X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারপতিদের নিষেধাজ্ঞার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

বিদেশ ডেস্ক
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৩৮আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৫১
image

আফগানিস্তানে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিনিদের বিচারে এ আদালতকে সহায়তাকারী কোম্পানি ও রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিযারি দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটনে দেওয়া বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন এসব হুমকি দেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সোমবার এ ধরনের হুঁশিয়ারি আসতে পারে বলে আগেই আভাস দিয়েছিল আরেক ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের নির্দেশে আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযান শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ অভিযান শেষ হয় ২০১৪ সালে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী এখনও আফগান সেনাদের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। আফগান যুদ্ধে বন্দিদের ওপর নিপীড়ন চালানোর দায়ে সম্প্রতি মার্কিন সেনাদের বিচারের মুখোমুখি করার কথা ভাবছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।  আফগান যুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য গত বছর আইসিসির প্রসিকিউটর ফাতৌ বেনসুদার করা আবেদনের ভিত্তিতে এ চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।

১৯৯৭ সালের ১৭ জুলাই রোম স্ট্যাচু গৃহীত হয়। এ নীতিমালা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক আদালত গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে রোম স্ট্যাচু কার্যকর করতে ১২০টি দেশের স্বীকৃতির প্রয়োজন ছিল। ১২০ দেশের স্বীকৃতির পর ২০০২ সালের ১ জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তার কার্যক্রম শুরু করে। রোম স্ট্যাচুর প্রতি ১২৩ দেশের সমর্থন থাকলেও ৭০টি দেশ এতে অনুমোদন দেয়নি। যুক্তরাষ্ট্রও এ আদালতকে স্বীকৃতি দেয়নি। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম নীতিমালায় স্বাক্ষর করলেও প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ তা প্রত্যাহার করে নেন। এই আদালত সাধারণত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ীদের অভিযুক্ত করে থাকে।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মার্কিন সেনাদের বিচারের মুখোমুখি করার পরিকল্পনায় ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র। এ ধরনের পদক্ষেপ নিলে আইসিসির বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে ওয়াশিংটন। সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটনে রক্ষণশীল গোষ্ঠী ফেডারেলিস্ট সোসাইটিতে দেওয়া বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বলেন, আফগানিস্তান কিংবা আইসিসির রোম স্ট্যাচুতে স্বাক্ষরকারী কোনও দেশই অপরাধ আদালতে এ ধরনের কোনও অনুরোধ জানায়নি।

জন বোল্টন
আফগানিস্তান যুদ্ধে মার্কিন নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের অভিযোগ নিয়ে অপরাধ আদালত যদি আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে তবে ট্রাম্প প্রশাসন এর বিরুদ্ধে জবাব দেবে বলে সতর্ক করেন বোল্টন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের নাগরিক ও আমাদের মিত্রদেরকে এ অবৈধ আদালতের অন্যায্য বিচার থেকে সুরক্ষা দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।’

বোল্টন অপরাধ আদালতকে হুঁশিয়ার করে বলেন, এ ধরনের তদন্ত শুরু হলে, বিচারপতি ও প্রসিকিউটরদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবা হবে। যুক্তরাষ্ট্রে ওই বিচারপতি ও প্রসিকিউটরদের আর্থিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে তাদের বিচার করা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থার আওতায় আমরা তাদের (অপরাধ আদালতের বিচারপতিদের) বিচার করব। মার্কিনিদের নিয়ে আইসিসির তদন্তে যে কোম্পানি বা রাষ্ট্র সহায়তা দেবে তাদেরও একই পরিণতি হবে।’

আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে বোল্টন বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মৃত। তিনি বলেন, ‘আমরা আইসিসিকে সহযোগিতা দেব না। আমরা আইসিসির সঙ্গে যোগ দেব না। আইসিসিকে ধুঁকে ধুঁকে মরতে হবে। তাদের সকল অভিপ্রায় ও উদ্দেশ্যের জন্য আইসিসি আমাদের কাছে আগে থেকেই মৃত।’

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স বোল্টনের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনিও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও মিত্রদেরকে আইসিসির বিচার থেকে সুরক্ষা দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সব ধরনের ব্যবস্থা নেবেন।

এদিকে আইসিসি বলছে, বিশ্বের ১২৩টি রাষ্ট্র তাদের পাশে আছে। আদালতটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিচারিক প্রতিষ।ঠান হিসেবে আইসিসি কঠোরভাবে রোম স্ট্যাচুর আইনি রূপরেখা অনুসরণ করে। স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে বিচার করতে আন্তর্জাতিক আদালত বদ্ধপরিকর।’ 

/এফইউ/
সম্পর্কিত
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
বিরল সূর্যগ্রহণ দেখতে নায়াগ্রা জলপ্রপাতে জড়ো হবেন ১০ লাখ দর্শনার্থী
সর্বশেষ খবর
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
ইউক্রেনের শান্তি পরিকল্পনা অর্থহীন: ল্যাভরভ
ইউক্রেনের শান্তি পরিকল্পনা অর্থহীন: ল্যাভরভ
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়