চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলের শীর্ষ কর্মকর্তা উইঘুর মুসলিমদের অন্তরায়ন শিবিরে আটক রাখাকে সমর্থন জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এই তথাকথিত শিবিরের বিস্তারিতও জানিয়েছেন। সোহরাত জাকির নামের এই কর্মকর্তা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্রগুলো সন্ত্রাসবাদ দমনে কার্যকর বলে প্রমাণিত হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।
এই কর্মকর্তা জানান, প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীরা তাদের পথ পরিবর্তনের সুযোগ এবং জীবনকে বৈচিত্র্যময় করতে পারার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ।
মুসলিম অধ্যুষিত জিনজিয়াং প্রদেশে চীনের বড় ধরনের দমন অভিযান নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা হচ্ছে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, কয়েক লাখ উইঘুর মুসলিমকে ক্যাম্পে রাখা হয়েছে কোনও অভিযোগ ছাড়াই। অনেককে আটক রাখা হয়েছে ডিএনএ নমুনা না দেওয়া কিংবা সংখ্যালঘুদের কোনও ভাষায় কথা বলার জন্য। চীনা কর্মকর্তারা উইঘুর মুসলিমদের আটক রাখার কথা অস্বীকার করে আসছেন কিন্তু বলছেন সন্ত্রাসবাদ দমনে এটা জরুরি পদক্ষেপ।
চীনের সায়ত্ত্বাশাসিত জিনজিয়াং অঞ্চলের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হিসেবে সোহরাত জাকির এই প্রথম চীনা অভিযান নিয়ে কথা বললেন। তার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়াতে।
জাকির জানান, অঞ্চলটিতে ১৯৯০ এর দশক থেকে তিনটি খারাপ শক্তি বিরাজ করছে। এগুলো হচ্ছে সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদ। ফলে সরকারকে এসব সমস্যার শেকড়ে হাত দিতে হয়েছে। কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীদের তাদের ভুল স্পষ্টভাবে জানার এবং সন্ত্রাসবাদ ও ধর্মীয় উগ্রবাদের কুফল সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হচ্ছে।
এই কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রগুলোতে চীনের ইতিহাস, ভাষা ও সংস্কৃতি শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। উপস্থিতরা চীন রাষ্ট্র, নাগরিকত্ব ও আইনের শাসন সম্পর্কে জানতে পারছে।
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের জোর করে হাজির হতে বাধ্য করা হচ্ছে কিনা, এই বিষয়ে জাকির কিছু জানাননি। তিনি দাবি করেন, সেখানে পুষ্টিকর ও বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হচ্ছে এবং থাকার জায়গাগুলো প্রয়োজনীয় সবকিছু রয়েছে।
চীনে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পরিচালক সোফি রিচার্ডসন এই সাক্ষাৎকারের বিষয়ে জানান, এতে গণ আটক ও ধর্মীয় আচরণ পালনে কঠোর বিধিনিষেধের বিষয়ে কোনও আলোকপাত করা হয়নি। তিনি এসব কেন্দ্র বন্ধের দাবি জানান।