২০১৭ সালের মার্চে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট ভবনের সামনে সন্ত্রাসী হামলার তদন্তে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে লন্ডনের এক আদালত। সোমবার প্রধান করোনার বিচারক মার্ক লুক্র্যাফ্টের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
গত বছর ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে ৫২ বছর বয়সী খালিদ মাসুদ নামের ওই ব্যক্তির গাড়ি হামলায় চারজন নিহত হয়েছিলেন। গাড়ি দিয়ে ধাক্কার পর এক পুলিশকে ছুরিকাঘাত করেন তিনি। এরপর ইউনিফর্মহীন পোশাকে থাকা পুলিশের গুলিতে নিহত হয় খালিদ।
সোমবার এই কমিটি গঠনের আগে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। বিচারক লুক্র্যফট বলেন, ’৮২ সেকেন্ডের রোমহর্ষক ঘটনায় অনেকের প্রাণ চলে গিয়েছিল।’ সেসময় যারা নিহত হয়েছিলেন তারা হলেন পুলিশ কনস্টেবল কিথ পামার, আয়শা ফ্রাদে, লেসিল রোডস, অ্যান্দ্রে ক্রিস্টিয়া ও কার্ট কোহরান। তাদের সবার স্বজনরা তদন্ত কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে তাদের সম্মানে কথা বলেন।
পুলিশ কনস্টেবল কিথ পামারকে বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়। বলা হয়, তিনি লন্ডনকে নিরাপদ রাখতে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেছেন। লন্ডন মেট্রপলিটন পুলিশের প্রধান পরিদর্শক নিল সওয়ার বলেন, কিথ সবসময়ই পেশাগত কাজে ব্যস্ত থাকতো। সবসময়ই লন্ডনকে নিরাপদ রাখতে চাইতো। তিনি বলেন, ‘আমার দেখা অন্যতম পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন তিনি। বন্ধুসুলভ, রসিক ও সবার প্রতি যত্নশীল ছিলেন কিথা। পার্লামেন্টকে রক্ষায় তিনি সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন।’
নিল সওয়ার আরও বলেন, ‘আমি তাকে খুব মিস করবো। সেদিনের সাহসিকতা আমাকে অবাক করেনি। তিনি সবসময়ই আমাদের জন্য উদাহরণস্বরুপ।’
এই তদন্তে হামলাকারী সম্পর্কে আরও অনুসন্ধান করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে তার বিরুদ্ধে কোনও অপরাধ মামলা আছে কি না। ২০০৯ ও ২০১০ সালে স্বল্প সময়ের জন্য এমআইফাইভ গোয়েন্তা সংস্থার তদন্তে তার নাম উঠে এসেছিলে। সিসিটিভি ফুটেজে দেকা যায়, মাসুদ একটি গাড়ি ভাড়া করে ও ছুরি কিনেই পার্লামেন্টের দিকে যায়। তদন্তে বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞকে ডাকা হবে। এর মধ্যে পুলিশি তদন্ত করা দলের প্রধান স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের গোয়েন্দাকেও যুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
পুলিশের আর্মর ও মাসুদের অ্যানাবলিক স্টেরয়েড ব্যবহার নিয়েও কথা বলা হবে। মাসুদের মানসিক ময়নাতদন্তের জন্য একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞকেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
খালিদ মাসুদকে গুলি করা নিয়ে আরেকটি পৃথক তদন্ত কমিটি হওয়ার কথা রয়েছে।