রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করার সময় তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধগুলো যুদ্ধাপরাধ নাকি মানবতাবিরোধী অপরাধ তা খতিয়ে দেখা শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসি’র আইনজীবী ফাতো বেনসুদা। মঙ্গলবার তিনি এই কথা জানিয়েছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর আগে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে রোহিঙ্গাদের জোর করে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে বাধ্য করার ঘটনায় আইসিসি বিচার করতে পারে কিনা তা জানতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন ফাতো বেনসুদা। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ সেপ্টেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে সংস্থাটির তিনজন বিচারক বিশিষ্ট প্রি-ট্রায়াল কোর্ট বিচারের পক্ষে রায় দেন। আদালত বলেছে, মিয়ানমার এই আদালতের সদস্য না হলেও বাংলাদেশ অন্যতম সদস্য দেশ। তাই এ ঘটনার বিচার করার এখতিয়ার আদালতের রয়েছে। কারণ আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশের ধরনের জন্যই এই বিচার সম্ভব। এর ফলে এই ইস্যুতে মামলা করার জন্য বেনসুদার জন্য অধিকতর তদন্ত করার রাস্তা খুলে যায়।
মঙ্গলবার বেনসুদা বলেন, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করার ঘটনায় যুদ্ধাপরাধ হয়েছে নাকি মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে তা নির্ধারণের জন্য প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে তার দফতর।
গত মাসে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির অফিস থেকে জানানো হয়েছিল, এই বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের জড়ানোর কোনই বাধ্যবাধকতা নেই এবং এই বিচার প্রক্রিয়া ভবিষ্যতের জন্য কোনও ভালো দৃষ্টান্ত হবে না।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও ধর্ষণের মতো অপরাধ ঘটিয়েছে। প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে গেছে এবং সেখানেই শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থান করছে। রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার অভিসন্ধি থাকার দায়ে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান ও পাঁচজন জেনারেলকে বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।
তবে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। তাদের অস্বীকারের প্রবণতার কারণেই মনে হয় যে, আন্তর্জাতিক আদালতকে খুব একটা সাহায্য করবে না তারা।