সেখানে থাকা নিজেদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে তাদের। মোহাম্মদ জুবায়ের নামে তালিকা প্রস্তুতকারী এক রোহিঙ্গা বলেন, ‘আমি যদি এখানে বেশিদিন থাকি তবে আমার সন্তানরা জিন্স পড়তে শুরু করবে। কিন্তু আমি চাই তারা লুঙি পরুক। আমি আমার সংস্কৃতি হারাতে চাই না। আমরা এই নথিপত্র জাতিসংঘকে দিতে চাই। আমরা বিচার চাই যেন আমাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারি।’

ব্রিটিশ মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের জ্যেষ্ঠ দুর্যোগ পরামর্শক ম্যাট ওয়েলস বলেন, তিনি আফ্রিকান দেশগুলোতে শরণার্থীদের এমন তালিকা তৈরি করতে দেখেছি। তবে রোহিঙ্গাদের তৈরি তালিকাটি আরও কাঠামোবদ্ধ ছিলো। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় এতে এটাই স্পষ্ট হয় যে মূলত পুরো গোষ্ঠীই এখন একটি স্থানে আটকা পরে গেছে।’ ওয়েলস বিশ্বাস করেন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে এই তালিকা খুবই কাজে আসবে। তিনি বলেন, ‘যেই গ্রামগুলোতে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে স্বাক্ষীসহ তার বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ রয়েছে তালিকাটিতে।’

রাখাইনের হত্যাযজ্ঞ নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরও। সেই প্রতিবেদনও বিচারের কাজে আসতে পারে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। তবে তাদের করা তালিকাটি মূলত এমএসএফের প্রক্রিয়াতেই তৈরি করা। রোহিঙ্গা তালিকা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি এমএসএফও। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারও বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি। তারা শুধু সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে যে কোনও সংগঠনের তৈরি করা তালিকাই বিচারিক কাজে ব্যবহার করা যাবে কি না। এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রেজিস্ট্রি ও প্রসিকিউটর অফিসের ‍মুখপাত্ররা এই তালিকা নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।

তুল তোলির একজন দোকানদার মোহাম্মদ সুলেমান বলেন, তাদের তৈরি করা এই তালিকা তার পাঁচ বছরের মেয়ের জন্য পূর্বসূরীদের ইতিহাস হয়ে থাকবে। এরপরই তিনি ভেঙে পড়েন। কান্নারত অবস্থায় তিনি বিবরণ হাজির করেন, কিভাবে প্রতিদিন তার মেয়ে মায়ের জন্য কান্না করে।  বাকি চার মেয়ের সঙ্গে তার স্ত্রীকেও খুন হতে হয়ে সেনাবাহিনীর হাতে। সুলেমান বলেন, একদিন সে বড় হবে, শিক্ষিত হবে। তখন হয়তো জানতে চাইবে কি হয়েছিলো, কখন হয়েছিলো। আমি হয়তো তখন থাকবো না। কিন্তু এই লিখিত নথিটি যদি নিরাপদে থাকে ও জানতে পারবে ওর পরিবারের সঙ্গে কি হয়েছিলা।’

 

/এমএইচ/বিএ/
সম্পর্কিত
সমলিঙ্গের বিয়ে অনুমোদনের পথে থাইল্যান্ড
মস্কোয় কনসার্টে হামলা: প্রশ্নের মুখে রুশ গোয়েন্দা সংস্থা
সুপেয় পানির অপচয়, বেঙ্গালুরুতে ২২ পরিবারকে জরিমানা
সর্বশেষ খবর
নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত, যা জানা গেলো
নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত, যা জানা গেলো
চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাং গ্রুপের ৩৩ সদস্য আটক
চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাং গ্রুপের ৩৩ সদস্য আটক
বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রশংসা করলেন ডোনাল্ড লু
বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রশংসা করলেন ডোনাল্ড লু
মেটা-ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনালের ডিজিটাল সুরক্ষা বিষয়ক প্রশিক্ষণ
মেটা-ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনালের ডিজিটাল সুরক্ষা বিষয়ক প্রশিক্ষণ
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
কারাগারে যেভাবে সেহরি-ইফতার করেন কয়েদিরা
কারাগারে যেভাবে সেহরি-ইফতার করেন কয়েদিরা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি