X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

গুগলের ভিডিও ফাঁস, ট্রাম্প বিরোধিতার অভিযোগ ব্রেইটবার্টের

বিদেশ ডেস্ক
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:৫৬আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:৩৭
image

গুগলের একটি সভার ভিডিও ফাঁস করে যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী সংবাদমাধ্যম ব্রেইটবার্ট দাবি করেছে, গুগলের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে ট্রাম্পবিরোধী মনোভাব রয়েছে। আর এতে স্পষ্ট যে রিপাবলিকানদের প্রচার-প্রচারণার বিরুদ্ধে শীর্ষ সার্চ ইঞ্জিনটি পক্ষপাতিত্ব করে। গুগলের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, তারা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গে তথ্য উপস্থাপন করতে চায়, রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের আশ্রয় নিয়ে সেবা পরিচালনা তাদের কাছে  নীতিবহির্ভূত কাজ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান লিখেছে, গুগলের ফাঁস হওয়া ভিডিও সামনের দিনগুলোতে রিপাবলিকানদের এই প্রচারণার পালেই হাওয়া দেবে যে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো ট্রাম্পবিরোধী। রিপাবলিকানদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে মার্কিন সংসদের একটি কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। টুইটারের কর্মকর্তাকে সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে গত সপ্তাহে। গুগলের ভিডিও ফাঁস, ট্রাম্প বিরোধিতার অভিযোগ ব্রেইটবার্টের
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ডাকা গুগলের ওই সভায় প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠানটির সর্বস্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানে নির্বাচন ও ট্রাম্পের বিজয় নিয়ে খোলাখুলি মতামত ব্যক্ত করেন তারা। সভায় উপস্থিত ছিলেন গুগলের দুই প্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন ও ল্যারি পেজ, ভিপি কেন্ট ওয়াকার ও ইলেন নটন, সিএফও রুথ পোরাট এবং সিইও সুন্দর পিচাই। অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য ধারণকৃত ওই ভিডিওর একটি কপি ব্রেইটবার্টের কাছে পাঠিয়েছে নাম-পরিচয় গোপন রাখা এক ব্যক্তি। আর সেটি প্রকাশ করে দিয়ে ডানপন্থী সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, ভিডিও দেখেই বোঝা যায় ট্রাম্পর জয়ে গুগল কতটা হতাশ হয়েছে।

সভায় অভিবাসীবিরোধী প্রচারণা চালানো ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে যাওয়ার বিষয়ে গুগলের কর্মকর্তারা সহকর্মীদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্যা ও সমকামীদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি তাদের পাশে থাকবে। সেখানে রাজনীতি, এনক্রিপশন, নেট নিউট্রালিটিসহ অনেক বিষয়ে তারা সহকর্মীদের প্রশ্নের উত্তর দেন। সিএফও রুথ পোরাট কথা বলার সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি হিলারি ক্লিনটনের প্রতি তার অকুণ্ঠ সমর্থনের কথা উল্লেখ করেন। হিলারি ক্লিনটনের বাবাও শরণার্থী ছিলেন। ভিপি ওয়াকার জাতীয়তাবাদ, পপুলিজম ও অন্য দেশের মানুষের প্রতি অকারণ বিদ্বেষের বিষয়ে তার মতামত তুলে ধরেন। সিইও সুন্দর পিচাই সহকর্মীদের বলেছিলেন, ট্রাম্পের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার ‘সতর্কতার সঙ্গে’ কাজ করছেন।

গুগলের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন সের্গেই ব্রিন ওই সভায় বলেছিলেন, ‘একজন শরণার্থী এবং অভিবাসী হিসেবে আমি নিজে এই নির্বাচনকে খুবই অপমানজনক বলে মনে করি। আমি জানি, আপনারাও অনেকে সেটাই মনে করেন। এটা খুবই কষ্টকর এক সময়। আমাদের বহু মূল্যবোধের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি মিলছে না।’ ইলেন নটন প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত কর্মরত ১০ হাজার কর্মীর ভিসা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি সহকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে এটাও বলেছিলেন, ‘রক্ষণশীল রাজনীতির সমর্থক আমাদের এমন কয়েকজন সহকর্মী গত কয়েকদিন ধরে অন্যদের আচরণে অস্বস্তিবোধ করার কথা জানিয়েছেন। আমাদের আরও সহনশীল হতে হবে। আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বৈচিত্র মানে রাজনৈতিক ও মতামতের বৈচিত্রও। ’

এসব বক্তব্যের সূত্র ধরে ব্রেইটবার্ট অভিযোগ করেছে, গুগল রিপাবলিকানদের বিরুদ্ধে। গুগলকে নিয়ে এমন অভিযোগ আগেও উত্থাপিত হয়েছে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে। রিপাবলিকান রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে রিপাবলিকান রাজনীতির সমর্থক সংবাদমাধ্যমও অভিযোগের আঙুল তুলেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। গুগলকে নিয়ে ব্রেইটবার্টের একটি শিরোনাম ছিল, ‘মহাবিশ্বের মালিক পপুলিজম বন্ধ করতে চায়।’ ব্রেইটবার্টের মালিকদের একজন রিপাবলিকান ধনকুবের রবার্ট মার্সারের মেয়ে। গুগলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের ব্যবস্থাপক ব্র্যাড পার্স্কেল লিখেছিলেন, ‘গুগলকে এই মর্মে ব্যাখ্যা দিতে হবে যে কেন তাদের অবস্থান প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে হুমকি হিসেবে বিবেচিত হবে না’ ট্রাম্পের বড় ছেলে ট্রাম্প জুনিয়র লিখেছেন, ‘এটা যদি একচেটিয়া ব্যবসা না হয় তাহলে কোনটা তা আমি জানি না।’

গুগল পক্ষপাতের অভিযোগের নাকচ করে দিয়ে বলেছে, ‘সভায় কর্মকর্তাদের কেউ কেউ দীর্ঘ বিভক্তিমূলক রাজনৈতিক প্রচারণার বিষয়ে নির্বাচনের পর নিজেদের ব্যক্তিগত মতামত তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু সভায় এমন কিছুই বলা হয়নি যাতে মনে হতে পারে আমরা রাজনৈতিক পক্ষপাতের ভিত্তিতে আমাদের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করি।’

গার্ডিয়ান মনে করে, গুগলের কর্মকর্তাদের বক্তব্যের কারণে রিপাবলিকান রাজনীতির সমর্থকদের এমন প্রচারণা পালে হাওয়া পাবে যে বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো রিপাবলিকানদের বিরুদ্ধে। গত সপ্তাহেই টুইটারের পরিচালন প্রধান জ্যাক ডোরসেকে চার ঘণ্টা মার্কিন হাউজ অব রিপ্রেজেন্টিটিভের একটি কমিটির কাছে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো রিপাবলিকানদের বিরুদ্ধে কোনও পক্ষপাতের ঘটনা ঘটাচ্ছে কি না খতিয়ে দেখতে কাজ করছে ওই কমিটি।

/এএমএ/
সম্পর্কিত
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
বিরল সূর্যগ্রহণ দেখতে নায়াগ্রা জলপ্রপাতে জড়ো হবেন ১০ লাখ দর্শনার্থী
সর্বশেষ খবর
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
ইউক্রেনের শান্তি পরিকল্পনা অর্থহীন: ল্যাভরভ
ইউক্রেনের শান্তি পরিকল্পনা অর্থহীন: ল্যাভরভ
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়