প্রতিরক্ষা খাতে ইউরোপের ব্যয় বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির শতবছর পূর্তি উদযাপনের একদিন আগে শনিবার প্যারিসে এক বৈঠকে প্রতিরক্ষা বিষয়ে একমত হলেন এই দুই নেতা। এর আগে ইউরোপের জন্য আলাদা সেনাবাহিনী গঠনের পরিকল্পনাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘অপমানজনক’ বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প।
শনিবার ফ্রান্সে পৌঁছার পর ট্রাম্পকে স্বাগত জানান ম্যাক্রোঁ। পরে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে এক বৈঠকে বসেন তারা। সেখানে ট্রাম্পের হাটুর উপর হাত রেখে ম্যাক্রোঁ তাকে ‘বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করেন। তারা প্রতিরক্ষা খাতে ইউরোপের বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করলেও ওই সময় ট্রাম্পকে দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা যায়।
বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা একটি শক্তিশালী ইউরোপ চাই, এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা উভয়ই চাই, যেভাবেই উপায়েই এটা সবচেয়ে ভালভাবে আর কার্যকরভাবে হোক’। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইউরোপকে সহায়তা করতে চাই কিন্তু এটা ন্যায্য হতে হবে। এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রকেই খরচের বোঝা বেশি বহন করতে হচ্ছে।’
বৈঠকে ম্যাক্রোঁও প্রায় একই ধরনের কথা বলেন। তিনি বলেন, ন্যাটোতে ইউরোপ আরও বেশি খরচ বহন করবে তা তিনিও চান। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি বিষয়টি বলে আসছেন। একই সঙ্গে ইউরোপের নিজস্ব সামরিক সক্ষমতার বিষয়টির কথাও বলে আসছেন ম্যাক্রোঁ। তিনি ইংরেজিতে বলেন, ‘এ কারণেই আমি বিশ্বাস করি ইউরোপীয় প্রতিরক্ষার জন্য আমার প্রস্তাব এগুলোর সঙ্গে সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ।’
এর আগে প্যারিসে অবতরণের কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রাম্প টুইটারে লিখেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার কাছ থেকে রক্ষার জন্য ইউরোপকে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে। খুব অপমানজনক, কিন্তু এর আগে ইউরোপকে ন্যাটোর ব্যয় বহন করতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র সেখানে অনেক ভর্তুকি দিচ্ছে।
মঙ্গলবার এক রেডিও সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে একটি সত্যিকার ইউরোপিয়ান আর্মি গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে চীন, রাশিয়া, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের হাত থেকে রক্ষায় নিজেদের উদ্যোগ নিতে হবে। সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ আরও উল্লেখ করেন, ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্র অনির্ভরযোগ্য মিত্রতে পরিণত হয়েছে।’
ফ্রান্সের এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, ম্যাক্রোঁর কথাগুলোকে ভুলভাবে নিয়েছেন ট্রাম্প। ম্যাক্রোঁ এই টুইটের জবাব সরাসরি ট্রাম্পকে দেবেন এবং শনিবারেই হতে পারে। এরপরই এই দুই নেতা বৈঠক করলেন।