তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যব এরদোয়ান বলেছেন, দেশগুলোর উচিত যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয় মুদ্রায় পরস্পরের সঙ্গে লেনদেন করা। তার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র ‘হিংস্র নেকড়ের মতো আচরণ করছে।’ মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে ডলার ব্যাতিরেকে অন্য মুদ্রায় লেনদেন করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন এরদোয়ান।
তুরস্কের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। তুরস্কের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা ও অন্যান্য কারণে তুরস্কের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। অন্যদিকে রাশিয়ার সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো নয়। যুক্তরাজ্যে বসবাসরত গুপ্তচরকে নার্ভ গ্যাস দিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে রাশিয়ার ওপর আবার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে আগস্টে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলেরও দরপতন হয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছেন, দেশটি নিষেধাজ্ঞা, হুমকি ও ব্ল্যাকমেইলের মতোকৌশল অবলম্বন ব্যবহার করছে।
কিরগিজস্তানে আয়োজিত এক সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় এরদোয়ান জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেনে ডলার ব্যবহার না করে স্থানীয় মুদ্রা ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা চলছে। তার ভাষ্য, ‘আমাদের ডলারের আধিপত্যকে চিরকালের মতো শেষ করে দেওয়ার বিষয়ে কাজ করতে হবে। আর তার জন্য দরকার নিজেদের মধ্যে নিজেদের মুদ্রা ব্যবহার করা। রাশিয়ার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলার কথা জানিয়েছেন এরদোয়ান। বাণিজ্য ও বিনিয়োগে ডলার ভিন্ন অন্য মুদ্রা ব্যবহার করতে ইচ্ছুক তুরস্ক।
এরদোয়ান শুধু মার্কিন মুদ্রার কাছ থেকেই মুক্তি লাভের বিষয়ে কথা বলেননি, তিনি আরও বলেছেন, তুরস্ক অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে চায়, বিশেষ করে এর প্রতিরক্ষা শিল্প খাত।
এরদোয়ানের এমন আহ্বানের প্রেক্ষিতে ‘বাই পার্টিজান পলিসি সেন্টারের’ অধীনে থাকা ন্যাশনাল সিইউরিটি প্রোগ্রামের একজন জ্যেষ্ঠ গবেষক নিক ড্যানফোর্থ নিউ ইয়র্ক টাইমসে লিখেছেন, ‘এরদোয়ান মনে হয় জুয়া খেলছেন। তার ধারণা, তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আগে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিশ্ব ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে।’