মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে মোহাম্মদ বলে ডাকা হবে। যদি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন একরাষ্ট্র নীতি মেনে নেয়। এবছর জুনে জর্ডানের বাদশা আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে হোয়াইট হাউসে এই মন্তব্য করেন। সম্প্রতি কয়েকটি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম এই মন্তব্যের কথা প্রকাশ করেছে। এখবর জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, জর্ডানের বাদশাহ ট্রাম্পকে বলেন, অনেক তরুণ ফিলিস্তিনি দুই রাষ্ট্র সমাধান এখন আর চায় না। বরং তারা সবার জন্য সমানাধিকারের ভিত্তিতে একরাষ্ট্র ইসরায়েলের অধীনে থাকতে আগ্রহী। এজন্য ইসরায়েলকে ইহুদি চরিত্র থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জবাবে ট্রাম্প বলেন, আপনি যা বলছেন তা বাস্তব (একরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে), আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে মোহাম্মদ বলে ডাকা হবে।
মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ট্রাম্পের ‘শতাব্দির সেরা চুক্তি’ নিয়েও উভয় নেতা কথা বলেন। এই চুক্তির বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
বাদশাহ আব্দুল্লাহ জানান, শান্তি পরিকল্পনাকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হলে প্রথমে সংশ্লিষ্ট ইউরোপীয় ও আরব দেশগুলোকে তাদের মত জানতে দেওয়া উচিত। কিন্তু এখনও তা করা হয়নি। এখন চুক্তির জন্য উপযুক্ত সময় নয়।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, যদি আমার প্রশাসন কোনও সমঝোতায় উপনীত না হয় তাহলে কোনও কোনও প্রশাসনই তা পারবে না।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল টেন জানিয়েছে, সাবেক একজন ইসরায়েলি ও এক মার্কিন কর্মকর্তা এই আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে তাদের নিশ্চিত করেছেন। এই দুই কর্মকর্তাকে বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউস বা ওয়াশিংটনের জর্ডান দূতাবাসের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
মিডল ইস্ট মনিটর লিখেছে, ট্রাম্পের এই মন্তব্য ইসরায়েলের ভৌগলিক অবস্থান পরিবর্তন নিয়ে আশঙ্কা থেকে করা। ইসরায়েলের মোট জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশ (৬.৫ মিলিয়ন) ইহুদি, ২০ শতাংশ ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি নাগরিক। বাকিরা ড্রুজ ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর। যদি ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের জন্য একরাষ্ট্র সমাধান গ্রহণ করা হয় তাহলে আরও ৪.৮ মিলিয়ন ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের নাগরিক হবে। যা ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারে। ফিলিস্তিনিদের উচ্চ জন্মহার ও ইহুদিদের নিম্ন জন্মহার এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে। এটার কারণেই ইসরায়েল জাতিরাষ্ট্র আইন করে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করতে চাইছে। জুলাই মাসে এ বিষয়ে বিতর্কিত আইনটি পাস হয়েছে। এতে ইসরায়েলকে ইহুদি রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রীয় ভাষা থেকে আরবিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আইনটি ইসরায়েলে ও বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়েছে।