কাতালোনিয়ায় ‘জাতীয় দিবস’ উপলক্ষে মঙ্গলবার বার্সেলোনার সড়কে অবস্থান নিয়েছেন প্রায় ১০ লাখ মানুষ। কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার দাবির প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার জন্য তারা এই সমাবেশ করেন। গত বছরের অক্টোবরে স্পেন থেকে আলাদা হওয়ার ব্যর্থ চেষ্টার পর এটাই কাতালোনিয়ার প্রথম বার্ষিক উৎসব।
বার্সেলোনার সড়কে লাল শার্ট পরা ও লাল-হলুদের কাতালোনিয়া পতাকা হাতে হাজারো মানুষ ঢোল ও বাঁশি বাজানোর পাশাপাশি স্বাধীনতার পক্ষে স্লোগান দেন। এবারের জমায়েতও প্রায় গত বছরের মতোই ছিল। ১৭১৪ সালে স্পেনের রাজা পঞ্চম ফিলিপের বাহিনীর কাছে বার্সেলোনার পরাজয় ও অঞ্চলটির স্বাধীনতা হারানোর ঘটনা স্মরণ করে দিনটিতে আঞ্চলিক ছুটি পালিত হয়। মঙ্গলবার দিয়াদাহ নামে পরিচিত এই জাতীয় দিবসটি পালন করেছে কাতালোনিয়া। ২০১২ সাল থেকে দিনটিকে স্বাধীনতাকামীরা স্বাধীনতার আন্দোলন হিসেবে বেছে নিয়েছে।
কাতালান আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট কুইম টোরা ও তার পূর্বসূরী কার্লেস পুজদেমন জনগণকে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। টোরা জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা অবিরাম আন্দোলন শুরু করছি।’
স্বাধীনতা প্রশ্নে গত বছরের ১ অক্টোবর গণভোটের আয়োজন করে কাতালোনিয়া। এরপর ২৭ অক্টোবরে স্পেন থেকে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা করে পুজদেমনের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতাকামীরা। এরপর স্পেনের জাতীয় সরকার কাতালোনিয়া সরকার ভেঙে দিয়ে পুজদেমনকে বরখাস্ত করে। এরপর রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে যান পুজদেমন। পুজদেমন এখন জার্মানিতে অবস্থান করছেন। স্পেন সরকার তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন করে আসছে। স্পেনের সুপ্রিম কোর্টও পুজদেমনকে গ্রেফতারের জন্য একটি ইউরোপিয়ান গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। তবে তাকে স্পেনে ফেরত পাঠানো হবে কিনা তা নিয়ে এখন জার্মানির একটি আদালতে বিচার চলছে।
বিক্ষোভকারীরা স্বাধীনতার চেষ্টার পর গ্রেফতার হয়ে বিচারের অপেক্ষায় থাকা স্বাধীনতাকামী নেতাদের মুক্তির দাবি জানান। এছাড়া স্বাধীনতা প্রশ্নে গণভোট ও স্বাধীনতার ঘোষণার দিনটিকে পালন করার জন্যও বিস্তারিত কর্মসূচির পরিকল্পনাও করা হয়েছে।
তবে বিরোধীরা বলছে, দিয়াদা’কে ভিন্নখাতে ব্যবহার করা হচ্ছে কারণ সব কাতালানই স্বাধীনতা চান না। স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেপ বোরেল নিজেও একজন কাতালান। তিনি বলেন, কাতালান হিসেবে আমাদের জাতীয় দিবস পালন করা উচিত। তবে স্বাধীনতার আহ্বান করা উচিত নয়। কারণ জনসংখ্যার অর্ধেকেরও কম মানুষ এটা চায়।
গত জুলাই মাসের এক জরিপে দেখা যায়, ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ কাতালান স্বাধীনতার পক্ষে আর ৪৪ দশমিক ৯ শতাংশ এর বিপক্ষে অবস্থান করছেন।